এখনো নতুন দামের সব তেল আসেনি বাজারে
পাঁচ দিন আগে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দিলেও বাজারে সব ধরনের তেল পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি থেকে আমাদের না দিলে কীভাবে বিক্রি করব। পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও এক ও দুই লিটারের তেল এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে সরকার চিনির দাম বাড়িয়ে খোলা চিনির দাম ৯০ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকা ঘোষণা করামাত্র বাজারে তা পাওয়া যাচ্ছে। কারণ আগে থেকেই এই দামে চিনি বাজারে বিক্রি হতো।
অপরদিকে সবজি, মাছ ও মাংস আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি। বিক্রেতারা জানান, বাজারে শীতের সবজি এখনো আসেনি। সরবরাহ কম। তাই কমছে না দাম। চালের দামও কমেনি।
শনিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য জানা গেছে।
আগের মতোই সবজির দাম
সবজি বিক্রেতা জসিম ও নুরে আলম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, বাজারে এখনো তেমন শীতের সবজির সরবরাহ বাড়েনি। সরবরাহ একটু কম, তাই দাম বেশি। করলা ৮০-১০০ টাকা, বেগুনের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গাঁজর ও টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে শসার দাম কমে ৪০- ৮০ টাকা, শিম ১৩০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, কচুরমুখী ৬০ টাকা, লাউ ও চাল কুমড়ার দাম ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ঢেঁড়শ, ধুন্দল, চিচিঙ্গা ও পটল ৫০ থেকে ৬০, কলার হালি ২৫ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
কমেনি চালের দাম
গত সপ্তাহেই প্রায় সব ধরনের চালে এক থেকে দুই টাকা বেড়ে গেছে। এ সপ্তাহেও কমেনি চালের দাম। টাউন হল বাজারের নোয়াখালী রাইস স্টোরের ইউসুফ ও ইকবাল জেনারেলের মালিক ইকবাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আগের দামেই চাল বিক্রি করা হচ্ছে। দাম কমেনি, বাড়েওনি। মিনিকেট ২৫ কেজির বস্তা ১৮৫০ টাকা। মিনিকেট চালের কেজি ৭২ থেকে ৭৫ টাকা, ২৮ চাল থেকে ৫৬-৫৮টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, পাইজাম ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পোলাও চালের দাম কমছে না। খোলা চাল ১২৫ টাকা ও প্রাণসহ অন্য কোম্পানির প্যাকেট চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। মসুর ডাল ৯০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি, দুই কেজির প্যাকেট আটা ১১৫ টাকা। পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে আদার দাম বেড়ে ১৪০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
টাউনহলের মনির জেনারেল স্টোরের আনোয়ার হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কম দামের সয়াবিন তেল ৫ লিটার পাওয়া গেছে। তা ৮৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু ২ লিটার ও এক লিটার পাওয়া যায়নি। কোম্পানি থেকে শুধু বলছে আসবে। তাই আগের রেটের দুই লিটার ৩৮০ টাকা ও ১ লিটার ১৮০-১৯০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের মতোই মাছ, মাংসের দাম
রুই কাতলসহ অন্য মাছ আগের মতোই বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। মাছ বিক্রেতা কামাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রুই-কাতল মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ট্যাংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বাতাসি মাছ ৮০০ থেকে হাজার টাকা, কই ২৪০ টাকা, পাঙ্গাস ১৬০ বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করায় আগের চেয়ে দাম বেড়ে গেছে। মাছ ব্যবসায়ী মধু জানান এক কেজির ইলিশ ১৪০০ টাকা, যা আগে কম ছিল। এর বেশি ওজনের হলে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
জহির মাংস বিতান ও জনপ্রিয় মাংস বিতানের বিক্রেতারা জানান, মূল্য তালিকায় গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি। কিন্তু আগের মতোই ৬৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহের মতোই মুরগির দাম। তাজ ব্রয়লার হাউজের কুদ্দুস বলেন, পোল্ট্রি ১৭০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৫০-৫০০ কেজি টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বাজারে বেশি দাম, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ডিমের ডজন ১৪০
গত সপ্তাহের মতোই ডিম বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। কমেনি, বাড়েনি। টাউন হল বাজারের মুন জেনারেল স্টোরের আনোয়ার বলেন, আগের সপ্তাহের মতো ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। তা কমেনি। তবে প্যারাগন কোম্পানির ডিমের ডজনে ১০ টাকা দাম বেশি। তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
জেডএ/এসএন