এখনো বেশি দামেই চিনি বিক্রি
সরকার খোলা চিনির দাম কেজিতে ৩ টাকা কমিয়ে ১০৪ টাকা কেজি বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। যা ৮ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে তার কোনো অস্ত্বিত নেই। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চিনি নেই। অনেকে বলছেন, কম দামে এখনো কোনো চিনি পাইনি। তাই আগের মতোই বেশি দামে ১১৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে রমজাস মাস শেষের দিকে আসায় লেবু ও শসা কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া ডিমও আগের মতো ১২০-১২৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, টাউনহল ঘুরে সংশ্লিষ্ট খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
আগের মতোই বেশি দামে মুরগি বিক্রি
কারওয়ান বাজারের ঢাকা ব্রয়লার, নুরজাহান ব্রয়লার হাউজের নবীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, আগের চেয়ে একটু দাম বেড়েছে। তাই বর্তমানে ব্রয়লার ২০০ থেকে ২২০ ও পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এর চেয়ে আরও নাও কমতে পারে। কমলে কম দামে বিক্রি করা হবে। অপরদিকে টাউনহলের ভিআইপিসহ অন্য খুচরা মুরগি ব্যবসায়ীরা বলেন, ব্রয়লার ২০০ থেকে ২১০ টাকা ও পাকিস্তানি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। দাম বেড়ে গেছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে মুরগির দাম বৃদ্ধি পেলেও গরুর মাংস আগের মতোই ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, খাসির মাংসও ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান মাংস বিক্রেতারা। এদিকে আগের সপ্তাহে মতো ডিম ১২০-১২৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে এলাকাভেদে এই দাম কম-বেশি হচ্ছে।
মুরগির দাম বাড়লেও কারওয়ান বাজার ও টাউনহলে আগের মতোই রুই, কাতলা, ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতারা জানান, রুই, কাতলা ২৫০-৪৫০ টাকা কেজি। তবে বড় মাছ আরও বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। চিংড়ি ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড় ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৩০০-৩৫০ টাকা, শিং ৪০০-৬০০, কাজলি ও বাতাসি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, আকারভেদে ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে। হাফ কেজির ইলিশ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
এখনো বেশি দামে চিনি বিক্রি
টাইনহলের নিউ হক ভ্যারাইটি স্টোর, মনির স্টোর এবং কারওয়ান বাজারের লক্ষীপুর স্টোর, আ. গনি স্টোরসহ অন্যান্য খুচরা ব্যবসায়ীরা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, শুধু শুনছি চিনির দাম কমেছে কিন্তু আমরা তো পাচ্ছি না। তাই বিক্রিও করতে পারছি না। আবার কোথাও পাওয়া গেলেও ১১৫ টাকার কম বিক্রি করা যাচ্ছে না।
তবে সয়াবিন তেল ১ লিটার ১৮৫ থেকে ১৮৭ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ থেকে ৩৮০ টাকা ও ৫ লিটার ৮৭০ থেকে ৯০৫ টাকা, মসুর ডাল ৯৫ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি, প্যাকেট আটা ২ কেজি ১৩০ টাকা ও খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা, ময়দা ১৫০ টাকা, ছোলা ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম কমের দিকে। প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা কেজি, দেশি আদা ১১০-১৪০ টাকা ও বিদেশি আদা ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
দেশে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কমছে না চালের দাম। আগের মতোই মোটা স্বর্ণা চাল ৪৪ থেকে ৫০ টাকা, ২৮ ও পাইজাম ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন কোম্পানির বস্তার মিনিকেট চালের কেজি ৭২ টাকা থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
কমের দিকে লেবু, বেগুণ, শসার দাম
রমজানের প্রথমে লেবুর হালি ৭০ থেকে ১০০ টাকা হালি বিক্রি হলেও বর্তমানে অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের স্বপন বলেন, বড় লেবুর ডজন ৫০ থেকে টাকা ও ছোটগুলো ৩০ থেকে টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। যা আগে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হতো। কারওয়ান বাজারেও কম দামে লেবু বিক্রি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। রমজানের প্রথমে শসার কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও বর্তমানে কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রমজানে বাজারে চাহিদা কম থাকায় সবজির দামও কিছুটা কমেছে। বেগুন আগে বেশি দামে বিক্রি হলেও বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, পটল ও ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, আলু ২৫-৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০-৪০ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শিমের কেজি ৩৫-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা, মূলা ও পেঁপের কেজি ২০-৩০ টাকা, গাঁজর ৩০-৪০ টাকা বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। তবে সজনার দাম কমে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি, লাল ও পালং শাকের আঁটি ১০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও ধনিয়ার পাতা ১০ থেকে ১৫ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে।
জেডএ/এএস