প্রাণের পোলাওয়ের চালে আগুন!
প্রতি বছরই কোরবানির ঈদে মসলা, তেল ও পোলাওয়ের চালের চাহিদা বাড়ে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে এবার সয়াবিন তেল ও বিভিন্ন জাতের মসলার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু বেড়েছে পোলাওয়ের চালের দাম।
বিশেষ করে বাজারে মোড়কজাত পোলাওয়ের চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় প্রত্যেক কোম্পানি তাদের পোলাওয়ের চালের দাম বাড়িয়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। কিছুদিন আগেও প্যাকেট জাত বিভিন্ন কোম্পানির পোলাওয়ের চাল যেখানে বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত, সেই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। এক্ষেত্রে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে প্রাণ কোম্পানি। তারা প্রতি কেজি মোড়কজাত পোলাওয়ের চাল বিক্রি করছে ১৫০ টাকায়।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাজধানীর কৃষিমার্কেট, কারওয়ান বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বাজারে জোরালো মনিটরিং না থাকায় মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা মানুষের পকেট কেটে নিচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, এরফান, রুপচাদা, এসিআই, আকিজ গ্রুপের প্যাকেট চালের কেজি ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রাণ চিনিগুড়া চাল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদে অন্যান্য চালের তুলনায় পোলাওয়ের চালের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এবার অনেক বেশি বেড়েছে। আগে পোলাওয়ের চাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। কিন্তু এবার সেই চাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হচ্ছে। আর একই চাল প্যাকেটজাত করে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের আব্দুর রব স্টোরের নাইম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘ঈদে তেলের দাম বাড়েনি। সরকার নির্ধারিত ১ লিটার ১৯৮ টাকা, ২ লিটার ৩৯০ ও ৫ লিটার ৯৭০ টাকা ও খোলা তেল ১৮০ টাকা লিটার বিক্রি করা হচ্ছে। মসলাও কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদে মসলার দাম বাড়েনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এবার পোলাওয়ের চালের দাম অনেক বেশি। খোলা পোলাওয়ের চাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও প্রাণ চিনিগুড়া প্যাকেট চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে অন্য কোম্পানির চাল ১৩০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।’
কিন্তু প্রাণের মোড়কজাত পোলাওয়ের চালের দাম এত কেন? বিষয়টি নিয়ে প্রাণের পরিচালক কামাল কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাতে ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, দেখেন, বাজারে যে খোলা পোলাওয়ের চাল বিক্রি হয় সেগুলো মানসম্পন্ন নয়। দেখবেন অনেক ভাঙা চালও আছে। কিন্তু আমাদের চালে কোনো রকম ভাঙা পাবেন না। কোয়ালিটি ভালো।
তাই বলে ১৫০ টাকা? এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল বলেন, ধানের দাম বেড়েছে। তাই চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। পোলাও ধানের দাম বেড়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ বেড়েছে। এ কারণেই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাশেম জানান, ‘এরফান, মোজাম্মেল প্যাকেট চাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। গত বছর এই চাল অনেক কম দামে বিক্রি করা হয়েছে।’
একই বাজারের মায়ের দোয়া স্টোর ও নিউ হাজি মিজান স্টোরের বিক্রেতারা জানান, আগের চেয়ে কম দামে মসলা বিক্রি করা হচ্ছে। অ্যালাচের কেজি ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা, লবঙ্গ ১১৫০, দারুচিনি ৪২০, জিরা ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেটের সিটি এন্টার প্রাইজের আবু তাহের জানান, ‘আগের বছর কম দামেই পোলাওয়ের চাল বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু এবার সেই প্যাকেট চাল রুপচাঁদা ১৩০ ও এরফান ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। মসলাও আগের দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদ ঘনিয়ে আসলেও বাড়েনি দাম। সয়াবিন তেল চাহিদার তুলনায় বেশি বাজারে। ৫ লিটার ৯৬০ থেকে ৯৮০ টাকা, এক লিটার ১৯৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
একই মার্কেটের সাপলা রাইস এজেন্সির মাঈন উদ্দিন জানান, ‘সাগর অটো রাইস মিলের পোলাওয়ের চাল ১০৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। একটু দূরেই ১১৫ টাকা কেজি ধরে পোলাওয়ের চাল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
জেডএ/এসজি/