রেকর্ড রেমিট্যান্স জুলাইয়ে
গত ১৫ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে জুলাই মাসে। এ মাসে প্রবাসীরা ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার (২.১ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৯ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা।
সোমবার (১ আগস্ট) রেমিট্যান্সের উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে গত এপ্রিল মাসে ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের বেশি রেকর্ড রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বিভিন্ন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে।
সরকারও রেমিট্যান্সের প্রণোদনা বাড়ানোর পাশাপাশি নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এখন ডলারের রেটও বেশি পাচ্ছে। এ ছাড়া গত মাসে ঈদুল আজহা ছিল, প্রবাসীরা পরিবারের ঈদ উৎসব সুন্দরভাবে উদযাপনের জন্য অর্থ পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদেনে দেখা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরের জুনে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন এক হাজার ৮৩৭ মিলিয়ন (১৮৩ কোটি ৭২ লাখ) ডলার, মে মাসে এক হাজার ৮৮৫ মিলিয়ন (১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ) ডলার, এপ্রিলে ২ হাজার ১০ মিলিয়ন (২০১ কোটি) ডলার।
এভাবে প্রতি মাসে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে দেশে ২০২০-২১ অর্থবছরের মে মাসে ২ হাজার ১৭১ বিলিয়ন (২১৭ কোটি ১০ লাখ ) ডলার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার রেমিট্যান্সে প্রণোদনা ২ থেকে আড়াই শতাংশ ঘোষণা করায় প্রবাসীরা দেশে বৈধপথে বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠাতে থাকেন।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতি কিছুটা কমতে থাকায় হুন্ডিপথে প্রবাসীরা দেশে প্রবাসী আয় পাঠাতে শুরু করে। এ জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলে কমতে থাকে প্রবাসী আয়।
গত অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তবে শেষ মাস জুনে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে মন্দা দেখা দেয়। এভাবে পুরো (২০২১-২২) অর্থবছরে তারা দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি (২১.০৩ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন।
আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো এই দরে ডলার কিনেছে। তবে ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যাংকগুলো ১০৪/১০৫ টাকা দরে প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার সংগ্রহ করেছে। কোনো প্রবাসী এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে ১ ডলার দেশে পাঠালে ১০৫ টাকার সঙ্গে নগদ প্রণোদনার ২ টাকা ৫০ পয়সা যুক্ত হয়ে ১০৭টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন। কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারের ডলারের দরও একই। বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডলার।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ডলারের দাম বাড়িয়ে যেসব মানি চেঞ্জার ও ব্যাংক অন্যায্য মুনাফা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের কারসাজি রোধে অভিযান শুরু হয়েছে যা অব্যাহত থাকবে।’
জেডএ/এমএমএ/