বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৮ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অস্থিরতায় শেষ পুঁজিবাজার

করোনার মহামারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বিশ্বের গতি মন্থর করে দেয়৷ তারপর থেকেই অস্থিরতা দেখা দেয় বিশ্বের পুঁজিবাজারে৷ যার প্রভাব পড়ে দেশের পুঁজিবাজারেও৷ বিভিন্ন কারণে বাজার-চিত্র পাল্টে যেতে থাকে৷ লেনদেন ও সূচক কমতে থাকে৷ টানা দরপতনে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন৷ এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিও চাপের মুখে পড়ে৷ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানামুখী উদ্যোগে বছরের প্রথমভাগে (জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি) এবং শেষের দিকে আগস্ট, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে পুঁজিবাজারে যে উত্থান দেখা দিয়েছিল, তার স্থায়ীত্ব বজায় না থাকায় শেষ দুই মাসের অস্থিরতায় শেষ হয়েছে ২০২২ সাল৷

তবে বিদায়ী বছরে নানা সংকটের মধ্যেও পুঁজিবাজারে প্রথমবারের মতো ইসলামি সুকুক বন্ড তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে৷ ৩২ লাখ মিলিয়ন টাকা বাজার মূলধন নিয়ে ডিএসই’র ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে বহুল প্রতীক্ষিত ২৫০টি সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন শুরু হয়েছে৷ পুঁজিবাজারে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি)-এ লেনদেন শুরুর অপেক্ষায়৷ এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালুর কার্যক্রমও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে৷ পুঁজিবাজারে রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট (আরইআইট) প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷

তারপরও দরপতন ঠেকাতে না পেরে আবারও ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন সীমা বেধে দেয়া হয়েছে৷ ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধসের আগে থেকেই পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাবের ক্ষেত্রে শেয়ারের ক্রয়মূল্যেকে বাজার মূল্য হিসেবে বিবেচনার দাবি জানিয়ে আসছিল৷ এক যুগের বেশি সময় ধরে এ দাবি অমীমাংসিত ছিল৷ এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে আব্দুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেয়ার পর বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেন৷ সে অনুযায়ী গত ৪ আগষ্ট শেয়ারের ক্রয়মূল্যকে ‘বাজারমূল্য’ ধরে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট হিসাব করার নির্দেশনা জারী করে বাংলাদেশ ব্যাংক৷

২টি ট্রেকহোল্ডার কোম্পানি এপিআই কানেক্টিভিটি স্থাপন করে তাদের নিজস্ব ওএমএস এর মাধ্যমে লেনদেন শুরু করছে। এছাড়াও ডিএসই থেকে ১১টি ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিকে এপিআই ইউএটি সংযোগ প্রদান করা হয়েছে।

বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে ব্লক মার্কেটে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দামের চেয়ে ১০ শতাংশ কম দামে শেয়ার বেচাকেনা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷ বছরের একেবারে শেষভাগে শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতি ফেরাতে তালিকাভুক্ত ১৬৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুায়াল ফান্ডের ওপর আরোপিত ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর তুলে নেয়া হয়, তবে একদিনে সর্বোচ্চ ১ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না৷

পুঁজিবাজারের ব্যাপারে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে বৈশ্বিক অর্থনীতি টানাপোড়নের মধ্যদিয়ে যাচ্ছিল, এরই ধারাবাহিকতায় বছরের শেষভাগে দেশের পুঁজিবাজার একটা বিয়ারিশ ট্রেন্ড পার করে৷ আশা করি ২০২৩ সালের শুরুতেই এই সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে ৷

বাজারের চিত্র
বিদায়ী বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৫৮টি। এর মধ্যে কোম্পানি ৩৫৪টি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৩৭টি, ডিবেঞ্চার ৮টি, গভর্ণমেন্ট ট্রেজারি বন্ড ২৫০টি এবং করপোরেট বন্ড ৯টি। যার বাজার মূলধনের কাঠামো কোম্পানি ৫৭.৭৮ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ০.৫১ শতাংশ, করপোরেট বন্ড ০.৪৪ শতাংশ, ডিবেঞ্চার ০.০১ শতাংশ এবং গভর্ণমেন্ট ট্রেজারি বন্ড ৪১.২৭ শতাংশ৷

