সিগারেটের ৯৬% ভ্যাট দেয় ভোক্তারা
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত থেকে তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তামাকবিরোধী নেতারা। তামাক পণ্যে কর ও মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে প্রতি বছর বাজেটের আগে বিভিন্ন কূটকৌশল অবলম্বন করে থাকে তামাক কোম্পানিগুলো। সিগারেট থেকে যে রাজস্ব আসে তার প্রায় পুরোটাই (৯৬%) ভোক্তা প্রদান করে পরোক্ষ কর হিসেবে।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সহযোগিতায় ‘তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ: কোম্পানির কূটকৌশল ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞা’র পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরেন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।
বাংলাদেশে সিগারেটে কর অনেক বেশি, কর বাড়ালে চোরাচালান বাড়বে এবং সরকার রাজস্ব হারাবে, বিড়ির ওপর কর বাড়ানো হলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হবে, সবচেয়ে বেশি কর দেয় তামাক কোম্পানি, কর বেশি হলে দেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে এবং মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণ ও নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত ও প্রভাবিত করার চেষ্টা করে তারা।
অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১ সালের তথ্যমতে, সবচেয়ে কম দামে সিগারেট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫টি দেশের মধ্যে ১০৭তম। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সবচেয়ে কমদামি সিগারেটের মূল্য বাংলাদেশের কমদামি সিগারেটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। কার্যকর করারোপের অভাবে বাংলাদেশে সিগারেট সস্তা থেকে যাচ্ছে। সিগারেটের রাজস্ব ফাঁকি তথা অবৈধ বাণিজ্য নিয়ে যে প্রচারণা তা নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা মাত্র। সিগারেট থেকে যে রাজস্ব আসে তার প্রায় পুরোটাই (৯৬%) পরোক্ষ কর হিসেবে প্রদান করে ভোক্তা । কাজেই সিগারেট কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি কর দেয় এটি মোটেও সত্য নয়।
অন্যদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের বিড়ি শিল্পে কর্মরত নিয়মিত, অনিয়মিত এবং চুক্তিভিক্তিক মিলিয়ে পূর্ণসময় কাজ করে ৪৬ হাজার ৯১৬ জন। বিড়ি শ্রমিকদের সংখ্যা নিয়ে মালিকপক্ষ এ ধরনের অসত্য তথ্য প্রচার করে নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে থাকে।
এই ওয়েবিনারে আরও জানানো হয়, ‘নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করতেই সাংসদদের মাধ্যমে ডিও লেটার প্রদান, সুবিধাভোগী অর্থনীতিবিদদের দিয়ে পত্রিকায় কলাম প্রকাশ, মিডিয়া ক্যাম্পেইন, বিড়ি শ্রমিকদের ব্যবহার করে দেশব্যাপী তথাকথিত আন্দোলন, বিদেশি কূটনীতিকদের দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে বৈঠক কার্যক্রম করে থাকে তামাক কোম্পানিগুলো। তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়, পঙ্গুত্ব বরণ করে আরও কয়েক লাখ মানুষ। সুতরাং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে বাজেটে তামাকের উপর কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানান তারা।
ওয়েবিনারে আলোচক ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর বাংলাদেশ কান্ট্রি অ্যাডভাইজার মো. শফিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর ইপিডেমিওলজি এন্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
জেডএ/এসআইএইচ
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)