মাছের বাজার চড়া
শাক-সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মতো আমিষের বাজারও চড়া। বিশেষ করে মাছের বাজারও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে। গত ঈদের পর প্রায় সবধরনের মাছের দাম বেড়েছে। এমনকি গরিবের পছন্দের মাছ হিসেবে পরিচিত পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছের দামও বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা। অজুহাত হিসেবে দেখানো হচ্ছে মাছের সরবরাহ কম। আর ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া।
রাজধানীর সুপারশপগুলোতে মাছের দাম সবচেয়ে বেশি। মাছ বাজারগুলোতেও দাম বেড়েছে প্রকার ভেদে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল মাছ বাজার, কারওয়ানবাজার এবং মোহাম্মদপুরের সুপারশপ স্বপ্নতে গিয়ে মাছ বাজারের এই চিত্র পাওয়া গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অভিজাত মানুষের পছন্দের ইলিশের দাম সবচেয়ে বেশি। বড় সাইজের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকায়। এখানে কেজিতে দাম বেড়েছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। অন্যান্য মাছের দামও বাড়তি। বেড়েছে নদীর মাছের দামও।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম, তাই মাছের দাম একটু বেশি। আড়তে মাছের দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। টাউনহলের স্বপ্ন শপিং সেন্টারে দেখা গেছে, পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা কেজি, রুই ৩৪০, মলা ৪৭৫, ট্যাংরা ৭৭৫ টাকা, চিংড়ি ১১৮৫ টাকা কেজি দরে। সব মাছের দামই তুলনামূলক বেশি এবং প্রত্যেক মাছের দাম কেজিতে ২০ টাকা থেকে ৮০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
স্বপ্নের সেলসম্যান জসিম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আসলে বাজারে মাছের দাম বেশি। তাই বেশি দামে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।’
শুধু স্বপ্ন নয়, অন্যান্য সুপারশপগুলোতেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ।
টাউনহল মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মাছের দাম খুবই চড়া। মাছ ব্যবসায়ী রিপন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘নদীর চিংড়ি ১২০০ টাকা কেজি। অন্যান্য মাছের দামও বেশি। কাচকি ৬০০, আইড় ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’
মাছের দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে মাছ ব্যবসায়ী আরিফ বলেন, ‘খাল-বিলে তেমন মাছ নেই। তাই দাম বেশি।’
কারওয়ান বাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে। এই বাজারের মাছ ব্যবসায়ী দেলোয়ার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘পাঙ্গাস মাছের কেজি ১৮০ টাকা, বড় সাইজের ২০০ টাকা কেজি। আর তেলাপিয়ার কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। বাজারে মাছের দাম আগের চেয়ে বেশি।’
তপন ও লাল্টুও নামের দুই মাছ ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কমে গেছে। তাই দামও বাড়তি। পরিবহন খরচ বেশি, খাদ্যের দাম বেড়েছে, তেলের খরচ বেড়েছে। তাই চাষের মাছের দামও বেড়েছে। আবার নদীতেও মাছধরা পড়ছে কম। সবমিলিয়ে এখন মাছের অফ সিজন চলছে। তাই মাছের দাম বাড়তি।
এদিকে মামুন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদের পর মাছের দাম বেড়েছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
এসব বাজারে আরও দেখা গেছে, একক ব্যবসায়ী একক দামে বিক্রি করছে। কাজেই একই পরিমাণের মাছ ২০ থেকে ৫০ টাকা ব্যবধানে বিক্রি করা হচ্ছে। এই বাড়তি টাকা ভোক্তাদের পকেট থেকে কাটা হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলেন, ‘প্রায় প্রত্যেক মাছের দাম বেড়েছে। রুই ও কাতল মাছ ২৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। তবে বড় সাইজের ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিও বিক্রি করতে দেখা গেছে। নদীর চিংড়ি ১৪০০ টাকা, বাইলা ৬৫০ থেকে ১০০০ টাকা, আইড় ১০০০, পুঁটি ৮০০, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০, পাবদা ৬৫০, বাঘাইড় ৬০০ টাকা, বাতাসি ৭০০, কাজলি ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’
খোরশেদ আলমও ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, ঈদের পরে ইলিশের দামও কেজিতে ২০০ টাকা বেড়েছে। তাই ২ কেজি ওজনের ইলিশ ২৫০০ টাকা কেজি, দেড় কেজি ওজনের ২০০০ টাকা ও ৭০০ গ্রামের ইলিশ ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
এনএইচবি/এসজি/