বৃহস্পতিবারের বাজারদর
পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়েনি চাল, ডাল, মাছ, ডিম, মুরগি, খাসির মাংস, গরুর মাংস, আলু, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির। তবে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি পাঁচ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
বাড়েনি চালের দাম
বহু আলোচনা-সমালোচনা হলেও কমছে না চালের দাম। গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও কমেনি দাম। তবে বাড়েও নি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। কারওয়ান বাজারের মেসার্স কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাসেম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, এ সপ্তাহে আগের দামেই মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা, বিআর-২৮ কেজি ৪৭ থেকে ৪৯ টাকা, পারিজা ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। একই কথা জানান চাটখিল রাইস এজেন্সির বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, আগের দামেই মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৪৯, নাজির চাল ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে একই চাল বিভিন্ন বাজারে পাইকারির চেয়ে চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
স্থিতিশীল ডাল-চিনি-আটা-তেলের দাম
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মিল মালিকরা প্রতি লিটার তেলের দাম বাড়িয়েছেন আট টাকা। তাই আগের সপ্তাহের চেয়ে সব কোম্পানির তেল সেই বাড়তি দামে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। কারওয়ান বাজারের নিউ সোনারগাঁও জেনারেল স্টোরের রিপন বলেন, ‘আগে কম দামে বিক্রি করলেও বর্তমানে পাঁচ লিটার ভোজ্যতেল ৭৫০ থেকে ৭৭০ টাকা, ২ লিটার ৩২০ টাকা, এক লিটার ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
ইউসুফ জেনারেল স্টোরের সুজনও ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, কোনো জিনিসের দাম বাড়েনি, কমেও নি। সব পণ্যই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। চিনি ৭৫ টাকা কেজি, দুই কেজি আটা ৮০ টাকা, ডাল ৯০ থেকে ১১০, ছোলা ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে কোনো কোনো দোকানে ৫ লিটার তেল ৫৫০ টাকা ও এক লিটার ১৬৫ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতারাও বলছেন, আগের দামেই প্রায় পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল ছাড়া তেমন বাড়েনি নিত্যপণ্যের দাম।
আগের দামেই খাসির মাংস
গত সপ্তাহের মতো গরু, খাসির মাংসের দামও এ সপ্তাহে স্থিতিশীল। কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় খাসির মাংসের দোকানের নুরুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আগের সপ্তাহের মতোই এ সপ্তাহে ৯৩০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পরিমানে বেশি কিনলে কিছুটা কম দাম রাখা হচ্ছে।’
তবে গত সপ্তাহ থেকে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে আর কমেনি বলে ব্যবসায়ীরা জানান। কারওয়ান বাজারের মেসার্স খোকন এন্টারপ্রাইজের জালাল বলেন, ‘আগের সপ্তাহ থেকে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে গরুর মাংস। এর কমে বিক্রি করা সম্ভব নয়।’
স্থিতিশীল ডিম-মুরগি-মাছের দাম
আগের মতোই ডিমের ডজন সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। জানতে চাইলে জননী মুরগীর আড়তের আব্দুল ওহাব ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘দেশি মুরগি আগের দামেই ৪৫০ টাকা কেজি, ব্রয়লার ১৫০ থেকে ১৬০ কেজি ও পাকিস্তানি কর্ক ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’
এদিকে আগের সপ্তাহের মতোই মাছের বাজার স্থিতিশীল বলে বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রতন বলেন, আকারভেদে রুই ও কাতল ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকারভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের শিং মাছ ৩০০, দেশি শিং ৭০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা, দেশি ৫০০ টাকা কেজি, দেশি শোল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং আইড় মাছ আকারভেদে ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
পেঁয়াজের দাম বাড়লেও স্থিতিশীল আলুসহ সবজির দাম
আলু পাইকারি বাজারে ১২ থেকে ১৪ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও পাইকারি বাজারে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। টমেটোরও একই দশা। পাইকারিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি হলেও খুচরা পর্যায়ে তা ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। রমজান ট্রেডার্সের আলি হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ১৩০ টাকা পাল্লা বা কেজি ২৬ টাকা বিক্রি করা হলেও আজ পাল্লাপ্রতি ১৬০ টাকা বা ৩২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সেই পেঁয়াজ বিভিন্ন খুচরা বাজারে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের মতোই দেশি রসুন কেজি ৫০ টাকা ও চায়না রসুন ১২০ টাকা, দেশি আদা ৯০ টাকা ও চায়না আদা ১২০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, বেগুন ৪০ থেকে ৫০, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, শাকের আঁটি ৮ থেকে ১০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে গাঁজর ও মুলার দাম কমে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
জেডএ/আরএ