বৃহস্পতিবারের বাজারদর
শসার কেজি ১৫ টাকা
রমজান মাসের প্রথম দিনে বাজারে হঠাৎ করে বেগুন, মরিচ, শসার কেজি ও লেবুর ডজন ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেলেও বর্তমানে কমতে শুরু করেছে এসব পণ্যের দাম। ১৯ রমজানে অনেক কমে শসার কেজি ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের সপ্তাহের মতোই মরিচ ৪০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বেগুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা ও লেবুর ডজন ৩০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। আলু, পেঁয়াজ, চাল, ডাল, আদা, রসুন, ভোজ্যতেল, চিনি, মাছ, মাংস ও ডিমের দামও আগের সপ্তাহের মতোই রয়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, রমজান মাস শেষের দিকে আসছে। ক্রেতারা এখন হিসেব করে বাজার করছেন। তাই চাহিদা কমতে শুরু করেছে। আর ক্রেতারা বলছেন, প্রথমে অনেক দাম বাড়লেও বর্তমানে রোজার আগের অবস্থায় চলে এসেছে বিভিন্ন পণ্যের দাম। একটু স্বস্তি ফিরে এসেছে বাজারে।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে বিভিন্ন পণ্যের দামের এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
আগের দামেই পেঁয়াজ
দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ায় পেঁয়াজের দাম বেশ কম। রমজান মাসে চাহিদা অনেক বাড়লেও এর দাম কমছে। আগের সপ্তাহের মতো ২৬ থেকে ৩০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। মেসার্স মাতৃ ভান্ডারের কালাম শেখ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আদার দামও কমে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ৬০ থেকে ১২০ কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
এছাড়া আগের মতোই আড়তে ১৩ থেকে ১৬ টাকা কেজি আলু। খুচরায় ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, টমেটোর দাম কমে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বেগুনের দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকা, শসার কেজি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, গাঁজর ৩০ টাকা, শাকের আঁটি ৮ থেকে ১০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস বিক্রি করা হচ্ছে।
একইভাবে মরিচের দাম কমে বর্তমানে ৪০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছে বিক্রেতারা। করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০, সজনে ডাঁটা ৬০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
চালের দাম কমেনি
বোরো ধান এখনো উঠেনি ক্ষেত থেকে। তাই এখনো কমেনি চালের দাম। তবে কয়েক দিনের মধ্যে নতুন ধান উঠলে চালের দাম কমবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। বর্তমানে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। কারওয়ান বাজারের কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাসেম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘আগের সপ্তাহের মতো মিনিকেট ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা কেজি, বিআর-২৮ চাল ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, পারিজা ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’
আগের দামে ভোজ্যতেল
সরকারের ভ্যাট কমানো ও বাজার মনিটরিংয়ের প্রভাবে সয়াবিন তেলের দাম আগের মতোই। তবে মিলমালিকরা আবার দাম বাড়ানোর সুযোগ নিচ্ছে। হাজী মিজান এন্টারপ্রাইজের মালিক মিজান বলেন, ‘আগের প্যাকেটজাত এক লিটার তেল ১৫৮ টাকা, ২ লিটার ৩১৫ টাকা, ৫ লিটার ৭৫০ থেকে ৭৬০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে । তিনি আরও বলেন, ‘রজমানের প্রথমে ছোলার কেজি ৭৫ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ৭০ টাকা, ১০০ থেকে ১২৫ টাকার মসুর ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা। চিনির কেজি ৭৮ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থিতিশীল মাছের দাম
আগের সপ্তাহের মতোই বর্তমানে মাছের বাজার স্থিতিশীল বলে বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আবু বকর বলেন, ‘আকারভেদে রুই ও কাতলা ২০০ থেকে ৪৩০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকারভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের শিং মাছ কেজি ৩০০ টাকা, দেশি শিং ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা ও দেশি ৫০০ টাকা, দেশি শোল মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা, কাচকি ৫০০, বাতাসি ৪৫০ কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে বৈশাখের ঝাঁজ কমলেও আগের মতো ছোট ইলিশ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি বড়টা ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা কেজি। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থিতিশীল গরু-খাসির মাংস ও ডিমের দাম
আগের সপ্তাহের মতোই গরুর মাংস ৬৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৫০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। জনপ্রিয় মাংস বিতানের নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আগের সপ্তাহের মতো ব্রয়লার ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি কর্ক ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আর আগের সপ্তাহের মতোই ডিমের ডজন ৯৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
জেডএ/আরএ/