আসছে বৈশাখের উৎসব
ক্রেতার অপেক্ষায় বিক্রেতা
আর কয়দিন পরই আসছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বছরের প্রথম দিনকে বরণ করার এই উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ফুটপথ থেকে শুরু করে বিভিন্ন নামীদামি ব্রান্ড ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাজিয়েছে তাদের পণ্যের পসরা দিয়ে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে তারা শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রিপিস, কসমেটিক্সসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে অপেক্ষা করছেন।
রমজান মাস শুরু হওয়ায় এখনো জমেনি বৈশাখ উপলক্ষে ব্যবসা। তবে করোনায় দুই বছর সব কিছু বন্ধ থাকায় এবার বৈশাখের বেচাবিক্রি ভালো হবে বলে বিক্রেতারা জানান।
গত দুই দিন রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট, শাহবাগসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
রাজধানীর নিউমার্কেটের ফ্যাশন টার্গেটের জসিম বলেন, 'গত দুই বছর সব কিছু বন্ধ ছিলো। দেশে কোনো ঠিক মতো উৎসব উদডাপন করা হয়নি। তাই আমরাও মহিলা, পুরুষ ও বাচ্চাদের ড্রেস সেভাবে আনিনি। কিন্তু এবার সব কিছু খুলে দিয়েছে সরকার। সবাই স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছেন। তাই আমরাও বিভিন্ন ড্রেস নিয়ে এসেছি। আশা করি ভালোই সাড়া পাব।'
বৈশাখের প্রস্তুতির ব্যাপারে জানতে চাইলে গাউছিয়া মার্কেটের কসমেটিক্স মিউজিয়ামের হায়দার আলী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, 'বৈশাখের উৎসবের জন্য নারীদের গহনা, কসমেটিকস পণ্যসহ অনেক কিছু এবার আনা হয়েছে। এখনও সেভাবে ক্রেতা আসছে না। শেষ মুহুর্তে আশা করি ভালোই জমবে বেচাবিক্রি। আর গত দুই বছর করোনার কারণে সব কিছু একেবারে বন্ধ ছিল। উৎসব পালন করার সুযোগ হয়নি। এবার সব কিছু খুলে দিয়েছে সরকার। তাই অন্যান্য উৎসবের মতো বৈশাখের উৎসবও পালন করবে জনগণ। সেই অপেক্ষায় আছি।'
বাংলা বছরের শুরুর এই দিনটিতে বাঙালি মেতে ওঠে নিজস্ব উৎসবে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এই উৎসবকে ঘিরে প্রস্তুতিটাও তাই চলে ব্যাপক আকারে। নতুন বছরকে বরণে বর্ণিল শোভাযাত্রা, ফেস্টুন, রং-তুলির আঁচড়ে নকশাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সমাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। বাংলার চিরন্তন লোকসংস্কৃতির বৈচিত্রময় এই আয়োজনে ঐতিহ্যের ধারা ধরে রাখতে দেশজুড়ে চলছে প্রস্তুতি। ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্প, কারুশিল্প ও রং-তুলির কারিগররা।
রাজধানীর শাহবাগের আজিজ সুপারমার্কেটের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বৈশাখের উৎসব উদযাপনের অপেক্ষায় রয়েছে।
কে ক্র্যাফটের সেলস ম্যানেজার শেখ লুৎফর রহমান জানান, ২০২০ ও ২০২১ সাল কোভিডে সব কিছু বন্ধ থাকায় আমরাও তেমন কিছু প্রস্তুতি নেয়নি। তবে এবার সব কিছু খুলে দেওয়ায় শো-রুম সাজানো হয়েছে বৈশাখ উপলক্ষে। তবে এখনো বেচাকেনা শুরু হয়নি। শুধু এটি নয়, রাজধানীতে ১৮টি শোরুম রয়েছে কে ক্রাফটের। এ ছাড়া সিলেটেও একটি শোরুম রয়েছে। সব মিলে আশা করা যায় এবার বৈশাখে ভালো বেচাবিক্রি হবে।
একই কথা বলেন, আজিজ সুপারমার্কেটের ইজি ফ্যাশনের তারেকুজ্জামান। তিনি বলেন, 'রমজান মাস শুরু হওয়ায় এখনো বৈশাখের বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। সামনে আরও কয়েকদিন রয়েছে। শেষ মুহুর্তে জমবে বলে আশা করি।
এদিকে মোহাম্দপুরের টোকিও স্কয়ার, মিরপুর শপিং কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য মার্কেটেও বৈশাখ উদযাপনের জন্য বিভিন্ন পণ্য সাজিয়েছেন বিক্রেরা। তারা বলছেন, এবার একই সঙ্গে বৈশাখ ও রমজানের ঈদ পড়ে গেছে। তাই ক্রেতারা মার্কেটে আসছে একটু দেরি করছেন। তবে শেষ মুহুর্তে ভালোই জমবে।
জেডএ/কেএফ/