ঈদের আগে স্থিতিশীল মসলার বাজার
১০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে বর্তমানে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কোরবানি ঈদের বাকি আট দিন। দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। তাই আর নাও বাড়তে পারে দাম। সয়াবিন তেলও আগের চেয়ে লিটারে ৬ টাকা কমে লিটার ১৯৯ টাকা ও ৫ লিটার ৯৮০ টাকা, আদা, রসুনও আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরা, লবঙ্গ, এলাচ, দারুচিনি, হলুদও আগের দামে বিক্রি বিক্রি হচ্ছে। দেশে পর্যাপ্ত মসলার মজুদ থাকায় দাম তেমন বাড়বে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এসব তথ্য জানান। সরকারি সংস্থা টিসিবিও বলছে বিভিন্ন মসলার দাম তেমন বাড়েনি। বরং কিছু কিছু মসলার দাম কমেছে সপ্তাহের ব্যবধানে।
কারওয়ান বাজারের আলী স্টোরের মো. আলী ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, ‘যা বাড়ার আগেই বেড়েছে। ঈদকে সামনে রেখে এ মুহুর্তে মসলার দাম বাড়েনি। আগের দামেই বিভিন্ন মসলা বিক্রি করা হচ্ছে। লবঙ্গর কেজি ১২০০, গোলমরিচ ৭০০, এলাচ ১৮০০, জিরা ৪৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ‘এবার বেশি মজুদ রয়েছে এসব মসলা। এ সব কথা শুনতে পাচ্ছি। এ জন্য ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়েনি দাম। অন্যদিকে ইয়াসিন স্টোরের মালিক জসিমও বলেন, ‘জিরা ৪১০ টাকা কেজি, ধনিয়া ১৪০, দারুচিনি ৪৮০ টাকা, অ্যালাচ ১৮৫০ টাকা, লবঙ্গ ১১০০ কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
শীর্ষ ব্যবসায়ীরা জানান, কোন উৎসব আসলেই দেশে বেড়ে যায় পণ্যের দাম। এটা ঠিক না। বিদেশে কমলে আমরা কেন পাব না। এ নিয়ে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় ঈদে যাতে এবার মসলার বাজার গরম না হয়। সংগঠনের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন মসলা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, সবাই জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আপনারা কি করবেন? তখন মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘পাইকারি বাজারে আমরা মসলার দাম বাড়াইনি। আমরা কথা দিচ্ছি এবার বাড়ানো হবে না মসলার দাম। বাজার স্থিতিশীল রাখা হবে।
সেই ধারা তারা অব্যাহত রেখেছেন বলে মসলা ব্যবসায়ীরা জানান। তারা বলছেন, এসব মসলার সবই আমদানি করা। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। তারপরও সরবরাহ বেশি থাকায় এবার ঈদে বাড়েনি মসলার দাম। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার দাম বাড়েনি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রতিদিন বাজার যাচাই করে বাজারের তথ্য প্রকাশ করে। সেই তথ্যই বলছে,এক মাসের ব্যবধানে বাড়েনি মসলার দাম। এক মাস আগের ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজির জিরা শনিবার ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, ২০০০ টাকা কেজির অ্যালাচ ১৮০০ টাকা, ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার দারুচিনি ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা,
রাজধানীতে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে। একই পেঁয়াজ এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি।
তবে কিছু মসলার দাম বেড়েছে। যেমন ১৬০ থেকে ২০০ টাকার হলুদ ১৮০ থেকে ২৪০ টাকা, ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় হঠাৎ সরবরাহ কমেছে। এ কারণে দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। পরিকল্পিতভাবে ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। কারণ এসময় পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে। আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা কেজি। যা আগের সপ্তাহে ৬০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। আমদানি করা শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ থেকে ৩৯০ টাকা কেজি। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩৬০ টাকা ৩৮০ টাকা কেজি।
জেডএ/এএস