উৎসব আর পিকনিকের হাওয়া মাংস ডিমে
বিদায়ী বছরে শেষ থেকে শুরু হওয়া বিয়ের উৎসব আর শীতের কনকনে ঠান্ডাতে পিকনিকের আয়োজন প্রভাব ফেলেছে বাজারে। সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগি, খাসি, গরুর মাংসের কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। ডিমের দামও ডজনে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। তবে সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আটার দাম কমলেও সব কোম্পানির আটা পাওয়া যাচ্ছে না। নির্ধারিত দামে ১০৮ কেজির চিনিও সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
বেড়েছে ডিম মাংসের দাম
শীতকাল পিকনিকের মৌসুম হওয়ায় মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের চাহিদা বেড়ে যায়। দামও বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। জননী ব্রয়লার হাউজসহ অন্য মুরগি ব্যবসায়ীরা বলেন, আগের সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করা হলেও এ সপ্তাহে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, লাল লেয়ার ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২৬০ ও দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ডিমের দামও বেড়ে ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
স্থিতিশীল মাছের দাম
রুই ও কাতলা, ইলিশসহ প্রায় মাছ বিক্রি করা হচ্ছে আগের সপ্তাহের দামেই। বিক্রেতারা জানান রুই ও কাতলার কেজি ২২০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫০০-১২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড়ের দাম কমে ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০, কাজলি, বাতাসি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ইলিশের দামও কমতির দিকে। এক কেজির উপরে ১০০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা বেশি বড় হলে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ছোটগুলোর দাম একটু কম।
কমেছে টমেটোর দাম
সপ্তাহের ব্যবধানে টমোটোর কেজিতে ১০ টাকা কমে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আগের সপ্তাহের মতো মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুণ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস ফুল ও বাঁধাকপি ২০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের কেজি ২৫ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা। তবে মূলা ও পেঁপের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা। শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি ও শাকের আটি ১০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাড়তি মিনিকেট চালের দাম
কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কারণে বেড়েই যাচ্ছে মিনিকেট চালের দাম। এ ব্যাপারে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের আল্লাহর দান রাইছের আ. আওয়াল তালুদার, বরিশাল রাইস এজেন্সির আল হাসিবসহ অন্য বিক্রেতারা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, মোটা চালের দাম কমেনি। মোটা স্বর্ণা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। তবে ২৮ চালের দাম কিছুটা কমেছে। আগে ৬০ টাকার উপরে বিক্রি করা হলেও বর্তমানে তা ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে তীর মিনিকেট আগের মতো ৭৪ থেকে ৭৫ টাকা কেজি, বাসমতি ৮৮, নাজিরশাইল ৮২ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পোলাও চালের দামও কমেনি। খোলা এই চালের কেজি আগে ১২৫ টাকা বিক্রি করা হলেও তা ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে কোম্পানির প্যাকেট চালের ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। অন্য বছরে কমলেও এবার তার বিপরীত চিত্র বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
দাম কমলেও মেলেনা আটা
তেল ও চিনির পথেই আটার অবস্থা বলে ব্যবসায়ীরা জানান। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ আগে সিটিগ্রুপসহ বিভিন্ন কোম্পানির ২ কোজির আটা ১৫০ টাকা বিক্রি করা হতো। এখন দাম কমিয়ে ১৩৬ টাকা ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তীরের আটা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সরকার নির্ধারিত প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৭ টাকা আর পামওয়েল ১১৭ টাকা লিটার বিক্রি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আল্লাহর দান মামুন ও আলী স্টোরের আলী হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ১ লিটার ১৮৫ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ ও ৫ লিটার ৮৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আগের মতো মসুর ডাল ৯৫-১৪০ টাকা কেজি, ২ কেজি আটা ১৪৪ টাকা থেকে ১৫০ টাকা,খোলা আটার কেজি ৬০ ও ২ কেজি ময়দা ১৬০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ২ কেজির তীর আটা পাওয়া যায় না। এখনো সরকারে বেধে দেওয়া ১০৮ টাকা কেজি চিনি সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো দোকানে পাওয়া গেলেও তা ১১৫ টাকা কেজি বিক্রি করছে।
স্থিতিশীল পেঁয়াজ, আদা ও রসুন
আগের সপ্তাহের মতো দেশি আদার দাম ১০০ টাকা, চায়না আদা ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় এর দামও কমে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ৭০ ও চায়না রসুন ১২০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
জেডএ/এএস