জ্বালানির তাপে গরম ভোগ্যপণ্যের বাজার
জ্বালানির দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যে। আটা, ময়দা ও চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। যদিও কাঁচা মরিচের ঝাঁজ বেড়েছে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই। এ ছাড়া বেড়েছে সবজি ও মাছের দামও। শনিবার থেকে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি শুরু হয়ে গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে পরিবহন খরচও। আর এ কারণে প্রভাব পড়েছে সব পণ্যের উপর। রবিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউনহল মার্কেট, কৃষি মার্কেট ও কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন পণ্যের খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রভাব কী বাজারে শুরু হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে টাউন হলমারকেটের মেসার্স সরকার ট্রেডার্সের নুরুল আমিন ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, গতকাল আটা ৪২ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে তা আজ ৪৫ টাকা। ময়দা ৫৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮ টাকা হয়ে গেছে। চিনির দামও বেড়ে ৮০ টাকা থেকে ৮৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি জানান, তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে মালিকরা আমাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি শুরু করেছে। তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে মাছের বাজারও গরম হয়ে গেছে। মাছ বিক্রেতা মুক্তার হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে। তাই মাছের দাম বাড়তি। ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি কাজলি, ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা চিংড়ি, কাচকি ৭০০, বাইম ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। আর রুই, কাতলা ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা করে কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
অন্যান্য মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেহেতু তেলের দাম বেড়েছে তাই মাছের বাজার চড়া হবে। এটা স্বাভাবিক সরকারের তা ভেবে দেখা দরকার।
এদিকে সবজিও ঢাকার বাইরে থেকে আসে। তাই তেলের বাড়তি দামের কারণে সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। টাউনহল বাজারের সবজি বিক্রেতা কাদের ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা। আর শিমের কেজি ২৭০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে আব্দুল বাতেন বলেন, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আজ তেমন না বাড়লেও কালকে থেকে পরিবহন খরচের কারণে প্রায় পণ্যের দাম কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে যাবে।
এদিকে চালের বাজারেও নেই কোনো সুখবর। আমদানির কারণে কিছুটা ক্ষমার আসা জাগলেও তেলের বাড়তি দামের কারণে আগের মতোই মিনিকেট ৬৭ থেকে ৭০ টাকা কেজি, ২৮ চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা ও মোটি চাল ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
কৃষি মার্কেটের শাপলা রাইস এজেন্সির মাইনুদ্দিন বলেন, আর চালের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। শুল্ক কমানোর কারণে আমদানি চাল বাজারে আসা শুরু হয়েছে। কিন্তু পরিবহন খরচ সেটাকে উস্কে দিল। তাই চালের দাম আর কমবে না। মাছ-মাংসের দামও একটু চড়া।
কারওয়ানবাজারের জনপ্রিয় পোল্ট্রি হাউসের সাইফুদ্দিন বলেন, পাকিস্তানি মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি, দেশিটা ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
বিসমিল্লাহ মাংসের জাবেদ বলেন, খাসির মাংস ৯০০ থেকে হাজার টাকা কেজি।
এ বাজারের গরুর মাংস ব্যবসায়ী আলম বলেন, ৬৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। ডিম আগের মতো ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আজকাল থেকে আরও দাম বাড়বে বলে বিক্রেতারা জানান।
উল্লেখ্য সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এরমধ্যে কেরোসিন ও ডিজেলের লিটার করা হয়েছে ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা লিটার ভোক্তদের কাছে বিক্রি করা শুরু হয়েছে।
জেডএ/এসএন