শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

৩ বছরে ২৪ হত্যার রহস্যভেদ

ময়নাতদন্তে আত্মহত্যা, পিবিআই তদন্তে হত্যা!

২০১৮ সালের ২৮ জুন। হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা নূর ইসলামের। ময়নাতদন্ত শেষে দেয়া প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তের এক পর্যায়ে তারা জানতে পারে এটি আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ড। সম্প্রতি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি ফারুককে গ্রেপ্তার করে রিমাণ্ডে নেয়া হলে হত্যার দ্বায় স্বীকার করে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেমিকাকে দিয়ে ডেকে এনে হত্যা করা হয় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার রামপুরা ইউনিয়নের সদস্য মোনায়েমকে। খুনের পর তার মরাদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া একটি গাছে। এ ঘটনায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও বলা হয় আত্মহত্যা। পুলিশ সেটি আমলে নিয়ে আত্মহত্যা উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনও দাখিল করে। পরে বাদির নারাজীতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তের এক পর্যায়ে দেখা যায় তাকে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায়ও সম্প্রতি ৫ জনকে গ্রেপ্তার করলে ৩ জন হত্যার দ্বায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

শুধু এ দুটি ঘটনাই নয়। গত ৩ বছরে এ ধরনের ২৪টি হত্যা মামলার তদন্ত উদঘাটন করেছে পিবিআই। সেখানে দেখা গেছে সব ঘটনাতেই আত্মহত্যা বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে একটি ঘটনা ঢাকাতে। বাকিগুলো বগুড়া জেলার শেরপুর, ময়মনসিংহের নান্দাইলে দুটি, ডিএমপির চকবাজার, গাজীপুরের কালিয়াকৈর, শ্রীপুর মডেল, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর, রংপুর ও গোপালগঞ্জ সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলা বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থের লেনদেন, তদন্ত কর্মকর্তার গাফলতি ও পক্ষপাতের অভিযোগ রয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই।

ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা বলছেন, জেলাশহরগুলোতে এ ধরনের সমস্যা বেশি হচ্ছে। কারণ জেলায় ময়নাতদন্তের পর ভিষেরা সংরক্ষন করে তা দীর্ঘদিন রেখে দেওয়া হয়। এরাপর আরো কয়েকটি জমা হলে তা ফরেনসিকে পাঠানো হয়। এতে অনেক সময় নিভূল প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হয় না। পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতিরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে।

২০১৮ সালের ২৮ জুন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ধুকুরিয়া বেড়া পশ্চিপাড়ার একটি পতিত জমি থেকে একই জেলার এনায়েতপুর থানার জালালপুর গ্রামের নূর ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত নূর জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা হলেও তিনি বেলকুচি থানার মধুপুরে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন। তাঁতের কাজ করতেন টাঙ্গাইলের কালিহাতি এলাকায়। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক এটি আত্মহত্যা বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আলীম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে ওমর ফারুক, তার বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমা বেগমকে আসামী করে অভিযোগপত্র দেন।

পরবর্তীতে মামলার বাদি আদালতে নারাজি দিলে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার দায়িত্ব নেওয়া পর পুলিশ ১৭ জন স্বাক্ষির সঙ্গে কথা বলেন এবং হত্যা করা হতে পারে বলে ধারনা পান। এরপর পুলিশ ফারুকের সন্ধানে নামে। এক পর্যায়ে ফারুক গত বছরের পহেলা এপ্রিল আদালতে আত্নসমার্পন করলে তাদের দুইদিনের রিমান্ডে আনে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ফারুক খুনের পর নূর মোহাম্মদকে একটি বরুইগাছে ঝুলিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে।

