ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ সুবিধা পাচ্ছে না: বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশে পর্যাপ্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রয়েছে। কোনো পণ্যের সংকটের আশঙ্কা নেই। তবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, ‘ডলারের মূল্য আর বৃদ্ধি না পেলে বা আন্তর্জাতিক বাজারে আমদানি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি না পেলে দেশেও পণ্যের মূল্য বাড়বে না। গ্যাসের চাপ কম থাকার কারণে চিনি উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স এর ৪র্থ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে চিনির মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চিনির উৎপাদন ও মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে সমস্যা হওয়ার কারণে কানাডা থেকে তুলনামূলক বেশি দামে দেশে গম আদানি করা হয়েছে। সরবরাহ এখন স্বাভাবিক রয়েছে। দেশে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এক কোটি কার্ডের মাধ্যমে দেশের স্বল্প আয়ের প্রায় ৫ কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে প্রতি মাসে তেল, ডাল, চিনিসহ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়া হচ্ছে। এতে করে দেশের একটি বড় জনগোষ্টি উপকৃত হচ্ছে।’
এ মুহূর্তে বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য উঠা-নামা করছে। মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছে না। সরকার দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ, মজুত ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবহারে সকলকে দায়িত্বশীল ও স্বাশ্রয়ী হতে হবে। চলমান বিশ্ব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ডলারের মূল্য আর বৃদ্ধি না পেলে বা আন্তর্জাতিক বাজারে আমদানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি না পেলে, দেশেও পণ্যের মূল্য বাড়বে না। আতঙ্কিত হবার কারণ নেই। দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ, মজুত এবং মূল্য স্বাভাবিক রাখতে কঠর নজরদারি করা হচ্ছে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন জি এম সালেহ উদ্দিন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, দেশ বন্ধু গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী, মেঘনা গ্রুপের ডেপুটি অ্যাডভাইজার মো. শফিউর রহমান, কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কাজী মো. আব্দুল হান্নান। এ ছাড়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেডএ/এমএমএ/