বৃহস্পতিবারের বাজারদর
খাদ্যমন্ত্রীর হুঙ্কারেও কমেনি চালের দাম
ভরা মৌসুমে চালের দাম কমেনি। বাধ্য হয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গত রবিবার কুষ্টিয়াতে রশিদ মিল মালিকের উদ্দেশে বলেন, ‘চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও কমছে না দাম। যেভাবে পারবেন চালের দাম কমান।’ কিন্তু এরপরও এক টাকা কমেনি। আগের মতোই মিনিকেট ৬৫ টাকা কেজি, নাজিরশাইল ৭২ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, পারিজা ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে কমেছে সয়াবিন তেল, পেঁয়াজের ঝাঁজ। ডিম, মাছ, আদা, রসুনের দামও কমতির দিকে। অন্যদিকে মাংস, ডাল, চিনি, আলু, সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
কমেনি চালের দাম
বাজারে চালের অভাব নেই, কিন্তু দাম কেন বাড়ছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দিয়ে রবিবার খাদ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘মিলের স্টক ভেরিফিকেশন করতে হবে।’ মন্ত্রীর এমন হুঙ্কারেও কমেনি চালের দাম। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের মেসার্স কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাসেম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘আগের সপ্তাহের মতো মিনিকেট ৬৫ টাকা কেজি, বিআর-২৮ চাল ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, পারিজা ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’
তবে একই চাল বিভিন্ন খুচরা বাজারে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা কম-বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
পেঁয়াজের কেজি কমে ৪০ টাকা
সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে সর্বোচ্চ ১০ টাকা। ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ ৩৫ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। মেসার্স মাতৃ ভান্ডারের কালাম শেখ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আগের সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। দেশি রসুন সর্বোচ্চ ৯০ টাকা ও চায়না রসুনের কেজি ১০ টাকা কমে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, দেশি আদার কেজিও ১০ টাকা কমে ৮০ টাকা ও চায়না আদা ১৩০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
এ ছাড়া আলু পাইকারি বাজারে ৮০ থেকে ৯০ টাকা পাল্লা, আর খুচরা বাজারে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। টমেটো খুচরা পর্যায়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম বেড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া কেজি প্রতি শসা ৩০ টাকা, গাঁজর ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা কেজি, শাকের আঁটি ৮ থেকে ১০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস, মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। করলার দাম কমে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে পুষ্ট না হলেও সজনে ডাঁটা ১৫০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
কমেছে ভোজ্যতেলের দাম
সরকার ভ্যাট কমায় মিলমালিকরা কমিয়েছে তেলের দাম। তবে নতুন গায়ে লেখা কম দামের তেল এখনো বাজারে আসেনি। আগের প্যাকেটজাত এক লিটার তেল ১৫৮ টাকা, ৫ লিটার ৭৫০ থেকে ৭৬৫ টাকা বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
মাছের দাম কমেছে
আগের সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মাছের দাম বলে বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী এনামুল বলেন, ‘আকারভেদে রুই ও কাতলা ২০০ থেকে ৪৩০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকারভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের শিং মাছ কেজি ৩০০ টাকা, দেশি শিং ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা ও দেশি ৫০০ টাকা, দেশি শোল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় আকারভেদে ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে ইলিশ মাছও আকার ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
কমেছে ডিমের দাম, স্থিতিশীল গরু-খাসির মাংস ও মুরগির দাম
আগের সপ্তাহের মতোই গরুর মাংস ৬৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। বয়লার ১৬৫ টাকা কেজি, পাকিস্তানি কর্ক ২৭০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি করা করছেন ব্যবসায়ীরা। জননী মুরগীর আড়তের আব্দুল ওহাব ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আগের মতো দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি, ব্রয়লার ১৬৫ থেকে ১৭০ কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা কমে ডিমের ডজন সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
জেডএ/আরএ/