‘কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হলে আন্ডার-ওভার ইনভয়েসিং বন্ধ হবে’
পূঁজিবাজার হচ্ছে ধৈর্যের খেলা, দাম কমলে থেমে যেতে হবে, বাড়লে বিক্রি করতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ‘দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হলে সারা পৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার পরিস্থিতি দেশের ভেতরে বসেই দেখা যাচ্ছে। এতে আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না’।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) পল্টন টাওয়ারে ইআরএফ মিলনায়তনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি ।
ইআরএফের সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন— ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সাবেক সভাপতি আজম যে চৌধুরী এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সহ-সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান।
বিএসইসির চেয়ারমান বলেন, আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা কর্মসংস্থান। ভালো লোককে, ভালো বেতন দিয়ে ভালো কর্ম ঠিক করে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছিলাম। ঠিক সে সময় এমন এক জায়গায় যুদ্ধ বেঁধে গেল, সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ল। যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস ও জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যেখান থেকে বেসিক ফুডগুলো বিভিন্ন দেশে যায়, সেই দেশ যুদ্ধ জড়িয়ে গেল। তার সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশে প্রভাব পড়তে শুরু করল। এই ধাক্কায় যুক্তরাজ্যে তিন প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে। চার-পাঁচটা দেশের লিডারশিপ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সে রকম পরিস্থিতিতে আমরা পড়িনি।
তিনি আরও বলেন, জ্বালানির ওপর যখন প্রভাব পড়ে, তখন সারা পৃথিবীর অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ে। যুদ্ধ শুরুর পর যে ধাক্কা এলো তাতে আমাদের সবকিছু অন্যরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো। যে দেশের মানুষ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেই আমাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তবে যে ধাক্কা আমাদের লাগার কথা ছিল, তার থেকে কম লেগেছে।
শিবলী বলেন, সারা পৃথিবীতে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৮০-৯০ শতাংশ। আমাদের দেশে ঠিক উল্টো। যেখানে ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, সেখানে আমাদের প্রটেকশনের ব্যবস্থা নিতেই হবে। সে কারণে আমরা ফ্লোর প্রাইস দিয়ে সাময়িক একটা ব্যবস্থা নিয়েছি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে। অনেকে সমালোচনা করলেও এটা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না। বিশ্বে বাংলাদেশের ব্রান্ডিং করা হচ্ছে। এতে বিনিয়োগ বাড়বে। কর্মসংস্থান হবে। অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের নিজেদের যদি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হয়ে যায়, তখন আপনারা এখানে বসেই দেখতে পারবেন ঘানায় আজকে চালের দাম কতো বা আমাদের গার্মেন্টস পণ্য কোন দেশ কতো দামে নিতে চায়। আমরা এখানে বসেই সারা পৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার দেখতে পারব। তখন আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না।
জেডএ/আরএ/