‘নিত্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য’
বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারী থাকা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) বাংলাদেশের অর্থনীতির পথচলা বেশ আশাব্যঞ্জক। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যস্ফীতি, রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ, নীতি-সহায়তা, মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, লজিস্টিক অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং সাপ্লাই চেইনে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ একান্ত অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান মূল প্রবন্ধে বলেন, ‘কোভিড পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী ভোগ্য পণ্যের সাপ্লাই চেইনের উপর বেশি মাত্রায় চাপ পড়ায় আমাদের দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ও কাঁচামাল আমদানিতে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে স্থানীয় বাজারে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমতাবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনয় পণ্যে আমদানিকারকদের ঋণ সহায়তা ও আমদানিকৃত পণ্যের উপর আরোপিত শুল্ক হ্রাস করলে সাধারণ জনগণ এ অবস্থা হতে মুক্তি পাবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘কোভিড মহামারীর কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে তৈরি পোশাকখাতের পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবনের জন্য উদ্যোক্তাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। কৃষিখাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে অন্তত একটিকে কৃষিখাতে পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য বরাদ্দ দরকার। ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা যেন ব্যাংকিং চ্যানেল হতে আরও বেশি হারে ঋণ সুবিধা প্রান তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘কোভিড মহামারী ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি সকল স্তরের জনগনের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যা মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু নীতিসহায়তার পাশাপাশি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। কোভিড মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিধিনিষেধ আরোপের কারণে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা পরিলক্ষিত হলেও আমাদের অর্থনীতি এখন ঘুঁড়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের রপ্তানি বেশি মাত্রায় তৈরি পোশাকের উপর নির্ভরশীল, তবে কৃষি, ওষুধ, পাট, সিরামিক, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সম্ভাবনাময় খাতকে প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা প্রদানে এগিয়ে আসার পাশাপাশি মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে সকলকে মনোযোগী হয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘রপ্তানি বহুমুখীকরণ তহবিল সম্প্রসারণ করা হয়েছে। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার আরও উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যয় উল্লেখজনক হারে হ্রাস করা সম্ভব। সিএমএসএমই খাতকে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাই এখাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সবাইকে কাজ করতে হবে।’
জেডএ/