অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য ডিমের বাজার অস্থির: এফবিসিসিআই সভাপতি
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, ‘গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য সম্প্রতি ডিমের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য পুরো ব্যবসায়ী সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসায়ীদের ইমেজ রক্ষায় অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করতে হবে।’
শনিবার (১ অক্টোবর) এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটি অন লাইভস্টক, পোলট্রি অ্যান্ড ফিশারিজের প্রথম সভায় তিনি এসব দাবি কমিটির সদস্যদের কাছে।
এ সময় বক্তারা বলেন, সরকারের নীতি সহায়তা পেলে বর্তমান বাজার দরের চেয়ে অনেক কম দামে ভোক্তাদের কাছে মাংস, ডিম ও দুধ সরবরাহ করা সম্ভব। এ জন্য গবাদি পশু, পোল্ট্রি ও মাছের খামারিদের কৃষিখাতের মতো একই ধরনের নীতি সহায়তা দাবি করেছেন এসব খাতের উদ্যোক্তারা।
তারা আরও বলেন, পোলট্রি, গরুর খামার, মাছ ও চিংড়ি চাষে বাণিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়। এতে উৎপাদন ও পরিচালন ব্যয় বাড়ছে। কৃষিখাতের মতো ভর্তুকি মূল্যে বিদ্যুৎ পেলে সাশ্রয়ী মুল্যে ভোক্তাদের প্রোটিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
সভায় মো. জসিম উদ্দিন বলেন, গরু, মুরগি, মাছ ও চিংড়ির খামারে সরকারি সেবার মূল্য বিশেষায়িত হারে হওয়া উচিত। এতে নতুন উদ্যোক্তারা এ খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহীত হবেন। ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হতে হলে বাংলাদেশকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে হবে। শুধু তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভর করে এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়।
এ জন্য মাছ, চিংড়ি ও মাংসকে রপ্তানি খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাই এসব খাতে সরকারি নীতি সহায়তা জরুরি। একইসঙ্গে এসব খাতকে পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্রে রূপান্তর করতে হবে। প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্য দাম নিশ্চিতে লজিস্টিকস ও সরবরাহ শৃঙ্খলা নিয়ে কাজ করতে কমিটিকে পরামর্শ দেন তিনি।
এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি সালাহউদ্দীন আলমগীর বলেন, কৃষিঋণের মতোই বাংলাদেশ ব্যাংককে লাইভস্টক খাতে ৫ শতাংশ ঋণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা উচিত। এ খাতে আমদানির ক্ষেত্রে ডলার মূল্য ১০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবিও জানান তিনি। খামারিদের সুরক্ষা দিতে স্বল্পহারের প্রিমিয়ামে বিমা সুবিধা চালুর সুপারিশও করেন সহ-সভাপতি।
কমিটির চেয়ারম্যান ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এর নির্বাহী সদস্য মো. মশিউর রহমান জানান, সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই দেশের গবাদি পশু ও পোলট্রি খামারের বিভিন্ন মান তদারিক করে থাকে। দুই সংস্থার মধ্যে সমন্বয় না থাকায় খামারিদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। যা এ খাতের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। সরকারি সংস্থাগুলোর আন্তঃসমন্বয় জোরদার করা দরকার। এ ছাড়াও খামারের শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেন মো. মশিউর রহমান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, এম.জি.আর নাসির মজুমদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, আবু মোতালেব, মোহাম্মদ ইকবাল শাহরিয়ার, মোহাম্মেদ বজলুর রহমান, তাবারুকুল তোসাদ্দেক হোসাইন খান টিটো, মোহাম্মদ নাসের, আবু হোসাইন ভুঁইয়া (রানু), মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ইমরান হোসাইন ও মো. মাহমুদুল আলম।
জেডএ/এমএমএ/