ফারুক পুলিশকে জানায়, সংসারে অশান্তি থাকার কারনে একদিন মন খারাপ করে একটি ফাঁকা মাঠে বসে ছিলেন তিনি। এসময় সেখানে নূর ইসলামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর ঘটনা জানার পর ফারুককে তাঁতকলে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাঙ্গাইলে নিয়ে আসে। সেখানে কাজ করার এক পর্যায়ে ফারুকের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে নূর ইসলাম। এক পর্যায়ে অতিষ্ট হয়ে ফারুক বাড়ি চলে আসতে চাইলে আত্মহত্যার হুমকি দেয় নূর ইসলাম। এরপর তারা একসঙ্গে গত বছরের ২৭ জুন ফারুকের বাড়িতে যায়। সেখানেও গভীর রাতে ফরুকের উপর যৌন নির্যাতন চালানোর চেষ্টা করলে নূর ইসলামের গলা চেপে ধরে ফারুক। একপর্যায়ে তার শ্বাসবন্ধ হয়ে গেছে বুঝতে পেরে বাড়ির উঠানে বরই গাছের সাথে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর বিষয়টি রাতেই ফারুকের বাবা-মা টের পেয়ে ফারুককে মারধর করে। এক পর্যায়ে ফারুক সব খুলে বললে তারা লাশ নামিয়ে মাঠের একটি পরিত্যাক্ত জায়গায় ফেলে দেয়। এ ঘটনায় লাশ ঘুমে সহায়তার অভিযোগে ফারুকের বাবা-মাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরআগে, ২০১৬ সালে রাজশাহীর বোয়ালমারিতে হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল থেকে সুমাইয়া নাসরিন ও তার বন্ধু মিজানুর রহমানের মৃতদেহ পাওয়া যায়। মিজানুরের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল। আর সুমাইয়ার লাশ বিছানায় বালিশ চাপা দেয়া অবস্থায় পড়ে ছিল। এ ঘটনায়ও ময়না তদন্তে আত্মহত্যা বলা হয়। তারপর থানা পুলিশ-‘কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায়’ ময়না তদন্তের ওপর ‘ভিত্তি করেই’ আত্মহত্যার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। কিন্তু থানা পুলিশের প্রতিবেদনে আদালত সন্তুষ্ট না হওয়ায় মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দেয়।

পিবিআইয়ের তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন, বেশ কিছুদিন পর রাজশাহী জেলার পিবিআই তদন্ত করে দেখল ওটা ছিল হত্যাকাণ্ড। ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ওই দুই খুন। সাবেক প্রেমিক ও তার সহযোগী/বন্ধুরা মিলে পরিকল্পিত ভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তাদের হোটেলে থাকার খবর পেয়ে সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিক ও তার বন্ধুসহ কয়েকজন ওই হোটেলে যান। তারা গোপনে হোটেল নাইসের পাশের একটি ভবনের ছাদ দিয়ে একটু নিচে নেমে হোটেলের জানালা খুলে তাদের কক্ষে ঢুকে। ওই সময় মিজান হোটেলের বাইরে ছিল। আর সুমাইয়া হোটেল রুমে অবস্থান করছিল। তখন অভিযুক্তরা সুমাইয়াকে দিয়ে মিজানকে ফোন করে। মিজান সুমাইয়ার ফোন পেয়ে তাড়াতাড়ি হোটেলে গিয়ে রুমে ঢুকলে অভিযুক্তরা সুমাইয়ার বন্ধু মিজানকে জাপটে ধরে। এরপর হোটেল রুমে সুমাইয়ার সামনে মিজানকে প্রচণ্ড মারপিট করে। একপর্যায়ে রুমের ভিতরে সুমাইয়ার ওড়না নিয়ে মিজানের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে।

মিজানের লাশ ফেলে রেখে হোটেল কক্ষে অভিযুক্ত রাহাত ও আল-আমিন সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। দুজনকে হত্যার পর মিজানের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। আর সুমাইয়ার লাশ হোটেলে বিছানায় বালিশ চাপা দেয়া অবস্থায় পড়ে ছিল। এ সবই বেরিয়ে এসেছে পিবিআইয়ের তদন্তে। পিবিআই আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, সুমাইয়ার বন্ধু আল-আমিন, বোরহানুল কবির, আহসান হাবিব ও রাহাত মাহমুদ। তারা সবাই ওই সময় ছাত্র ছিল।

ময়নাতদন্তের ভুল এড়াতে চিকিৎসকদের আরো সতর্ক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন পিবিআইয়ের প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, সাধারণত ময়নাতদন্ত হত্যা বা খুনের মামলার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার উপর নির্ভর করে অনেক ক্ষেত্রে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হয়। এ কারনে একাজে যুক্ত চিকিৎসকদের আরো সতর্ক হওয়া জরুরি। একই সাঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তারও গাফলতি রয়েছে। 

এনএইচ/

Header Ad
Header Ad

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো কোনো আরব নেতা সিরিয়া সফরে গেলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় তিনি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছান। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর এই প্রথমবার কোনো সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান দেশটি সফর করলেন। বর্তমানে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহমেদ আল-শারা। সফরের সময় দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে কাতারের আমিরকে স্বাগত জানান তিনি।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, নতুন সিরীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাতার মাঠপর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী। বিশেষ করে সিরিয়ার জনগণের জন্য চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করা, ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রতিহত করা এবং সিরিয়ার ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সহায়তা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

