দিনের ব্যবধানে ডলার ১০৭ টাকা ছুঁইছুঁই
এক ধাপে ডলারের দাম ১০ টাকা বৃদ্ধি করেও তা একদিন স্থির থাকল না। দিনের ব্যবধানে ডলারের বিক্রয় মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা হয়েছে। ক্রয় মূল্যও বৃদ্ধি পেয়ে ১০২ টাকা ৩৭ পয়সা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে তা জানা গেছে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সূত্র হিসেবে তা উল্লেখ করেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ডলারের বিক্রিয়মূল্য ৯৬ টাকা থেকে হঠাৎ করে ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা ঘোষণা দিয়েছে। আর আন্তঃব্যাংক ক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ১০১ টাকা ৬৭ পয়সা। এই রেট ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ডলারের বিক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছিল ৯৫ টাকা। গত সোমবার ডলারের দাম ১ টাকা বাড়িয়ে ৯৬ টাকা করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, টাকা ও ডলারের বিনিময়মূল্য ব্যাংকগুলো নির্ধারণ করেছে। জোগান ও চাহিদা এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) দামের ভিত্তিতে ডলারের এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বুধবার ঢাকাপ্রকাশ-কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখন থেকে ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ডলার বিক্রি করবে না। তবে সরকার চাইলে এলসি খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ করবে। বাফেদা ও এবিবির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে ডলার বেচা-কেনা করবে। সেটাই বিনিময় রেট হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা ওয়েবসাইটে জানিয়ে দিবে।
গত বছরের আগস্টে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। চলতি বছর এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ডলারের দাম হয়ে যায় ৮৬ টাকা ৪৬ পয়সা। এরপর মে মাসে টাকার অবমূল্যায়ন হয় ৪ বার। আর জুন মাসে অবমূল্যায়ন হয় ৬ বার। ডলার সঙ্কট কমাতে ঋণ মার্জিন বৃদ্ধি, প্রায় দিন ডলার বিক্রিসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না। দিন দিন কমছে টাকার মান।
ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) নেতারা মিলে গত রবিবার প্রবাসী আয়ে ১০৮ টাকা, আমদানি দায় নিষ্পত্তিতে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করেন ৯৯ টাকা। সোমবার থেকে সব ব্যাংক এই একই দরে ডলার কেনাবেচা করবে বলে সিদ্ধান্তও হয় ওই সভায়। কিন্তু তা কার্যকর করেনি কোনো ব্যাংক।
এদিকে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ হয়। বিশ্বের সব দেশে এ নিয়ম মানা হয়। বাজারই নির্ধারণ করবে মুদ্রার দাম। বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের চলতে হবে এবং আস্তে আস্তে সে দিকেই যেতে হবে।’
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি বাড়ছে, আমদানি কমছে। রেমিট্যন্স ও বাড়ছে। মাসে ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলার রেমিট্যান্স আসছে। আাশা করছি অচিরেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।’
জেডএ/এএস