লবনাক্ত ও আর্সেনিকযুক্ত এলাকায় সুপেয় পানি
বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে ৯৬২ কোটি টাকার প্রকল্প
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
বাংলাদেশের লবনাক্ততা ও আর্সেনিকযুক্ত ১০ জেলার ৪৪ উপজেলার ২২২টি ইউনিয়নে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে জনগণকে নিরাপদ পানি সরবরাহ করা হবে। এ জন্য ‘উপকূলীয় জেলাসমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্প' বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুই লাখ ছয় হাজার ৮৭২টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং নির্মাণ করা হবে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬২ কোটি টাকা। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এটি বাস্তবায়ন করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলা, খুলনা জেলার সাতটি, বাগেরহাটের ছয়টি, সাতক্ষীরার সাতটি, বরগুনার তিনটি, পিরোজপুরের পাঁচটি, ঝালকাঠির তিনটি, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, চট্রগ্রামের তিনটি ও কক্সবাজার জেলার চারটি উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশস সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে সিডর ও ২০০৯ সালে আইলাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এরফলে শুধু ভূ-উপরিস্থ নয়, ভূগর্ভস্থ পানিতেও লবনাক্ততা ছড়িয়ে পড়ে। কোনো কোনো এলাকায় পানযোগ্য পানিও পাওয়া যায় না। এমনকি নদী, খাল, বিলের পানিও লবনাক্ততায় ভয়ে গেছে। এই সব উৎসের পানি গৃহস্থালী ও কৃষিকাজেও ব্যবহার করা যায় না।
বাংলাদেশের পানযোগ্য পানিতে লবনাক্ততার গ্রহণযোগ্য পরিমাণ ৫০০পিপিএম। অথচ উপকুলীয় কিছু কিছু এলাকায় এর পরিমাণ দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ। তারপরও ওই এলাকার জনগণ এই পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে।
এমন অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে উপকূলীয় আট জেলার ১৬ উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে প্রত্যন্ত ও দূর্গম এলাকা বিবেচনা করে ১০ জেলার ৪৪ উপজেলার ২২২টি ইউনিয়নকে নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে দুই লাখ ছয় হাজার ৮৭২টি ‘রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং’ পদ্ধতি স্থাপনের পানি সরবরাহের জন্য প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। তাতে ২০ হাজার ৬৭৬টি রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্মাণ করা হবে। তিন হাজার লিটার পানির ট্যাঙ্ক ধরা হয়েছে। প্রতি ট্যাঙ্কের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। ৬ হাজার ৪৩ জনের জন্য একটি পানির উৎস ধরা হয়েছে। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালে জুন পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয় ৪০৩ কোটি টাকা।
সূত্র আরও জানায়, প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প মুল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্প বাস্তবায়নকাল, অর্থব্যয় ও সমীক্ষা প্রতিবেদন সঠিক নয়সহ কিছু ব্যাপারে আপত্তি করে তা সংশোধন করতে বলা হয়। এ ব্যাপারে ২০২১ সালের ২৩ মে ভৌত অবকাঠামো বিভাগ থেকে প্রকল্প পুনর্গঠনের জন্য চিঠিও পাঠানো হয়।
তা আমলে নিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে দেরিতে হলেও উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) তুষার মোহন সাধু খাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘আমি জানি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করতে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ তবে সমীক্ষা প্রতিবেদন সঠিক না হওয়ায় আবার সঠিকভাবে সমীক্ষা করতে অনেক দেরি হয়েছে। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পরে কি হয়েছে তা আমি জানি না। এ ব্যাপারে মোটেই অবগত নেই।’
জেডএ/
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)