এমএমই
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে ৬টি এসএমই কোম্পানি নিয়ে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের শুভসুচনা করে৷ ২০২২ সালের শেষে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫টি এবং মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪ হাজার ৪৯৫.৮৩ মিলিয়ন টাকা৷ যা মোট লেনদেনের ১.০৪ শতাংশ ৷

মোবাইল লেনদেন
২০২২ সালে মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৭ হাজার ১০৩ জনে।

আইপিও
২০২২ সালে ৬টি কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে ৭,১৩৭.৮১ মিলিয়ন টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ এর মধ্যে ২টি কোম্পানি প্রিমিয়াম বাবদ মূলধন সংগ্রহ করে ৮৭৫.২০ মিলিয়ন টাকা৷ এছাড়াও ১টি পারপিচ্যুয়াল বন্ড এবং ১টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে ৭৫০ মিলিয়ন টাকা মূলধন সংগ্রহ করে এবং ১ পারপিচ্যুয়াল বন্ড প্রাইভেট প্লেসম্যান্টের মাধ্যমে ৪ হাজার মিলিয়ন টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷

রাইট শেয়ার ইস্যু
২০২২ সাল ১টি কোম্পানি ১০.৯৮ মিলিয়ন রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মোট ১০৯.৮২ মিলিয়ন টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷

ডিএসই’র ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন
কোভিড ১৯ মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের কারণে বিশ্বের স্টক মার্কেটের মতো বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের গতিও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে৷ ২০২২ সালে ডিএসইতে ২৪৪ কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২,৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯.৩৭ মিলিয়ন টাকা ৷ যা পুঁজিবাজারের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন ৷

ডিএসই ব্রড ইনডেক্স হ্রাস ৮.১৪%
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্য সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) আগের বছরের চেয়ে ৫৪৯.৮৫ পয়েন্ট বা ৮.১৪ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৬ হাজার ২০৬.৮১ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷

ডিএসই ৩০ সূচক হ্রাস ১৩.৩২%
ডিএসই ৩০ সূচক (ডিএস৩০) ৩৩৭.২৮ পয়েন্ট বা ১৩.৩২ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২১৯৫.৩০ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২২ সালে ডিএস৩০ মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ২৬৩৫.৩৮ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনিম্ন ছিল ২১৪৫.২৫ পয়েন্ট৷

ডিএসইএক্স শরীয়াহ্ সূচক হ্রাস ৫.০৫%
একই বছর ডিএসইএক্স শরীয়াহ্ সূচক (ডিএসইএস) ৭২.২৯ পয়েন্ট বা ৫.০৫ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৩৫৮.৮৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২২ সালে ডিএসইএস মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ১৫২২.৯৮ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনিম্ন ছিল ১৩০৮.২০ পয়েন্ট৷

বাজার মূলধন
২০২২ সালে ডিএসই’র ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে ৩১ লাখ ৪০ হাজার ১৪৩.২৭ মিলিয়ন টাকা বাজার মূলধন নিয়ে ২৫০টি সরকারি সিকিউরিটিজ তালিকাভুওির মাধ্যমে ১০.১০.২০২২ তারিখে বাজার মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭,৭২৫,১৪৪ মিলিয়ন টাকা৷ বছরশেষে বাজার মূলধনের দাঁড়ায় ৭,৬০৯,৩৬৮ মিলিয়ন টাকা দাঁড়ায়৷

ব্লক মার্কেট
২০২২ সালে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হয় ১৪২,৫৩১.৯৬ মিলিয়ন টাকা৷ যা মোট লেনদেনের ৬.০৪ শতাংশ৷ অপরদিকে ২০২১ সালে ব্লক মার্কেটে লেনদেনের পরিমান ছিল ১৪০,৫১০.৮৩ মিলিয়ন টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩.৯৭ শতাংশ৷

মার্কেট পিই
২০২২ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিঃ এ তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ সমূহের মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই দাঁড়ায় ১৪.০৮ ৷

জেডএ/এএস

Header Ad
Header Ad

ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় সারা রাত ধরে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় ভূখন্ডটির ভেঙে পড়া হামাস পুলিশ ফোর্সের প্রধানসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এই তথ্য দিয়েছে। খবর এএফপির।

