বাংলাদেশে ৫০০ সিসির মোটরসাইকেল তৈরি করবে কাওয়াসাকি
বাংলাদেশে জাপানি ব্র্যান্ড কাওয়াসাকি মোটরসাইকেলের পরিবেশক এশিয়ান মোটরবাইকস লিমিটেডকে রবিবার (২০ মার্চ) স্থানীয়ভাবে ৫০০ কিউবিক সেন্টিমিটার (সিসি) পর্যন্ত মোটরসাইকেল তৈরি করার অনুমতি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
এশিয়ান মোটরসাইকেল লিমিটেডের হেড অব অপারেশনস সাফাত ইশতিয়াক বুধবার (২৩ মার্চ) ঢাকাপ্রকাশ-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দেশে বড় মোটরসাইকেল উৎপাদন কারখানা স্থাপনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় এই নিয়ে দ্বিতীয় অনুমোদন দিল। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ইফাদ মোটরসকে রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেল তৈরির অনুমোদন দেয় সরকার।
শক্তিশালী মোটরসাইকেলের জন্য বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং মোটরসাইকেল বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ একইসাথে সরকার তার আমদানি নীতি আদেশও সংশোধন করছে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে ১৬৫ সিসির বেশি ইঞ্জিনের মোটরসাইকেল এবং তাদের যন্ত্রাংশ বা কাঁচামাল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এক সূত্রে জানা গেছে সংশোধিত আদেশের খসড়া অনুযায়ী, স্থানীয়ভাবে ৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল তৈরির কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ দেশে আমদানি করা যাবে। তবে, ১৬৫ সিসির অধিক ধারনক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিনের মোটরসাইকেল সম্পূর্ণরূপে নির্মিত অবস্থায় আমদানি করা যাবে না।
দেরিতে হলেও মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ক্ষমতার উপর উদ্ভট এই নিষেধাজ্ঞা থেকে সরে আসার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে মোটরসাইকেল নির্মাতারা। বাংলাদেশ ছাড়া কেবল শ্রীলঙ্কাতেই এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রচলিত আছে। কিন্তু, ৫০০ সিসি মোটরসাইকেলের জন্য স্থানীয় রোড পারমিট নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে এবং যা এখনও সংস্কার করা হয়নি।
সাফাত ইশতিয়াক বলেন, আমরা কাওয়াসাকির সঙ্গে ফ্যাক্টরি করার জন্য অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আমরা উৎপাদনের অনুমতি পাচ্ছি চমৎকার। বাংলাদেশে কারখানা করার একটাই কারণ, দেশের ভেতরে মার্কেট বড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, আমদানি নীতির আদেশ খসড়ায় যদি সরকার অটল থাকে তাহলে অনুমোদিত কোম্পানিগুলো স্থানীয়ভাবে তৈরি উচ্চতর সিসির মোটরসাইকেল বাজারে আনতে পারলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় রোড পারমিট সম্পর্কে সরকারের কাছ থেকে প্রচুর আশ্বাস পেয়ে আমরা কারখানায় বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছি যেখানে জাপানের কাওয়াসাকির ভারী শিল্প প্রযুক্তির সমন্বয় ও সহযোগিতা থাকবে।
সাফাত বলেন, আমরা খসড়া আমদানি নীতি আদেশ চূড়ান্ত এবং প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করছি।
তার মতে, আমদানি নীতি আদেশই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ক্ষমতা, রেজিস্ট্রেশন এবং রোড পারমিট সম্পর্কিত কর্তৃপক্ষের অবস্থানকে নির্দেশ করার চাবিকাঠি।
মোটরসাইকেল শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শুধুমাত্র রপ্তানির জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মোটরসাইকেল উৎপাদনে বিনিয়োগ বাংলাদেশে সম্ভব নয় কারণ ভারত, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশই দীর্ঘ বছর ধরে এই রপ্তানির সাথে জড়িত এবং বাংলাদেশ এখনও এই বাজারের প্রতিযোগিতায় অনেক পিছিয়ে। তাদের দাবি, বাংলাদেশের কারখানাগুলো স্থানীয় বাজারে উন্নতি লাভ করলেই বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে।
এশিয়ান মোটরবাইকস লিমিটেড জানিয়েছে, তারা ২০২৩ সালে সম্পূর্ণ উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে ১০ একর শিল্প এলাকায় কারখানা শুরু করছে।
এদিকে আগামী বছরের মধ্যে উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে ইফাদ মোটরস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে তাদেরর রয়্যাল এনফিল্ড উৎপাদন কারখানাও নির্মাণ করছে। পাশাপাশি সুজুকি, রানারসহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ড বাংলাদেশে তাদের উচ্চতর সিসি মোটরসাইকেল নিয়ে আসতে চায়।
/এএস