ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল ঘোষণা
ছবি: সংগৃহীত
দেশের বেসরকারি ব্যাংক খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ বৃহস্পতিবার আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে এ বিষয়ে আদেশ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির পর্ষদ বাতিলের পর আবার নতুন একটি পর্ষদও গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ।
আদেশে বলা হয়, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক ঋণ নিয়মাচার ও বিধি–বিধান লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন করা, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ, পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের শেয়ার একই পরিবারে কেন্দ্রীভূত করা, পরিচালক নির্বাচন/পুননির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি, পর্ষদের অগোচরে পরিচালকগণ কর্তৃক আর্থিক অনিয়ম সংঘটন, পর্ষদের নীতি নির্ধারণী দুর্বলতার কারণে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি, ব্যাংকিং সুশাসন ও শৃঙ্খলা বিঘ্ন করার মাধ্যমে ব্যাংক ও আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে পর্ষদের সম্পৃক্ত থাকায় এবং পর্ষদের উন্নয়নে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সেচঞ্জ কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান পর্ষদ বাতিল করা হলো।
বর্তমান পর্ষদ বাতিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে ৭ সদস্যের নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে। নতুন পর্ষদে জয়নুল হক সিকদারের মেয়ে পারভীন হক সিকদার রয়েছেন। তবে তার মা মনোয়ারা হক সিকদার এবং ভাই রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মনোয়ারা হক সিকদার ব্যাংকের সদ্য বাতিল করা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। রন এবং রিক হক সিকদারও পরিচালক ছিলেন।
ন্যাশনাল ব্যাংকে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধ সম্প্রতি আদালতে গড়ায়। ভার্চুয়াল এজিএমে পাতানো ভোটের মাধ্যমে তাকে পর্ষদ থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে এমন শঙ্কায় পারভীন হক সিকদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আদালত। আজ ওই এজিএম হওয়ার কথা ছিল।
ন্যাশনাল ব্যাংকের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার মারা যান ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। ন্যাশনাল ব্যাংকে সিকদার পরিবারের শেয়ার রয়েছে ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী যেখানে একক পরিবার, ব্যক্তি বা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারে। নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত শেয়ার তিন মাসের মধ্যে বিক্রির নির্দেশনা দিয়ে গত ১৩ জুলাই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তা না করায় আইনের ১৪ক(৫) ধরায় সরকারের অনুকূলে কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না, তা ১৪ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে গত ২১ নভেম্বর চিঠি দেওয়া হয়।