এক বিবৃতিতে সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানায়, গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুহারা মানুষের একটি তাঁবু লক্ষ্য করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী বিমান থেকে বোমা হামলা চালালে তিন শিশু, দুইজন নারীসহ মোট ১১ জন শহীদ হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১৫ জন।

এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে পুলিশ প্রধান মাহমুদ সালাহ এবং তার উপপ্রধান হুসাম শাওয়ান রয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

গতকাল বুধবার (১ জানুয়ারি) ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, হামাস যদি ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো বন্ধ না করে তবে ইসরায়েল গাজায় হামলা চালানো আরও জোরদার করবে।

সম্প্রতি গাজা থেকে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে রকেট হামলা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে যদিও তা যুদ্ধ শুরুর প্রথম ধাপের চেয়ে সংখ্যার বিচারে অনেক কম। তবে গত ১৫ মাস ধরে চলতে থাকা যুদ্ধে এই ঘটনা ইসরায়েলি সরকারের জন্য একটি রাজনৈতিক আঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় একবছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নওগাঁয় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত এক বছরে এ জেলায় অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছে। আহত কমপক্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে যানবাহনের বেপরোয়া গতি, অদক্ষ চালক আর ওভারটেকিং প্রবণতাকে দায়ী করা হচ্ছে।

জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে ৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয় ৫১জন আর আহত হয় ৩২জন। এছাড়াও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত খবর অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসেই বেশ কিছু সড়ক দুর্ঘটনায় আরও ১৪জন মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জনের মতো।

জানা যায়- নওগাঁয় ভটভটি, নসিমন-করিমন, বালুর ট্রাক এবং ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব যানবাহন নিয়ে যারা সড়কে নামছেন, তারা অধিকাংশই অদক্ষ চালক। এর ফলে কখনো নিজেই মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন, আবার কখনো অন্যকে মারছেন।

এছাড়াও সড়কে আইন না মানা, যানবাহনের বেপরোয়া গতি, অদক্ষ চালক, ওভারটেক প্রবণতায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কে অবৈধ যানের অবাধে চলাচল, সিএনজি, ব্যাটারি চালিত অটোরিশা, বালুবাহী ট্রাক, ইটভাটার ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারের বেপরোয়া চলাচল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনাও বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

তবে মূল অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তারা দায় চাপাচ্ছেন একে অপরের উপর। বাস চালকদের দাবি সড়কে সিএনজি, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ অন্যান্য যানবাহন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাস ট্রামিনালে কয়েকজন বাস চালকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান- সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হলো সড়কে অবৈধভাবে ভটভটি, নসিমন, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল। এসব যানবাহনের চালকরা ডান-বাম বুঝে না। তাদের কোন প্রশিক্ষ নেই। সাইড চাইলেও দেয় না। আবার কোনরকম সাইড দিলেও অনেক সমস্যাই পড়তে হয়। এজন্য দুর্ঘটনারোধে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।

সমাজকর্মী নাইস পারভীন বলেন, নওগাঁয় সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হলো অবৈধ যানবাহন চলাচল। এই অবৈধ যানবাহন চলাচলের কারনে সড়ক দুর্ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন সড়কে যেভাবে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে এতে পরিবারগুলো নি:স্ব হয়ে যাচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়গুলো খতির দেখা জরুরী। বিশেষ করে যারা ট্রাফিকের দায়িত্বে রয়েছেন তারা তাদের দায়িত্ব যে স্থানে, যে সময়ে হওয়ার কথা সেটি হয়ে থকে না। এজন্য সড়ক দুর্ঘটনার রোদে সরকারিভাবে আরও সচেতন হওয়া দরকার।

সিনিয়র সাংবাদিক কায়েস উদ্দিন বলেন, সড়কের যানবাহন চালাতে গেলে যে নিয়ম সেগুলো চালকরা কেউই মেনে গাড়ি চালায় না। প্রশাসনেরও খুব একটা নজর নেই। ট্রাফিক আইনটা যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে। অবৈধ যে সকল যানবাহন রয়েছে সেগুলো আইনের আওতায় আনতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার পিছনে যারা দায়ী তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি কার্যকর করতে হবে। না হলে সড়কের যে মৃত্যুর মিছিল সেটি কখনোই বন্ধ হবে না।

নিরাপদ সড়ক চাই নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি এএসএম রায়হান আলম বলেন, আমাদের সবাইকে ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের জন্য যা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন সেটি হলো মনোযোগ। যখনই গাড়ি চালানো হয় তখন খেয়াল রাখা উচিত মনোযোগ যেন গাড়ি এবং রাস্তার দিকেই থাকে। কখনই গাড়ি এবং রাস্তা থেকে মনোযোগ সরানো উচিত না। এটি মাথায় রেখে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনা কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।।

নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোদে লাইসেন্সবিহীন চালক ও অনিবন্ধিত যানবাহন চলাচলে বন্ধে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও চালক, হেলপার ও জনগণনের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে অবশেষে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের ৪ মে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা-ইসলামাবাদে হাজির হয়ে কবিকে ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণা করে গেজেট প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক গেজেট প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত ডিসেম্বরে উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় অনুমোদিত প্রস্তাব অনুযায়ী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি ঘোষণা করা হয়েছে এবং এটি সকলের অবগতির জন্য গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

১৯৭২ সালের ২৪ মে কলকাতা থেকে সরকারী উদ্যোগে কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকায় আনা হয় এবং তাঁর বসবাসের জন্য ধানমন্ডির ২৮ নম্বর (পুরাতন) সড়কের ৩৩০-বি বাড়িটি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এরপর ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে সরকার তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে এবং একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতে একুশে পদকে ভূষিত করে। একুশে পদক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বেসামরিক সম্মানসূচক পদক হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডি.লিট উপাধি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গভবনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত হন।

কবি নজরুল ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল, "মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই, যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই"। এই ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। তাঁর নামাজে জানাজায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাজার পর রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, রিয়াল এডমিরাল এম এইচ খান, এয়ার ভাইস মার্শাল এ জি মাহমুদ, মেজর জেনারেল দস্তগীর জাতীয় পতাকা-মোড়ানো নজরুলের মরদেহ সোহরাওয়ার্দী ময়দান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে নিয়ে যান। বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস হিসেবে তাঁর মৃত্যুর পর দুই দিন রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়।

কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে ২০১৮ সালে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইন জারি করা হয়। ১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর অবিভক্ত ভারতের কলকাতার এলবার্ট হলে সমগ্র বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে নেতাজী সুবাস চন্দ্র বসু, বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, এস, ওয়াজেদ আলী, দীনেশ চন্দ্র দাশসহ বহু বরণ্যে ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কাণ্ডারী’ এবং ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পর তাঁর জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টাগণও তাঁকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বীকৃতি প্রদান বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক মহত্ত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও বিপ্লবী মনোভাব দেশজুড়ে প্রেরণা যুগিয়েছে এবং সাংস্কৃতিক মেলায় তাঁর অবদান অমর হয়ে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১
নওগাঁয় একবছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫
অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বাংলাদেশ আমাদের হারানো ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৩তম বিসিএস: বাদ পড়া ২২৭ প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার সুযোগ
জানুয়ারিতে বোতলজাত এলপিজি’র দাম অপরিবর্তিত, অটো গ্যাসের দাম সামান্য কম
বছরের শুরুতেই বিয়ে করলেন গায়ক আরমান মালিক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল ঢাকা, রাজশাহীর প্রথম জয়
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ
ভারতে তুলনামূলক হারে কমেছে বাংলাদেশী পর্যটক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা
কেন খাবেন সারা রাত ভেজানো কিশমিশ-পানি
বছরের শুরুতেই উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারীসহ আহত ১৫!
বিপিএলে এক ম্যাচেই ৭ উইকেট নিয়ে তাসকিনের রেকর্ড
সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক
ম্যাজিস্ট্রেট সেজে নারী চিকিৎসকের সঙ্গে ডিম ব্যবসায়ীর মধুর প্রেম, অতঃপর...
‘ডাক’ মেরে নতুন বছর শুরু লিটন দাসের
আজ চুপচাপ থাকা মানুষদের দিন: বিশ্ব অন্তর্মুখী দিবস
অবশেষে বাংলাদেশিদের জন্য চালু হলো থাইল্যান্ডের ই-ভিসা
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে একাধিক পদে চাকরির সুযোগ, চলছে আবেদন