‘শেখ হাসিনার আমলে অর্থনীতিকে ফতুর করা হয়েছে’
ছবি: সংগৃহীত
গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার পাচার করেছে। এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ থেকে ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ পাচার হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকার প্রকৃত পরিমাণ কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। বিভিন্ন ধরনের আর্থিক হিসাবনিকাশ করে আহসান মনসুর বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে যে পরিমাণ অর্থ লুট করেছে, তা কার্যত পৃথিবীর আর্থিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় নিউইয়র্ক টাইমস।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে গত অক্টোবরে। আর চলতি সপ্তাহে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে সার্বিকভাবে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।
আহসান মনসুর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছিল, লুটপাট করার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হচ্ছে ব্যাংক। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শত শত কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন কোম্পানির নামে ঋণ দিয়েছে। কোম্পানিগুলোর অনেকগুলোর আদতে কোনো অস্তিত্বই নেই। এ টাকাও কখনো সম্ভবত ব্যাংকে ফিরে আসবে না; এ অর্থের একটি বড় অংশ দেশ থেকে অবৈধভাবে বাইরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার আগে ২৭ বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) কাজ করেছেন আহসান মনসুর। তিনি বলেন, ব্যাংকের পুরো পরিচালনা পর্ষদ হাইজ্যাক করা হয়েছিল। তার মতে, বিশ্বের অন্য কোনো দেশে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এভাবে গুন্ডা-মাস্তানদের সহযোগিতায় পুরো ব্যাংক খাতে এমন পদ্ধতিগতভাবে ডাকাতি করেছে, এমন ঘটনা তিনি আর কোথাও দেখেননি।
অর্থনীতি প্রসঙ্গে আহসান মনসুর বলেন, আগামী বছর অর্থনীতির আকাশে আরও কালো মেঘের ঘনঘটা থাকবে। এরপর অর্থনীতির আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে।