হুন্ডি বন্ধ করে রেমিট্যান্স বাড়ানোর তাগিদ অর্থনীতিবিদদের
বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা বাড়লেও কমছে রেমিট্যান্স। তাই রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি বন্ধ করতে হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেছেন, প্রতি মাসেই রিজার্ভ কমছে। চলমান সংকটে রিজার্ভ বেশি কমতে দেওয়া ঠিক হবে না। এজন্য রেমিট্যান্স সংগ্রহ বাড়াতে হবে। হুন্ডি বন্ধে কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি আমদানি কমিয়ে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
শনিবার (১২ নভেম্বর) ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট ও বৈদেশিক ঋণ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। এতে আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এম আকাশ এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন ও অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক জিয়া হাসান।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, দেশে খুব বেশি সংকট নেই, তবে সংকটের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য পরিকল্পনামাফিক এগোতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার কমানোর জন্য দেশীয় উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে। যেসব পণ্য আমদানি করা হবে, সেগুলো যেন সঠিকভাবে করা হয়। কারণ নির্বাচনের বছরে দেশ থেকে টাকা পাচার হয় এবং পাচারের মাধ্যম হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে আমদানি ব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, দেশের রেমিট্যান্স আয় কমছে, এটা উদ্বেগজনক। কারণ বিদেশে কর্মী যাওয়া বেড়েছে। বেশি কর্মী যাওয়ার পরও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার যৌক্তিকতা নেই। সেক্ষেত্রে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে বৈধপথে রেমিট্যান্স আনার ব্যবস্থা করতে হবে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী করতে প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে, প্রণোদনাও বাড়ানো যেতে পারে।
পিআরই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো এটা বলা যাবে না। কারণ ধরাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমছে। তবে ভালো খবর হলো আগামী বছরে আমদানি ব্যয় কমবে।
তিনি বলেন, লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি বড় হচ্ছে। এ ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা আগে থেকেই করতে হবে। নতুবা বড় ধরনের সংকট হতে পারে। তার পরিণতি ভালো হবে না। অর্থনীতি নিয়ে নয়ছয় খেলা যাবে না। রিজার্ভের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা দরকার।
তিনি আরও বলেন, বৈধপথে রেমিট্যান্স বাড়ানোর বিষয়ে জোর দিতে হবে। এজন্য নীতি সহায়তা যেমন দরকার, তেমনি হুন্ডি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
মূল প্রবন্ধে জিয়া হাসান বলেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের তুলনায় বৈদেশিক ঋণ অনেক বেশি। পাশাপাশি প্রতিবছর আমদানি বাড়ছে। এতে রিজার্ভের ঝুঁকিও বাড়ছে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে আগামীতে রিজার্ভে চাপ আরও বাড়বে। টাকার মান আরও কমতে পারে। এ অবস্থায় রিজার্ভ বাড়ানো ও এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা জরুরি।
জেডএ/এসজি