বিশ্লেষকদের মতে, কাতারের আমিরের এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে এই প্রতিবেদন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত কর্মকর্তারা পুলিশের দায় এড়াতে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং ইয়ামিনকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

সমালোচকরা বলছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে পুলিশের নৈতিক অবক্ষয় এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে গণঅভ্যুত্থানের পরও তারা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারেনি। বরং, কঠিন চাপে থেকেও পুলিশের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড মাঝে মাঝেই প্রকাশ পাচ্ছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের দাবি, ইয়ামিন এপিসি (সাঁজোয়া যান) কারে উঠলে বাইরে থেকে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোঁড়ে, যা তাকে আহত করে। এরপর এএসআই মোহাম্মদ আলী তাকে নামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তার হাতে ব্যথা থাকায় ফসকে পড়ে যান ইয়ামিন। পুলিশ আরও জানায়, জনগণের কাছে হস্তান্তরের জন্য তাকে রোড ডিভাইডারে রাখা হয়, যাতে কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারে।

তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুলিশের সদস্যরা নীল রঙের এপিসি কারের ওপর ইয়ামিনকে ফেলে রেখে টহল চালায় এবং ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর এপিসি কারটি সাভারের রানা প্লাজা ও ভ্যাট অফিসের মাঝামাঝি এলাকায় আসে। এরপর এপিসির ভেতর থেকে এক পুলিশ সদস্য দরজা খুলে দেয় এবং আরেকজন ইয়ামিনকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ইয়ামিন তখনও জীবিত ছিলেন। প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে দেখা যায় তাকে। তার পরনে ছিল নেভি ব্লু ট্রাউজার ও খয়েরি রঙের জামা। এপিসি থেকে ফেলে দেওয়ার পর তার দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে যায় এবং একটি পা এপিসির বাঁ দিকের চাকার সঙ্গে আটকে থাকে। মৃত ভেবে পুলিশের সদস্যরা তার পায়ে আর গুলি না করে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। এরপর আরও দুই পুলিশ সদস্য নেমে এসে তাকে সার্ভিস লেনে ফেলে রেখে চলে যায়।

পুলিশের এই প্রতিবেদনকে ‘চরম পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, তদন্ত কর্মকর্তারা শুধু পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য নিয়েছেন, অথচ কোনো প্রত্যক্ষদর্শী, সংবাদকর্মী বা সাধারণ মানুষের সাক্ষ্য নেননি। এ কারণে তদন্ত প্রক্রিয়াকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অবিশ্বাস্য বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এক প্রতিবেদনে পুলিশের আচরণকে ‘ভয়ংকর বর্বরতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির তিন পুলিশ সদস্য দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন এবং অপেশাদারসুলভ আচরণ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখাকে সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ নীল এপিসি কার থেকে ইয়ামিনের গুলিবিদ্ধ দেহ রাস্তায় ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ঘটনাটি ঘটে সাভারের আশুলিয়া এলাকায়। কোনো ময়নাতদন্ত বা আনুষ্ঠানিক মৃত্যুসনদ না দিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের লাশ হস্তান্তর করে।

ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ইয়ামিনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা না করার জন্য পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। পরে, পরিবার তাকে সাভারের তালবাগে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাংক টাউন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ দায় মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ভিডিও ফুটেজের ভয়ংকর দৃশ্যগুলো ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার সঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের কোনো মিল নেই। তাহলে, শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে যদি সত্য প্রকাশ না পায়, তবে স্বাধীন তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পুনরায় এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি উঠেছে। নিহত ইয়ামিনের পরিবার এবং আন্দোলনকারীরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও একাধিক হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টায় রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিসের গলির এক বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর থেকে মোহাম্মদ নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘদিনের নজরদারির পর অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা হলো।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
সাত কলেজের জন্য হচ্ছে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’
ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নিতে বলেছে ইইউ: ইসি সচিব
রংপুরের টানা চতুর্থ হার, প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইলো খুলনা
চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকার মধুমিতা সিনেমা হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'জয় বাংলা' স্লোগান, আটক ৫
প্রধান উপদেষ্টার উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা
সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো সেই যুবককে গুলি করে হত্যা
বাংলাদেশ পুলিশে ১৬টি শূন্য পদে নিয়োগ, আবেদন শুরু ২ ফেব্রুয়ারি