আড়তের ১২ টাকার আলু খুচরায় ২০ টাকা
প্রতিকেজি আলু ১০ টাকা দরে নেওয়ার মানুষ নেই, আবার কোল্ড স্টোরেজেও রাখতে পারছেন না কৃষকরা। ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন কৃষকের এই হচ্ছে চিত্র। সেই আলু কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন আড়তে ১২ থেকে ১৩ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। একটু দূরে তা পাইকারিতে ৮০ টাকা পাল্লা বা ১৬ টাকা কেজি। একই বাজারে তা খুচরা পর্যায়ে ২০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
অপরদিকে, পেঁয়াজের কেজিও পাইকারিতে ২৩ থেকে ২৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তা একটু দূরেই খুচরা পর্যায়ে ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) ও মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারে বেশি করে আলু উৎপাদন হয়েছে। আবার নতুন আলু উঠার আগে আগের বছরের পুরাতন আলুই বিক্রি হয়নি। ফলে নতুন আলুতে বড় ধাক্কা লাগে। জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার মেদনী সাগরের মামুন বলেন, ‘প্রথম থেকে আলু কেজি ১০ টাকার নিচে থাকে। উৎপাদন খরচই উঠে না। এরফলে অনেক কৃষক ক্ষেতে আলু রেখে দেয়। কেউ ক্ষেত থেকে তুললেও ১০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করতে পারছে না। আবার অনেকে কোল্ড স্টোরেজে খরচ করে আলু রাখতে যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেকে রাজধানীতে পাঠাচ্ছে আলু।’
সেই আলু রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ টাকা কেজি। যা খুচরা বাজারে ২০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
আলুর দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের বিক্রমপুর বাণিজ্যালয়ের আলুর আড়তের হানিফ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন. ‘এক এর (ভালো মানের) আলু হলে ৬৫ টাকা পাল্লা বা ১৩ টাকা কেজি ও একটু কম মানের হলে ৬০ টাকা পাল্লা বা ১২ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। খুবই খারাপ বাজার আলুর। কখনো এমন হয়নি। কৃষকরা একেবারে মরে যাচ্ছে। কারণ প্রতি বস্তা ঢাকাতে পাঠাতে কৃষকের ২০০ টাকা খরচ আছে। এভাবে চলতে থাকলে সবাই আলুর চাষ একেবারে বন্ধ করে দেবে।’
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সরকার চাইলে আলুর দাম বাড়াতে পারে। রপ্তানি করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলের আলুর চাহিদা বাড়বে। এর ফলে দামও বাড়বে।’
এদিকে আলুর মতোই আড়তে পেঁয়াজের বাজার দেখা গেছে। মেসার্স মাতৃ ভান্ডারের মো. কালাম শেখ বলেন, ‘একেবারে ভালো রাজশাহী, পাবনার পেঁয়াজ আড়তে ২৩ থেকে ২৪ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে অন্য এলাকারটা একটু কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘এখনো পুরোপুরি উঠা শেষ হয়নি। আরও কমতে পারে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রমজানেও বাড়েনি পেঁয়াজের দাম’।
পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। শরিফ বলেন, পাল্লা নিলে ১৩০ টাকা দেওয়া যাবে। আগের চেয়ে কম দামেই বিক্রি করা হচ্ছে।
রমজান মাসের প্রথমই দিনেই বেগুন, শসা ও মরিচের কেজি ১০০ টাকা হয়ে যায় বাজারে। আর লেবুর ডজনও সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে যায়। হঠাৎ এ সব পণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠলে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর কয়েকদিন পর অভিযানে নামে। এতে বেগুনের কেজি ৬০ টাকায় নেমে আসে। বর্তমানে সেই বেগুনের দাম আবার বেড়ে খুচরা বিক্রেতারা ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। মরিচের কেজি কমে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে শসার কেজি আগের চেয়ে অনেক কমে বর্তমানে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
জেডএ/আরএ/