বাণিজ্য ঘাটতি তিন হাজার কোটি ডলারের বেশি
করোনার ধকল না কাটতেই ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের মধ্যে দেশে রপ্তানি আয় রেকর্ড পরিমান বাড়ছে। এরচেয়েও আমদানি বেশি হচ্ছে দেশে। তাই বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে। বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই থেকে মে) এই বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮১ কোটি ডলার।
সোমবার (৪ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই আমদানি বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। এ কারণে আমদানি-রপ্তানি ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে। এ মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ আমদানির লাগাম টেনে ধরা। তাই আমদানি ব্যয় কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বলে ঢাকাপ্রকাশকে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৮০ বিলিয়ন আমদানি হয়। রপ্তানি হয় ৫০ বিলিয়ন। তাহলেও ঘাটতি তো হবেই। এ জন্য বিলাসী পণ্যের এলসিতে ঋণ মার্জিন ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮১ কোটি ডলার। যা আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে (প্রথম ১১ মাস) ছিল ২ হাজার ৭০ কোটি ডলার। আর গত অর্থবছরের পুরো সময়ে (১২ মাস) বাণিজ্য ঘাটতি ছিল দুই হাজার ২৮০ কোটি ডলার।
২০২১-২০২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেড়েছে ৩৯ দশমিক ০৩ শতাংশ। আলোচিত সময়ে রপ্তানি থেকে দেশ আয় করেছে ৪ হাজার ৪৫৮ কোটি ডলার। আর পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় করেছে ৭ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিয়ে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৮১ কোটি ডলার।
এদিকে গত ১১ মাসে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। ওই সময়ে সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৮৮১ কোটি ডলার। একই সময়ে সেবা খাতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৩৪ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিয়ে সেবাখাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৫২ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরের (২০২০-২০২১) একই সময়ে ছিল ২৫৩ কোটি ডলার। চলতি হিসাব ভারসাম্যে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) বড় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে এ ঘাটতির (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭২৩ কোটি ডলার। যা তার আগের অর্থবছরে (২০২০-২০২১) একই সময়ে ছিল ২৭৮ কোটি ডলার।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যেভাবে বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে খুব শিগগিরই ব্যালান্স কাছাকাছি চলে আসবে।
জেডেএ/