১৪ বছরে জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ
ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। আর এ মূল্যবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে।
সোমবার (৭ মার্চ) আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৯ ডলারে ওঠে। পরে তা কমে ১২৫ ডলারে নেমে আসে। ২০০৮ সালের পর এটাই জ্বালানির সর্বোচ্চ দাম। ওই সময় ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৪০ ডলার ছিল।
এদিেক, যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এবার তারা অন্যান্য দেশে রুশ তেল সরবরাহের ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে।
ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের আগেই ধারণা করা হচ্ছিল, যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে জ্বালানির দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার পেরিয়ে যাবে। সেই আশঙ্কা সত্যি করে এবার জ্বালানির দাম ব্যারেলপ্রতি ১২৫ ডলারে উঠল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানির তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। এর জেরে গত বছরের ৩ নভেম্বর দেশেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশেও বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটারে ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে সেদিন।
এদিকে আইএমএফ বলছে, যুদ্ধের কারণে বিশ্বের সীমিত আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়বে। তবে উন্নত দেশের তুলনায় উন্নয়নশীল দেশের মানুষেরাই বেশি বিপাকে পড়বেন। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, উন্নয়নশীল দেশে শুধু জ্বালানি ও খাদ্যের চাহিদা বেশি তা-ই নয়, এর পেছনে খরচও বেশি।
উল্লেখ্য, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
এগারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১২তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এমএমএ/