ঋণ প্রাপ্তি সহজ করতে হবে
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেছেন, ‘করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ সিএমএসএমইদের অবস্থানকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় উদ্যোক্তাদের ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় নথিপত্রের অভাব, জটিল ঋণ বিতরণ পদ্ধতি, উদ্যোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকা, ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল সম্পর্ক, জামানত সংক্রান্ত সমস্যা, এসএমই ডাটাবেইজের অনুপস্থিতির কারণে প্যাকেজের সহায়তা প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হয়েছেন উদ্যোক্তারা। সে কারণেই প্রণোদনা প্যাকেজের অর্ধেকের বেশি ঋণ এখনো বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের পুনরুজ্জীবিত করতে এই প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথ বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই।
‘ব্যাংক হতে সিএমএসএমই ঋণ ও প্রণোদনা প্যাকেজ প্রাপ্তির পদ্ধতি ও প্রস্তুতি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল কর্মশালায় তিনি এসব তথ্য জানান। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এ কর্মশালা শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘শিল্পখাতে ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ম্যানুফ্যাকচারিং-এ ৪৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে সিএমএসএমই খাত। তবে প্রয়োজনীয় আর্থিক এবং নীতিগত সহায়তার অভাবে সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠান তাদের সম্ভাবনা ও কর্মদক্ষতার পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছে না। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার অভাবেই দেশের সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার ঘোষিত ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ হতে কাঙ্খিত মাত্রায় ঋণ সহায়তা প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হচ্ছে।’
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (এসএমইএসপিডি) মো. জাকের হোসেন বলেন, দেশের অর্থনীতিতে সিএমএসএমই খাতের অবদানের বিষয়টি মাথায় নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংক করোনা মহামারি মোকাবেলায় এখাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ইতোমধ্যে দুদফায় ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে স্থানীয় পর্যায়ে এ ঋণ বিতরণের হার সন্তোষজনক নয়। তিনি উল্লেখ করেন, প্রথম ধাপের ২০ হাজার কোটি টাকা হতে ইতোমধ্যে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের ২০ হাজার কোটি টাকা হতে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ৬ হাজার ২১৭ কোটি টাকা সিএমএসএমই খাতে বিতরণ করা হয়েছে। যা প্রণোদনা প্যাকেজের মাত্র ৩১ শতাংশ। যা আসলেই কাম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় টাকার বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও উদ্যোক্তা এবং আর্থিকখাতের মধ্যকার সমন্বয়ের অভাবে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। মাঠ পর্যায়ে উদ্যোক্তা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভ্রান্ত ধারণার কারণেই ঋণ বিতরণে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের এসএমই খাতকে এগিয়ে নিতে হলে তাদের অবশ্যই ব্যাংকমুখী করতে হবে এবং সত্যিকারের উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।’
জেডএ/