এখনো কমেনি চিনির দাম
জ্বালানি তেলের অজুহাতে প্রায় সব জিনিসের দাম বেড়েছে। এরপর আর কমেনি কোনো কিছুরই দাম। সবজি, মাছ, মাংস আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি। সরকার খোলা চিনির দাম ৮৪ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে এখনো আগের মতোই ৯০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ৯৫ থেকে ১১৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। সরকার শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিলেও চালের দাম কমেনি। গত সপ্তাহের দামেই চাল বিক্রি করা হচ্ছে।
শনিবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে সরজমিনে খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমনই জানা গেছে। বিক্রেতারা জানান, বাজারে শীতের সবজি এখনো আসেনি। সরবরাহ কম। তাই কমছে না দাম।
কমেনি সাবজির দাম
সবজি বিক্রেতা জসিম ও নুরে আলম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, বাজারে এখনো তেমন শীতের সবজির সরবরাহ বাড়েনি। সরবরাহ একটু কম, তাই দাম বেশি। করলা ৮০-১০০ টাকা, বেগুনের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গাঁজর ও টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১২০ টাকা, শিম ১৩০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, কচুরমুখী ৬০ টাকা, লাউ ও চাল কুমড়ার দাম ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ঢেঁড়শ, ধুন্দল, চিচিঙ্গা ও পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, কলার হালি ২৫ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের দামেই চাল বিক্রি
টাউনহলের মনির জেনারেল স্টোরের আনোয়ার হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, সয়াবিন তেল একটু কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে, ৫ লিটার ৯২০ টাকা, ২ লিটার ৩৮০ টাকা ও ১ লিটার ১৯০ টাকা, মসুর ডাল ৯০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি, দুই কেজির প্যাকেট আটা ১১৫ টাকা। পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে আদার দাম বেড়ে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
ভারত সরকার চালের উপর বেশি শুল্ক আরোপ করায় দুই সপ্তাহ থেকে প্রায় সব ধরনের চালে এক থেকে দুই টাকা বেড়ে গেছে। এ সপ্তাহেও তা কমেনি চালের দাম।
টাউন হল বাজারের নোয়াখালী রাইস স্টোরের ইউসুফ ও ইকবাল জেনারেলের মালিক ইকবাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আগের দামেই চাল বিক্রি করা হচ্ছে। দাম কমেনি, বাড়েওনি। মিনিকেট ২৫ কেজির বস্তা ১৮৫০ টাকা। মিনিকেট চালের কেজি ৭২ থেকে ৭৫ টাকা, ২৮ চাল থেকে ৫৬-৫৮টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, পাইজাম ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পোলাও চালের দাম কমছে না। খোলা চাল ১২৫ টাকা ও প্রাণসহ অন্য কোম্পানির প্যাকেট চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
কমের দিকে ইলিশ
ইলিশের ভরা মৌসুম হওয়ায় একটু দাম কমেছে আগের চেয়ে। মধু জানান এক কেজির ইলিশ বারশ টাকা, যা আগে বেশি ছিলো। এর বেশি ওজনের হলে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা, আর ছোটগুলো ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে ইলিশ মাছের কারণে রুই-কাতলসহ অন্য মাছের কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমেছে বলে বিক্রেতারা জানান। মাছ বিক্রেতা কামাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আগে যে রুই-কাতল মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা বিক্রি করা হতো এখন সেটা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। বিক্রেতারা বলেন, ট্যাংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা বাতাসি মাছ ৮০০ থেকে হাজার টাকা, কই ২৪০ টাকা, পাঙ্গাস ১৬০ বিক্রি করা হচ্ছে।
এখনো ডিমের ডজন ১৪০
সরকারের কড়াকড়িতে দুই সপ্তাহ আগে ডিমের দাম কমে যায়। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে আবার বেড়েছে। টাউন হল বাজারের মুন জেনারেল স্টোরের আনোয়ার বলেন, ‘ডিমের দাম বেড়েই যাচ্ছে। আগের সপ্তাহে ডজনে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। তা কমেনি। তবে প্যারাগন কোম্পানির ডিমের ডজনে ১০ টাকা দাম বেশি। তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
জহির মাংস বিতান ও জনপ্রিয় মাংস বিতানের বিক্রেতারা জানান, মূল্য তালিকায় গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি। কিন্তু আগের মতোই কম দামে ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে গত সপ্তাহে পাকিস্তানি মুরগির কেজিতে ২০ টাকা বৃদ্ধির পর তা আর কমছে না। তাজ ব্রয়লার হাউজের কুদ্দুস বলেন, পোল্ট্রি ১৭০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৫০-৫০০ কেজি টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্য মুরগির ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বাজারে বেশি দাম, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
জেডএ/এসএন