আবার বেড়েছে ডিমের দাম, স্বস্তি নেই চালে
এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়ে ১৩০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। আর পাকিস্তানি মুরগির দামও সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি। সবজির দামও তেমন কমেনি। করল্লার কেজি ১০০ টাকা ও শসা ১২০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এভাবে প্রায় সব সবজিই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে সরকার শুল্ক কমালেও চালের দাম কমছে না। মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আমদানি করা মোটা চালের দাম কমেছে কেজিতে দুই টাকা।
বিক্রেতারা জানান, আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কম দামে পাওয়া গেলে তখন কম দামে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করা হবে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে এমনই চিত্র দেখা গেছে। সবজি বিক্রেতারা জানান, টাউন হলের সবজির মান ভালো। তাই কারওয়ান বাজারের চেয়ে প্রায় সব সবজির দাম একটু বেশি।
সবজির দাম বেশি টাউন হল বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল জানান, করলা, বেগুনের কেজি ৮০ টাকা। গাজর ও টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, শিম ১৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, কচুমুখী ৬০ টাকা, লাউ ও চাল কুমড়ার দাম ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে ঢেঁড়শ, ধুন্দল, চিচিঙ্গা ও পটলের দাম একটু কমে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
সবজির দাম এত বেশি কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে টাউন হল বাজারের সবজি বিক্রেতা জহির বলেন, এগুলো কলাতিয়ার পণ্য, ভালো পণ্য। তাই বেশি দামে কেনা, বিক্রিও করা হচেছ বেশি দামে।
টাউন হল বাজারের নিউ হক স্টোরের কর্মী রাজন বলেন, ‘খোলা চিনির কেজি ৯০ টাকা ও প্যাকেট ১০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছ।নতুন রেটে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে ৫ লিটার ৯৪০ টাকা, ২ লিটার ৩৮৪ টাকা ও ১ লিটার ১৯২ টাকা। মসুর ডাল ৯০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি।
মিনিকেট চালের কেজি ৮০ টাকা
টাউন হল বাজারে ইকবাল জেনারেলের মালিক ইকবাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘সরকার ট্যাক্স কমালেও চিকন চালের দাম কমছে না। মিনিকেট চালের কেজি ৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে যা কেনা ৭৮ টাকা।’
ভারতের আমদানি করা মোটা চালের দাম ২/১ টাকা কমেছে, যা আমার কাছে নাই। আদা ১৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকা, ডাল ১৩৫ টাকা, ২৮ চাল ৬০ টাকা, নাজিরশাল ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে তেমন বাড়েনি কোনো জিনিসের দাম, যোগ করেন তিনি।
তবে আনোয়ার রাইস স্টোরের মান্নান বলেন, মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি, আটাশ চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা এবং মোটা পাজাম ৫৪ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। কেজিতে কমেছে দুই থেকে তিন টাকা।
দাম কমার কারণ জানতে চাইলে আনোয়ার রাইস স্টোরের মান্নান বলেন, আমদানি করা চাল বাজারে আসছে। তাই কম দামে কিনে কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পোলাও চালের দাম কমছে না। খোলা চাল ১২৫ টাকা ও প্রাণসহ অন্য কোম্পানির প্যাকেট চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
কমেছে মাংসের চাহিদা
এদিকে মাংসের চাহিদা না থাকায় আগের মতোই গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে জনপ্রিয় মাংস বিতানের জসিম জানান। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকিস্তানি মুরগির চাহিদা না থাকলেও সরবরাহ কমে যাওয়ায় কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। তাজ ব্রয়লার হাউজের কুদ্দুস বলেন, পোল্ট্রি ১৭০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৫০-৫০০ কেজি টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য মুরগির ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরা কী করব, বাজারে বেশি দাম, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। খাদ্য পরিবহনের দাম বাড়ায় পাকিস্তানি মুরগির দাম বেড়েছে।
বাড়তি মাছের দাম
বর্ষার বড় মৌসুমে নদী-খাল বিলের মাছের সরবরাহ কম। তাই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে মাছ। ইলিশের কেজি এক হাজার থেকে ১৬০০ টাকা কেজি। টেংরা মাছ ৬০০ থকে ৮০০ টাকা, আইড় ১ হাজার টাকা, রুই ও কাতল ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এভাবে প্রায় সব মাছের দাম বেড়েছে।
জেডএ/এমএমএ/