জবাবদিহিতা না থাকায় হচ্ছে দুর্নীতি
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেছেন, কিছু সরকারি কর্মকর্তা দুষ্টচক্রের মাধ্যমে দুর্নীতি করে থাকেন। নালিশ করলে লাভ তেমন হয় না, ফাইল আটকে রাখেন। জবাবদিহিতা না থাকায় বেপোরোয়াভাবে দুর্নীতি হচ্ছে।
রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অফিস মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিদেশিদের ট্যানেল, মেট্রোরেল দেখিয়ে লাভ নেই, এগুলো তারা অনেক আগে দেখেছে। তাদের আকর্ষণ করতে বিনিযোগ পরিবেশ বাড়াতে হবে। ব্যবসা করতে গিয়ে প্রধান সমস্যা হয়রানি। এটা বন্ধ করা সাধারণ ব্যাপার। সব জায়গায় অটোমেশন হয়ে গেলে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ কম্পিউটার কারও কাজ আটকে রাখে না। চায়না ইংরেজি না জানলেও দুনিয়া দখল কর নিয়েছে। ফ্রান্সও শিখে না ইংরেজি। তারপরও তারা সব কিছু দখল করে আছে। তাই আমাদের গবেষণা করে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা চম্বোর অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডসিসিআিই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘দুর্নীতি তো বেসরকারিখাতে হয় না। সরকারি কর্মকর্তারাই তা করে। ব্যবসায়ীদের ট্যাক্স কমার পথ দেখায় তারা। তবে সব ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স ফাঁকি দেয় না। এটা অবাস্তব কথা। কিছু লোকের জন্য সবাইকে দায়ি করা যাবে না।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, একমাত্র অটোমেশনই পারে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য খাতে সকল প্রকার দুনীতি রোধ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে। করপোরেট করের বিষয়ে তিনি বলেন, এলডিসি উত্তোরণের পূর্বে বাংলাদেশের করপোরেট কর হার আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা প্রয়োজন। এলক্ষ্যে বিদ্যমান করপোরেট কর ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যথাক্রমে ৫% ও ৭.৫% হারে ক্রমান্বয়ে হ্রাস করা দরকার।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, কোভিড মহামারী কারণে সরকার বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিলেও সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজু। তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টি আরও সহজীকরণ করা প্রয়োজন। বড়রা ঋণ পেলেও ছোটরা সহজে পাচ্ছে না। কিন্তু বড় ঋণই খেলাপী হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ছোটরা ঠিকই ঋণ পরিশোধ করে।
বৈশ্বিক কবি প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য আমাদের মানবম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এ ব্যাপারে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে আরও বেশি হারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। সমুদ্র অর্থনীতিকে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, আমাদের জিডিপিতে এখাতে অবদান রয়েছে ৩.১%। এ সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য একটি কার্যকর রূপকল্প প্রণয়ন দরকার।’
রিজওয়ান রাহমান বলেন, এলডিসি উত্তোরণের পর বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বেশ প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পাশাপাশি পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নেগোশিয়েশনের দক্ষতা আরও বাড়ানো অতীব জরুরি। সেই সঙ্গে এফটিএ’র ওপর আমাদের অধিক হারে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিশেষকরে বিদ্যমান করকাঠামোর প্রতিবন্ধকতা নিরসন ও যুগোপযোগীকরণ, ক্রস-বর্ডার বাণিজ্য সম্প্রসারণে নীতি সহায়তা প্রদানের উপর জোরারোপ করে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে আমাদের বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ডিজিপি’র ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং ২০২১ সালে এডিআই’র পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এমতাবস্থায় বেসরকারি বিনিয়োগ এবং এফডিআই বৃদ্ধিতে করপোরেট কর কাঠামোর সংষ্কার, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে সকল ধরনের সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ একান্ত অপরিহার্য।’
তিনি আরও বলেন, এলডিসি উত্তোরণের পর আমাদের রপ্তানিমুখী পণ্যের উপর শুল্ক হার বর্তমানের চেয়ে ৬-৭% বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে এখন থেকে আমাদের পণ্যের বহুমুখীকরনের সঙ্গে সঙ্গে বাজার সম্প্রসারণের উপর মনোযোগী হতে হবে। এছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধিতে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের প্রতি আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। প্রতিবেশি দেশের দিকেও নজর দিতে হবে। কারণ আমেরিকাতে প্রায় ১৮ শতাংশ, ইউকেতে প্রায় ১০ শতাংশ রপ্তানি হয়েছে। আবার ইউরোপে ৪৫ শতাংশ রপআতানি হলেও কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে মাত্র তিন শতাংশ রপ্তানি হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইর উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হক এবং সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন।
জেডএ/আরএ
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)