কমেছে মুরগি ডিমের দাম, কমেনি চালের
পোল্ট্রি মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা ও পাকিস্তানি মুরগির ২০ থেকে ৪০ টাকা কমে ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। সাদা মুরগির ডিমের দামও কমে ১০০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আগের মতোই মাছ, মাংস, সবজি, তেল-চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু মাঠ থেকে আমন ধান উঠা শেষ হলেও কমে না চালের দাম।
শনিবার ( ১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে বিভিন্ন উৎসব শুরু না হওয়া পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে না মাছ, মাংস ও মুরগির দাম।
মুরগির কেজি ২৪০ টাকা
সবজি ও মাছের দাম কমার কারণে মুরগির দামও কমেছে বলে কারওয়ান বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা জানান। তারা বলেন, বর্তমানে সরবরাহ বেশি। তাই কমছে মুরগির দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লারে ১০ টাকা কমে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। পাকিস্তানি মুরগীর দাম কমে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, লাল লেয়ার ২৫০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দামও কমে ১০০ থেকে ১১০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। হাঁসের ডিমের দামও কমে ডজন ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ডিম ব্যবসায়ী হাফিজ উদ্দিন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমরা কম দামে কিনে কম দামে দামে বিক্রি করছি। গরু ও খাসির মাংসের দাম কমতির দিকে। গরুর মাংস ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
ভরা মৌসুমেও কমেনি চালের দাম
ক্ষেত থেকে মাঠের আমন ধান উঠা শেষ হলেও কমেনি চালের দাম। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের বরিশাল রাইস এজেন্সির আল হাসিবসহ অন্য বিক্রেতারা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কোনো চালের দাম কমেনি। অথচ ধান উঠা শেষ। সরকার কি করছে তা বুঝা মুসকিল। মিনিকেট চাল এখনো আগের মতো ৭৪ থেকে ৭৫ টাকা কেজি, ২৮ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা চাল ৫০, বাসমতি ৮৮, নাজিরশাইল ৮২ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পোলাও চালের দামও কমেনি। খোলা এই চালের কেজি আগে ১২৫ টাকা বিক্রি করা হলেও তা ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আর কোম্পানির প্যাকেট চালের ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থিতিশীল তেল ও চিনির বাজার
সরকার গত বৃহস্পতিবার সয়াবিন তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। যা আগামী কাল ধেকে কার্যকর হবে। এ জন্য প্রায় দোকানে পাওয়া যাচ্ছে তেল। ১ লিটার তেল ১৯০ টাকা , ২ লিটার ৩৭০ টাকা ও ৫ লিটার ৯০০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে কোনো কোনো বিক্রেতারা কম দামেও বিক্রি করছেন। মসুর ডাল আগের মতো ৯৫-১৪০ টাকা কেজি, আটা ২ কেজি ১৪৪ টাকা থেকে ১৫০ টাকা ও ২ কেজি ময়দা ১৬০ টাকা বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়মে ১০৮ টাকা কেজি চিনি বিক্রি করা হচ্ছে এসব দোকানে।
নতুন আলু ২৫ টাকা
গত সপ্তাহে নতুন আল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়েছে। অথচ সেই আলুর কেজি ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। অপরদিকে শীতের প্রায় সবজি বাজারে আসায় মরিচের কেজি ৩০ টাকা বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, প্রতি পিস ফুল ও পাত কপি ২০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের কেজি ৩০ থেকে লম্বা ৭০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া ৩০, মূলা ও পেঁপের কেজি ২০ টাকা। তবে এখনো টমেটোর দাম কমেনি। আগের মতোই ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
আদার দাম কমে ১৪০ টাকা
সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম ১০ টাকা কমে দেশি আদা ১০০ টাকা ও চায়নাটা সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে এসে গেছে। তাই এর দামও কমে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ৭০ ও চায়না রসুন ১২০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থিতিশীল মাছের দাম
শীতের মৌসুমে খাল বিলের মাছের সরবরাহ বেশি থাকায় মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, রুই ও কাতলার কেজি ২২০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫০০-১২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড়ের দাম কমে ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০, কাজলি, বাতাসি ৬০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ইলিশের দামও কমতির দিকে। এক কেজির কম হলে ১০০০ টাকা কেজি, বেশি বড় হলে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ছোটগুলোর দাম একটু কম। সামনে বিভিন্ন উৎসব শুরু না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই দাম কম থাকবে বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান।
জেডএ/এএস