রোজায় বাজার তদারকি করতে কমিটি গঠন
দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। সরবরাহও স্বাভাবিক পর্যায়ে। তাই রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে না বলে আশ্বস্ত করেছেন এসব পণ্যের উৎপাদক ও সরবরাহাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
শনিবার (২ মার্চ) এফবিসিসিআইর উদ্যোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুত, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ আশ্বাস দেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই’র সভাপতি জানান, ‘রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৪৬টি পণ্য সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কীনা তা তদারকি করবে কমিটির সদস্যরা। এ ছাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর, সরবরাহ পরিস্থিতি, উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক বাজারদর সংগ্রহ ও পর্যালোচনা ও সরেজমিনে বাজার পরিদর্শন করবেন এই কমিটির সদস্যরা।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব আছে উল্লেখ করে সভাপতি বলেন, ‘সারাবিশ্বে উৎসবকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমান। তাই বাংলাদেশেও এমন সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। যেহেতু বিশ্ববাজারে বিভিন্ন কাঁচামাল ও পণ্যের দাম বেড়েছছে। শিপিং খরচ বেড়েছে। তাই সরকারকে কর ও শুল্কহার সমন্বয় করতে হবে। শুল্ক ও করহার কমালেও সরকারের রাজস্বের ঘাটতি কমবে না। বরং সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়া যাবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, কোভিড ও রাশিয়া ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম ও জাহাজ ভাড়া প্রতিনিয়ত বাড়ছে। দেশের উৎপাদন ও ব্যবসা বাণিজ্যের ওপর এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে।
আমদানিকৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের প্রাপ্ত ঋণসীমা ছাড়িয়ে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যমান চলতি মূলধন ঋণ সীমা অন্তত ৪০ শতাংশ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে এফবিসিসিআই চিঠি দিয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি একই সঙ্গে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণখেলাপী না করার আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বশির উদ্দিন জানান, সরবরাহ ঠিক থাকলে বাজারে পণ্যমুল্য স্থিতিশীল থাকবে। একই আশ্বাস দেন বাংলাদেশ পাইকারি ভৌজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।
বাংলাদেশ অয়েল মিল এসোসিয়েশন এর সভাপতি সিটিগ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা জানান, সেলস অর্ডারের ১৫ দিনের মধ্যে তেল সরবরাহ করতে হয়। তাই মিল মালিকদের তেল মজুদ করে রাখার কোন সুযোগ নেই।
টিকে গ্রুপের পরিচালক সফিউল আতহার তাসলিম বলেন, গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর বাজার কারসাজির কারণে গোটা ব্যবসায়ী সমাজকে দায় নিতে হচ্ছে। তবে রমজানে বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোন শঙ্কা নেই। মিলমালিকদের কাছে পর্যাপ্ত তেল রয়েছে। বাজারেও কোন সরবরাহ ঘাটতি হবে না।
ভোক্তাকন্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান অভিযোগ করে বলেন, ‘উৎপাদক পর্যায়ে কোনো সরবরাহ ঘাটতি না থাকলেও খুচরা পর্যায়ে দামবৃদ্ধির অন্যতম কারণ চাঁদাবাজি। সভায় রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান করেন।
জেডএ/এমএমএ/