এবার দাম বাড়ল আদা ও সরিষার তেলের
সিয়াম সাধনার মাস রমজানের প্রথম দিনেই বেগুন, লেবু, মরিচ ও শসার দাম দ্বিগুণ হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কড়া হুঁশিয়ারির পরও দ্বিতীয় দিনে কমেনি ওই সব পণ্যের দাম। এর মধ্যেই এবার দাম বাড়ল আদা ও সরিষার তেলের।
সোমবার ( ৪ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা যায়।
বাজারে দেখা যায়, সোমবার বেগুন ও মরিচের কেজি সেঞ্চুরির নিচে নামেনি। শসাও বাড়তি দামে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, আদার দামও ২০ টাকা বেড়ে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কয়েক দিনের ব্যবধানে মুরগির মাংসের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা, সরিষার তেলে লিটারে বেড়েছে ৪০ টাকা। তবে গরু, খাসি মাংস ও ডিম, মাছ, তেল, ছোলা আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রথম রমজানে (৩ এপ্রিল) কাওরান বাজারের কিচেন মার্কেট আকস্মিভাবে পরিদর্শন করে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বাজারে প্রতিটি পণ্যের মজুদ চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। ভোজ্য তেল, ডাল, চিনি, সোলা, মসলাসহ সব পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। ঘাটতির কোনো সম্ভাবনা নেই। বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বাজারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
তারপরও আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি রমজান মাসের কিছু উপকরণের দাম। আগে বেগুনের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। প্রথম রমজানে সেই বেগুনের কেজি হয়েছে ১০০ টাকা। দ্বিতীয় রমজানেও ৬০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। আগের ৬০ টাকা ডজনের লেবু হয়েছে ১০০ টাকা। ৫০ থেকে ৬০ টাকা ডজনের লেবু হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
দ্বিতীয় দিনেও একই দামে অর্থাৎ ১০০ টাকায় বেগুন ও মরিচ কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কয়েক দিন আগের ৪০ থেকে ৫০ টাকার শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাসে আদার দামও বেড়ে গেছে। যে দেশি আদা আগে ৭০ টাকা প্রথম রমজানে তা ৯০ টাকা, চায়না আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি করেন বিক্রেতার। কিন্তু দ্বিতীয় রমজানে কেজিতে আরও ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে দেশি আদা ১২০ ও চায়না আদার কেজি ১৪০ টাকা বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
বাণিজ্যমন্ত্রীর বলার পরও কেন কমছে এসব পণ্যের দাম? এমন প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন নামে এক সবজি বিক্রেতা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বেশি দামে কেনা, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। আড়তে দাম কমলেও আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারব।’
তবে টমেটোর দাম আগের মতই ২০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, গরুর মাংশ ৬৫০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ৯৫০ টাকা, পোল্ট্রি মুরগি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, ডিমের ডজন ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানে পাকিস্তানি কর্কের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকা, আর দেশি মুরগির কেজি ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ঢাকাপ্রকাশকে জানান ভাই ভাই মুরগির আড়তের আমান উল্লাহ।
তবে ছোলা আগের দামেই ৭০ টাকা কেজি, খোলা চিনি ৭৬ টাকা, প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা কেজি, ৫ লিটার সয়াবিন তেল ৭৪০ থেকে ৭৫০ টাকা, ২ লিটার ৩১৮ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে ইউসুফ জেনারেল স্টোরের মালিক ইউসুফ জানান। তবে রাঁধুনি সরিষার তেলের দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ৩৬০ টাকা লিটার বিক্রি করা হচ্ছে বলে মায়ের দোয়া স্টোরের সাইদুর রহমান জানান।
উল্লেখ্য, দেশে পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে না বলে সম্প্রতি আশ্বস্ত করেছেন ব্যবসায়ীরা। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে সুযোগ না নিতে পারেন, সে জন্য বাজার তদারকি কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। তারপরও কমছে না কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম। অন্যান্য বছরের মতো এবারও রমজান মাস আসার আগেই ভোজ্যতেলসহ অনেক পণ্যের দাম বাড়িয়েছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।
জেডএ/আরএ/