তামাক আইন সংশোধনে বিভ্রান্ত করছে তামাক কোম্পানি
তামাকের কারণে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নানামুখী পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে।
সোমবার (২২ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা) ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে মতবিনিময় সভা বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গণমাধ্যমের সঙ্গে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন ও সংশোধনের বর্তমান অবস্থা ও করণীয় বিষয়ক’ এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের (বাটা) উপদেষ্টা আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান।
আলোচনায় অংশ নেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের কান্ট্রি ম্যানেজার নাসির উদ্দিন শেখ, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বিল্লাল হোসেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী এবং ডিআরইউ এর তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক কামাল মোশারেফ।
সভায় আলোচকরা বলেন, তামাক কোম্পানি আইনটি প্রণয়নের পর থেকেই বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বর্তমানে কোম্পানিগুলোর আইন সংশোধন বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। শুধুমাত্র আইন সংশোধন নয়, তামাক নিয়ন্ত্রণের স্বপক্ষে প্রায় সকল নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রেই তামাক কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপের দৃষ্টান্ত দৃশ্যমান। অতি সম্প্রতি স্থানীয় সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রন আইন বাস্তবায়ন নির্দেশিকা স্থগিত করার প্রচেষ্টা, তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধিতে হস্তক্ষেপ, আইন সংশোধন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
বক্তারা আরও বলেন, ‘কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ হলে দরিদ্ররা ক্ষতিগ্রস্থ হবে, সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাবে’- এ ধরনের বিভ্রান্তকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দ্রুত তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার ও সব ধরনের রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের তালিকা থেকে তামাক কোম্পানির নাম বাদ দেওয়ার দাবি জানান বক্তারা।
জেডএ/এসজি