ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়
বাণিজ্য মেলায় ঘুরার সঙ্গে কেনাকাটা শুরু
সুযোগ হয়েছে মেলায় এসেছি। তবে করোনা সংক্রমণের ভীতিকর পরিস্থিতিতে ভিড় এড়াতে বিকাল গড়ার আগে বের হয়ে যায়। ঘুরে ফিরে কিছু কেনা হলো। এভাবে ২৬তম বাণিজ্য মেলায় ঘুরতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. মাশফি ঢাকাপ্রকাশকে অভিমত জানান।
বিক্রেতারা বলছেন, আজ তৃতীয় শুক্রবার চলে যাচ্ছে। আর মাত্র একটা শুক্রবার আছে। মাসব্যাপী এ মেলা এখনো অন্যান্য বছরের মতো জমে উঠেনি। করোনার কারণে অন্যান্য বছরের মতো অনেকে আসেন না।
তবে শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর আগারগাঁও থেকে নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলের নতুন জায়গায় এই মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঘুরার সঙ্গে কিনছেন পছন্দের জিনিস। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সরেজমিনে মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এই দৃশ্য দেখা গেছে।
মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বলছে, জরিমানা করে হলেও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মেলা চলছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত চলবে।
বিক্রেতারা বলছেন, ছুটির দিনগুলোতে ক্রেতা-দর্শনার্থী বাড়লেও বেচাকেনা খুব বাড়েনি। মেলায় বেশিরভাগ মানুষই ঘুরতে আসছেন। ঘুরে ফিরে চলে যাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ঢাকার ক্রেতা-দর্শনার্থীও বেশ কম। আশপাশের জেলাগুলো থেকে অনেকেই মেলায় আসছেন। তারা কেনাকাটার চেয়ে প্রথমবার নিজ চোখে বাণিজ্য মেলা দেখতে পারার দিকেই বেশি আগ্রহী।
তবে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিউশন সেন্টারের (বিবিসিএফইসি) সামনে উন্মুক্ত স্থানে মানুষের আড্ডা লক্ষ্য করা গেছে। বিনোদনের স্বাদ পেতে সেখানে ছবি তোলার জন্য অনেক ভিড় দেখা যায়। ঘুরার ফাঁকে মেলায় দর্শনার্থীদের খাবারের দোকানগুলোতেও ভিড় করতে দেখা গেছে। পোশাক, ঘর সাজানোর উপকরণ ও ক্রোকারিজের দোকানেও ক্রেতা-দর্শনার্থীরা উঁকি দিচ্ছেন। কম দামের পণ্যের দোকানগুলোতেই ক্রেতারা বেশি ঝুকছেন। সেই তুলনায় বড় বড় আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানে ক্রেতা কম। ঢাকা থেকে যেসব ক্রেতা আসছেন, দূরত্ব ও পরিবহন জটিলতার কারণে তারা ভারি পণ্য কিনছেন না। তাই বড় বড় সামগ্রীর বিক্রি কম বলে জানান বিক্রেতারা।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আগের ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করার পর শুক্রবার জনসমাগম নিয়ন্ত্রণসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তারপরও মেলায় প্রবেশের পরে অধিকাংশ ক্রেতা-দর্শনার্থী স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না। মাস্ক খুলে ঘোরাঘুরি করছেন।
ইপিবি জানায়, মেলায় যাতায়াতের জন্য বিআরটিসি গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে ৩০০ পুলিশ। বড়দের ৪০ টাকা, অপ্রাপ্তদের জন্য ২০ টাকায় টিকিট কিনে মেলায় প্রবেশ করা যাচ্ছে। তবে প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধারা টাকা ছাড়াই মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতসহ কাছাকাছি ১১টি দেশ মেলায় অংশ নিয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আরোপিত বিধিনিষেধে বাণিজ্য মেলা বন্ধের বিষয়ে তো কিছু বলা নেই। তাই মেলা চলবে। মেলার শুরু থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা মানাতে মেলা প্রাঙ্গণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কাউকে পেলেই জরিমানা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত মাস্ক না পড়ায় মেলায় ২০ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। পরবর্তীতে কোনো নির্দেশনা পেলে তখন মেলা বন্ধ করা হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জেডএ/এসআইএইচ