কালো টাকা সাদা করা গ্রহণযোগ্য নয়: সিপিডি
বাজেটে কালো টাকা সাদা করা নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবার অর্থনৈতিকভাবেও যৌক্তিক নয়; বলেছেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান।
২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সুপারিশ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ধানমন্ডীতে সিপিডির সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
অনেক উন্নয়ন করলেও বর্তমানে শ্রীলঙ্কার অবস্থা খুবই শোচনীয়। বাংলাদেশ কোন পথে? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ' শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা কোনো কারণ নেই। তবে শিক্ষনীয়। কারণ শ্রীলঙ্কা এক দিনে এ পর্যায়ে আসেনি। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু আউটপুট আসেনি। ফলে রাজস্ব সংকটে পড়ে। আমাদেরও বড় বড় প্রকল্পে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সময় মতো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এতে ব্যয় বাড়ছে। ঋণের চাপও বাড়ছে। তাই পুরাতন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ ঠিক রাখতে হবে। বাজেটে নতুন প্রকল্পে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এখান থেকে টাকা বাঁচলে রাজস্ব বাজেটে ব্যয় করা যাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'উন্নয়নের নামে টাকা পাচার হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার। দেশ থেকে গত ১০ বছরে ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার করে অর্থ পাচার হয়েছে। অভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিকভাবে পণ্যের দাম বাড়ার কারণে আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। তাই এসব দিক দেখা দরকার।
আগামী বাজেটে নতুনত্ব আনার কথা বলা হয়েছে উল্লেখ বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'বর্তমানে বাংলাদেশে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে বলা যায়। রাজস্ব বাড়াতে কর্পোরেট ট্যাক্স বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সিগারেট ও কোমল পানীয়তে ট্যাক্স বাড়াতে হবে। দূষণ রোধে নতুন জ্বালানী, ঋণ ভর্তূকি, স্বাস্থ্য বীমা, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ বর্তমানে রাজস্ব কাঠামো ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অনেক দুর্বলতা রয়েছে। করখেলাপী ও ঋণ খেলাপীদের সরকার যেন উৎসাহিত না করে। বাজেটে অর্থমন্ত্রীর কাছে তা সিপিডি তা শুনতে চাই।'
সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তোফিকুল ইসলাম খান বলেন, দেশে অনেকে দিনের পর দিন ট্যাক্স দেয় না। সেই রেওয়াজ পাল্টাতে হবে। উন্নয়ন কাজে মরা প্রকল্প বাচিয়ে রেখে লাভ নেই। সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সতর্কভাবে নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করতে হবে।’
জেডএ/কেএফ/