অর্থনৈতিক অঞ্চলে উৎপাদনে যাচ্ছে ১৪ কারখানা
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেছেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে একসঙ্গে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে ১৪ শিল্পের কারখানা। একইসঙ্গে আরও ২৯ কারখানার নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে।
আগামী বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ইজেডে শিল্প-কারখানা ও অবকাঠামোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব তথ্য জানান।
রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে ইআরএফ কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বেজার কার্যক্রম ও অগ্রগতি বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক।
বেজা নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে এই প্রথম ৪টি শিল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, জাপানের নিপ্পন, বাংলাদেশ ম্যাকডোনাল্ড ও টিকে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলেও প্রথম উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ‘ডাবল গ্লেজিংয়ের কারখানা।
এ ছাড়া, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের আরও ৯টি শিল্প ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ পিভিসি কারখানা। বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে ১৪টি শিল্পে ইতোমধ্যে প্রায় ৯৬৭.৭৩মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। আগামীতে ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও ৩৩১.২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়েগের পরিকল্পনা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২৯টি শিল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যাচ্ছেন। এই শিল্পের কারখানা স্থাপনে এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৬১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আরও বিনিয়োগ হবে প্রায় ১৯২২.৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব শিল্পে ইতোমধ্যে ৬৪০৭ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং আরও ৩৮,৬৫৮ জনের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়লেও বেজা খুব অল্প সময়ের মধ্যে উন্নয়ন কার্যক্রম চালু করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২৬ অক্টোবর (বুধবার) ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন-২০২২; অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে বেজা।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জাববে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। বৈশ্বিক কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে আগামী দিনে রূপপুর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে এর সমাধান হবে। এলএনজির দাম বৃদ্ধির কারণে এখন কিছুটা সমস্যা হলেও আগামী দিনে গ্যাস দেওয়া সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এখন খাস জমিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তবে ইজেডে পরিকল্পিত শিল্পায়ন ও শতভাগ কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করেই শিল্প স্থাপন করতে হবে, এ ক্ষেত্রে কোন ছাড় নয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতেই অর্থনৈতিক অঞ্চল দুর্নীতি মুক্ত হবে চুক্তিতে এমন শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী কাজ না হলে বরাদ্দ বাতিল করছে। এখন পর্যন্ত দুটি প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
সভায় মূল প্রবন্ধে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক বলেন, বর্তমানে ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে ২৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বেজার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) হাসান আরিফসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত স্থিত ছিলেন।
জেডএ/এমএমএ/