কমেছে মাছ-মাংস-ডিমের দাম, স্থিতিশীল সবজির বাজার
কমেছে মাছ-মাংস-ডিমের দাম, স্থিতিশীল সবজির বাজার। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীরগুলোতে বাজারে গরুর মাংসসহ কমেছে মুরগি, মাছ ও ডিমের দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও আদার মতো পণ্যের দামে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে শীতের মৌসুম হওয়ায় বাজারে সবজির দাম এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে।
ঢাকার বিভিন্ন বাজারে মোটা চালের দাম আগের মতো রয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। মাঝারি চালের কেজি পড়ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। আর সরু চালের কেজি পড়ছে ৬২ থেকে ৭৫ টাকা। টিসিবির হিসাবের বাইরে বাজারে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৯৫ টাকা পর্যন্ত দেখা গেছে।
গমের দাম বাড়ায় আটা ও ময়দার দামও বেড়েছে। খোলা আটা কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর প্যাকেট আটার কেজি কিনতে খরচ হচ্ছে কমবেশি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। একইভাবে খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৬৫ এবং প্যাকেট আটা ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে। প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে।
পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাজারে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। তাতে আমদানি করা পেঁয়াজ আসছে কম। চলতি অর্থবছরে ভারত থেকে পেঁয়াজ এসেছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন।
এদিকে, স্বস্তির বাজারে ক্রেতাদের টানছে গরুর মাংস। এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানে ৬০০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়, যা এক মাস আগের চেয়ে কেজিতে দেড়শ টাকা কম। তবে সাধারণ বাজারে এখনো আগের নিয়মে পরিমাণমতো হাড্ডিসহ মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা।
গরুর মাংসের পাশাপাশি দাম কমেছে মুরগির। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৭৫ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সাদা ও বাদামি রঙের ডিমের ডজন পাওয়া যাচ্ছে যথাক্রমে ১১০ ও ১২০ টাকার মধ্যে।
বাজারে এখন মাছের সরবরাহ ভালো। তাছাড়া মাংসের দাম কমার প্রভাবও পড়েছে মাছের দামে। বেশি কমেছে চাষের মাছে। মাঝারি মানের চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। বড় আকারের চাষের তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আর মান ও আকারভেদে চাষের রুই মাছের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। তবে চিংড়ির দাম তেমন কমেনি। প্রতি কেজি কিনতে এখনও গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা।
অন্যদিকে সেপ্টেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১২টাকা করে নির্ধারণ করা হয় সেই সময়, যখন বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম সাড়ে ১৩ টাকা ছিল। এরপর বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রথম ডিম আমদানির অনুমতিও দেয়। এরপর থেকে ক্রমাগত কমে এখন প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকায় নেমেছে।
হরতাল অবরোধের মধ্যেও চলতি সপ্তাহে শীতকালীন সবজি আমদানি ভালো থাকায় শিম, গাজর ও ফুলকপিসহ সব ধরনের সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বেগুন বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০, ঢেঁড়স ৬০, পটল ৫০, বরবটি ৮০, ধুন্দুল ৪০, চিচিঙ্গা ৫০, শসা ৬০ থেকে ৭০, পেঁপে ৩০, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে এবং ধনে পাতা বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি। এছাড়া লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা এবং জালি কুমড়া ৪০ টাকা। এদিকে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০ টাকা, নতুন আলু ৭০, দেশি পেঁয়াজ ১৩০, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ এবং কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৭০, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১০০ থেকে ১২০, কচুরমুখী ৭০ এবং গাজর ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০, মূলা শাক ১০, পালং শাক ১৫, কলমি শাক ৮ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।