ইভ্যালি ছাড়তে চান হতাশ মিলন

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন সরকার গঠিত প্রতিষ্ঠানটির নতুন পরিচালনা বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব কবীর মিলন। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘এখন কোম্পানিটি ছেড়ে দেয়া ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই।’
এর আগে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এক পোস্টে ইভ্যালি গ্রাহকদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মাহবুব কবীর। ২৬ অক্টোবর ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেছিলেন, ‘যা কিছু দেখবেন শুনবেন জানবেন, আতঙ্কিত বা হতাশ হবেন না। আস্থা বা বিশ্বাস রাখুন, অপেক্ষা করুন। কষ্ট যা হবে, আমার হবে। হয়তো তিন গুণ কষ্ট বেড়ে যাবে, এই যা। যা হবে বিন্দু পরিমাণ বিচ্যুতি বা অনিয়ম বা ম্যানিপুলেশন থাকবে না। সময় দিন। অপেক্ষা করুন।’
মাহবুব কবীরের শুক্রবারের পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে কয়েক হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ফেসবুক পোস্টে মাহবুব কবীর মিলন লিখেছেন- ‘কোম্পানি রান করবে, না দেউলিয়া ঘোষিত হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে একমাত্র ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের আদেশে সুস্পষ্টভাবে সেটাই বলা আছে। কোম্পানি রান করার বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকলে তার চেষ্টা না করে কোনো অবস্থাতেই লাখ লাখ মানুষকে পথে বসানোর সিদ্ধান্ত দেবে না ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি কোম্পানির টাকায় এক কাপ চা-ও খাননি, খাবেনও না। বিনা পারিশ্রমিকে নিজের গাড়ি, তেল-মবিল পুড়িয়ে অফিস করছেন। সেখান থেকে বের হওয়ার দিন পর্যন্ত মানুষের কল্যাণের উদ্দেশ্যে তাই করে যাবেন। গালাগালি খুব করে করতে থাকুন, যাতে তার দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথ ত্বরান্বিত হয়। তিনি অনেক কিছুই গুছিয়ে এনেছিলেন। আল্লাহপাক আপনাদের হেফাজত করুন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি একা এই অফিস ঝাড়ু দিয়েছি। ২০/২৫ দিন শুধুমাত্র একা অফিস করেছি। দ্বিতীয় কেউ ছিল না। বাসায় গিয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করেছি গত দুই মাস ধরে। অনেক কিছুই গুছিয়ে এনেছিলাম। আহা! আমাকে করা গালাগালির ভাষাগুলো দেখছি আর চরমভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। ছেড়ে দেয়া ছাড়া আমার আর কোনো অপশন নেই।’
ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি পোস্টের বাইরে আর কিছু বলতে রাজি হননি।
প্রতারণার অভিযোগে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর। কোম্পানিটির কাছে গ্রাহকদের পাওনা অর্থ ফিরিয়ে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশে গত ১৮ অক্টোবর ইভ্যালি পরিচালনার দায়িত্ব নেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ। মাহবুব কবীর মিলনকে পর্ষদের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ইভ্যালির দেনা ও সম্পদের হিসাব করছে পরিচালনা পর্ষদ। এর মধ্যে রাজধানীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে গত ৩১ জানুয়ারি দুটি লকার ভাঙা হয়েছে। সেখানে নগদ আড়াই হাজার টাকা, ব্যাংকের কয়েকটি চেকবই ও ফাইলপত্র ছাড়া কিছু তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওনা রয়েছে গ্রাহকদের। পাওনা আদায় নিয়ে গ্রহকদের মধ্যে দিন দিন হতাশা বাড়ছে।
এপি/
