অবশেষে নির্ধারিত দামের তেল বাজারে
দাম কমার ঘোষণার ১২ দিন পর সব সয়াবিন তেল বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি থেকে আগে দেয়নি কম দামের তেল। তাই বিক্রি করতে পারিনি। তবে সরকার চিনির দাম বৃদ্ধির ঘোষণা করা মাত্র খোলা চিনির দাম ৯০ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকায় বাজারে পাওয়া গেছে।
শীত মৌসুম ঘনিয়ে এলেও কমছে না সবজির দাম। মাছ, মাংস, ডিমও আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি। বিক্রেতারা জানান, এই কয়েকদিনে কোনো জিনিসের দাম তেমন বাড়েনি, কমেওনি।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য জানা গেছে।
কমেনি সবজির দাম
শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। বাজারেও উঠতে শুরু করেছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি। তবে কমেনি সবজির দাম। সবজি বিক্রেতা জসিম ও নুরে আলম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, বাজারে এখনো তেমন শীতের সবজির সরবরাহ বাড়েনি। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বাজারে এসেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস। তাই অন্য সবজির দাম বেশি। করলা ও বেগুনের কেজি ৮০-১০০ টাকা, গাঁজর ও টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে শসার দাম কমে ৪০ টাকা, শিমের দাম কমে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা হয়েছে। পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, কচুরমুখী ৬০ টাকা, লাউ ও চাল কুমড়ার দাম ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ঢেঁড়শ, ধুন্দল, চিচিঙ্গা ও পটল ৫০ থেকে ৬০, কলার হালি ২৫ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। অন্য সবজি বিক্রেতারাও বলছেন শীতের সব সবজি বাজারে না আসলে কমবে না দাম।
আগের দামেই চাল
বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বাজারে চালের দাম কমলেও রাজধানীতে তার প্রভাব পড়েনি। আগের দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ সপ্তাহে কমেনি চালের দাম। টাউন হল বাজারের নোয়াখালী রাইস স্টোরের ইউসুফ ও ইকবাল জেনারেলের মালিক ইকবাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আগের দামেই চাল বিক্রি করা হচ্ছে। দাম কমেনি, বাড়েওনি। মিনিকেট চালের কেজি ৭২ থেকে ৭৫ টাকা, ২৮ চাল থেকে ৫৬-৫৮টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, পাইজাম ৫৫ টাকা কেজি, পোলাও চাল খোলা ১২৫ টাকা ও প্রাণসহ অন্য কোম্পানির প্যাকেট চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
টাউনহলের মনির জেনারেল স্টোরের আনোয়ার হোসেনও ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কোনো চালের দাম কমেনি। তবে এ সপ্তাহ থেকে কম দামের সব তেল পাওয়া যাচ্ছে। সয়াবিন তেল ৫ লিটার ৮৮০ টাকা, ২ লিটার ৩৬০ ও এক লিটার ১৭৮ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ডাল ৯০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি, দুই কেজির প্যাকেট আটা ১১৫ টাকা। পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে আদার দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কমে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
কমেনি মাছ ও মাংসের দাম
কমেনি মাছের দাম। রুই কাতলসহ অন্য মাছ আগের মতোই বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। মাছ বিক্রেতা কামাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রুই-কাতল মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ট্যাংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা বাতাসি মাছ ৮০০ থেকে হাজার টাকা, কই ২৪০ টাকা, পাঙ্গাস ১৬০ বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করায় আগের চেয়ে দাম বেড়ে গেছে। মাছ ব্যবসায়ী মধু জানান এক কেজির ইলিশ চৌদ্দশ টাকা, যা আগে কম ছিলো। এর বেশি ওজনের হলে ১৮০০ থেকে ২০০০ কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
জহির মাংস বিতান ও জনপ্রিয় মাংস বিতানের বিক্রেতারা জানান, মূল্য তালিকায় গরুর মাংস লেখা ৭০০ টাকা কেজি। কিন্তু আগের মতোই কম দামে ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহের মতোই মুরগি বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি। তাজ ব্রয়লার হাউজের কুদ্দুস বলেন, পোল্ট্রি ১৭০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৫০-৫০০ কেজি টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্য ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বাজারে বেশি দাম, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ডিমের ডজন ১৪০
গত সপ্তাহের মতোই ডিম বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি, বাড়েওনি। টাউন হল বাজারের মুন জেনারেল স্টোরের আনোয়ার বলেন, আগের সপ্তাহের মতো ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। তা কমেনি। তবে প্যারাগন কোম্পানির ডিমের ডজনে ১০ টাকা দাম বেশি। তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কম দামে পেলে তখন আগের মতো কম দামেই বিক্রি করতে পারব।
জেডিএ/এসএন