অর্ধেক জনবলেই চালু ব্যাংকের সব সেবা
করোনা সংক্রমণ বেশি করে বাড়তে থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিয়েছে অর্ধেক লোকবল দিয়ে ব্যাংকিং সেবা দিতে হবে। তা আমলে নিয়ে মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে ব্যাংকগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেবা দিতে শুরু করেছে গ্রাহকদের। তবে লোকবল কমলেও আগের মতোই সকাল ১০ থেকে ৪টা পর্যন্ত পুরো সেবা দিতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীদের।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, কারওয়োনবাজার, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকগুলোতে স্বাস্থ্যবিধিকে গুরুত্ব দিতে দেখা গেছে। এসময় গ্রাহকদের ব্যাংকে প্রবেশের সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজড করতে বলা হয়েছে।
অর্ধেক জনবলে দায়িত্ব পালনে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না? জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ডিজিএম ও কারওয়ান বাজার শাখা ইনচার্জ একেএম মুজাম্মেল হক ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী অর্ধেক লোকবল দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সার্কুলার জারির পর আজ প্রথম কর্মদিবস হলেও আগে থেকেই কম লোকবল দিয়ে ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম পরিচালানা করা হচ্ছে। কারণ, পর্যায়ক্রমে দেখা যাচ্ছে কেউ না কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন। টেষ্ট করলেই বর্তমানে কারো না কারো করোনা ধরা পড়ছে। তাই বলা যায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলতে হবে। তিনি আরও বলেন, রেমিটেন্স, চেক ক্লিয়ারেন্সে, এলসি ওপেন, ক্যাশে বসাসহ বিভিন্ন বিভাগে ডেলিগেটেড অফিসার রাখতে হচ্ছে। কাজেই কম লোকবলে পুরো সেবা দিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ‘
কারওয়ান বাজার শাখার জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার এম এইচ মনির ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ধেক লোকবল দিয়ে ব্যাংক সেবার কথা বলেছে। এটা উদ্যোগ ভালো। কারণ আগে থেকেই অনেক লোকজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় পুরো লোক অফিসে আসেন না। কম লোক দিয়েই চালাতে হচ্ছে অফিস। তবে জনতা ব্যাংকের হেড অফিস থেকে এখনো এ সার্কুলার আসেনি অফিসে। আসলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ওয়ান ব্যাংকের শাখা ইনচার্জ আব্দুস সামাদও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আগে থেকেই লোকবল কমে আছে। এই সার্কুলারে তার প্রভাব তেমন পড়ছে না। কারণ পুরো সময় সেবা দিচ্ছে হচ্ছে তাদের। এছাড়া ডেলিগেটেড নির্দিষ্টি অফিসার দিয়ে যার যে কাজ তাকে সেই কাজ করাতে হচ্ছে। এখানো কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারণ আমদানি-রপ্তানি, রেমিটেন্সসহ ব্যাংকের সব সেবাই দিতে হচ্ছে।
এদিকে ব্যাংকে অর্ধেক জনবল দিয়ে অফিস চালানোর কথা বাংলাদেশ ব্যাংক বললেও গত বছরের মতো গ্রাহকদের তেমন বাড়তি ভিড় দেখা যায়নি। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক লেনদেন হতে দেখা গেছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মেই গ্রাহক সেবা দেওয়া হচ্ছে।
শুধু কারওয়ান বাজারে নয়, ব্যাংকপাড়া নামে পরিচিত মতিঝিল এলাকাতেও প্রায় ব্যাংকে কম লোকবল দিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা গেছে। রুপালী ব্যাংকের দিলকুশা শাখায় খাইরুল ইসলাম নামে এক গ্রাহক বলেন, প্রায় দিন ব্যাংকে আসতে হয়। তবে আমার কাছে অন্যান্য দিনের মতোই লেনদেন হচ্ছে বলে মনে হয়েছে। তবে অন্য দিনের চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আজ বেশি তৎপর কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বলা হয়, করোনার বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোস্টারিং এর মাধ্যমে অর্ধেক সংখ্যক জনবল নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
জেডএ/