ক্ষেতের ধান উঠলেও পাওয়া যাচ্ছে না মোটা চাল
ক্ষেত থেকে ধান উঠে গেলেও বাজারে এখনো পাওয়া যাচ্ছে না মোটা চাল। অন্য চালের দামও কমেনি। অন্যদিকে সয়াবিন তেল লিটারে ১২ টাকা ও চিনির দাম কেজিতে ১২ টাকা বৃদ্ধির পরও স্বাভাবিক হয়নি বাজার। তবে গত সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় স্বস্তির খবর মাছ, মুরগি ও ডিমে। এদিকে শীতের সব সবজি বাজারে আসায় কম দামে প্রায় সবজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
কমেনি অন্য চালের দাম
মাঠ থেকে আমন ধান উঠা প্রায় শেষ পর্যায়ে। তারপরও রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না মোটা চাল। অন্য চালের দাম একটু কমেনি। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের বরিশাল রাইস এজেন্সির আল হাসিব, মান্নান রাইস এজেন্সির তোফায়েল, কুমিল্লা রাইস জেনারেল স্টোরের শহিদুল ইসলাম এবং আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির আব্দুল আওয়াল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ধান উঠেছে ঠিকই, কিন্তু মোটা চাল তো নেই। মিনিকেট চাল এখনো আগের মতো ৭৪ থেকে ৭৫ টাকা কেজি, ২৮ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মোটা হাইব্রিড চাল ৪৮, বাসমতি ৮৮, নাজিরশাইল ৮২ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পোলাও চালের দামও বাড়তি। প্যাকেট ছাড়া এই চাল ১২৫ টাকা ও বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট চাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
এখনো সহজে মিলছে না চিনি
এক লাফে সরকার চিনির দাম ৯৫ থেকে ১০৭ টাকা কেজি ঘোষণা করেছে গত ১৭ নভেম্বর। তারপরও সহজে মিলছে না চিনি। এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের ইউসুফসহ অন্য খুচরা ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, ১০৭ টাকা করেছে মিল থেকে তারপরও চাহিদা মতো পাওয়া যাচ্ছে না। একদিন পাওয়া যাচ্ছে তো অন্য দিন পাওয়া যাচ্ছে না।
তেলের দামও বেড়ে ১৯০ টাকা লিটার করা হয়েছে। তারপরও সব কোম্পানির তেল পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে এক ও দুই লিটার পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ৫ লিটার তেল ৯১০-৯২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। মসুর ডাল আগের মতো ৯৫-১৪০ টাকা কেজি, আটা ২ কেজি ১৪৪ টাকা থেকে ১৫০ টাকা ও ২ কেজি ময়দা ১৬০ টাকা বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
কমতিরে দিকে সবজি
শীত ঘনিয়ে আসায় বাজারে প্রায় সব সবজির দাম কমতির দিকে। মরিচের কেজি ৩০ টাকা। বেগুনের দামও কমে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। শীত ঘনিয়ে আসায় বাঁধাকপি ও ফুলকপির দামও কমেছে। প্রতিটি ২০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের কেজি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া ৩০, মূলা ও পেঁপের কেজি ২০ টাকা। তবে এখনো ভরা মৌসুম না হওয়ায় টমেটোর দাম কমেনি। আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে শসার দাম কমে ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এখনো আদার কেজি ২০০ টাকা
দেশি আদার দাম না বাড়লেও চায়না আদার দাম কোনোক্রমেই কমছে না। ২০০ টাকার নিচে নামছে না। তবে দেশি আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম আগের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ৭০ ও চায়না রসুন ১২০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের মতো মাছের দাম
খাল বিলের পানি কমে আসায় মাছের দাম কমেছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। ইলিশের দামও কমতির দিকে। ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মারুফ বলেন, এক কেজির বেশি ইলিশ ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ছোটগুলোর দাম একটু কম। অন্য মাছ ব্যবসায়ীরাও বলেন, রুই ও কাতলার কেজি ২২০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫০০-৮০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড়ের দাম কমে ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০, কাজলি, বাতাসি ৬০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাঙ্গাস, তেলাপিয়ার দাম কমে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের মতোই মুরগির কেজি ২৪০-২৬০ টাকা
মাছের দাম কমার সঙ্গে মুরগির দাম কমেছে বলে কারওয়ান বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা জানান। তারা বলেন, আগের মতো প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৫০ টাকা, লাল লেয়ার ২৮০ টাকা, পাকিস্তানির দাম কমে ২৪০ থেকে ২৬০ ও দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পোল্ট্রির দামও কমে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। ডিমের দাম কমে আগের সপ্তাহের মতো ডজন ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। হাঁসের ডিমের দামও কমে ডজন ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ও গরু ও খাসির মাংসের দাম কমেনি। গরুর মাংস ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
জেডএ/এসএন