৭ শতাংশ সুদে সিএমএসএমই উদ্যোক্তারা ঋণ পাবেন
জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে অধিকতর গতিশীল করার লক্ষ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের ৭ শতাংশ সুদে সহজ শর্তে ঋণ ও বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নিয়েছে।
এ জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন আবর্তনশীল স্কিম গঠন করেছে। এর মেয়াদ হবে তিন বছর। তবে ঋণ খেলাপিরা এ পুন অর্থায়ন সুবিধা পাবেন না। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করেছে।
এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মো. জাকের হোসেন সই করে বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে তা কার্যকর করতে বলেছেন। ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে-পুনঃঅর্থায়নের বিপরীতে অর্থায়নকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়িত অর্থের বিপরীতে বার্ষিক সুদের হার হবে দুই শতাংশ। আর গ্রাহক পর্যায়ে আরোপিত বার্ষিক সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ ১৩টি ক্লাস্টারভুক্ত সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিতে হবে। নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদার উদ্যোক্তা এবং যেকোনো দুর্যোগে (যেমন: নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, মঙ্গা, আগুন, ভূমিকম্প, ভবনধস, কোভিড-১৯ এর মতো অতিমারী) ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ তহবিলের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে।
বিতরণকৃত মোট ঋণের ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে এবং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। এ ছাড়া তহবিলে বিতরণ করা ঋণের ন্যূনতম ৭০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবসা খাতে দিতে হবে।
তবে যারা ঋণ খেলাপি তারা এ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবেন না। ঋণ গ্রহীতার ঋণের শ্রেণীকরণ বিষয়ে সিআইবি হতে নিশ্চিত হতে হবে। ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে গ্রেস পিরিয়ড হবে সর্বোচ্চ ৬ মাস। তবে গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ ৫ বছরের বেশি হবে না। পুনঃঅর্থায়নের মেয়াদ ঋণের মেয়াদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ, আদায় ও সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয় নিজেরা তদারকির মাধ্যমে নিশ্চিত করবে। প্রতি তিন মাস শেষে অব্যবহিত ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে এ সংক্রান্ত বিবরণী নির্ধারিত ছকে দাখিল করতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষে দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক যেকোনো সময়ে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (সিএমএসএমই) দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। এ খাতটি শ্রমনিবিড় ও স্বল্প পুঁজি নির্ভর হওয়ায় এবং এর উৎপাদন সময়কাল স্বল্প হওয়ায় আমদানী বিকল্প সেবা ও পণ্য উৎপাদনসহ জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে।
জেডএ/এমএমএ/