শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

৩ বছরে ২৪ হত্যার রহস্যভেদ

ময়নাতদন্তে আত্মহত্যা, পিবিআই তদন্তে হত্যা!

২০১৮ সালের ২৮ জুন। হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা নূর ইসলামের। ময়নাতদন্ত শেষে দেয়া প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তের এক পর্যায়ে তারা জানতে পারে এটি আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ড। সম্প্রতি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি ফারুককে গ্রেপ্তার করে রিমাণ্ডে নেয়া হলে হত্যার দ্বায় স্বীকার করে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেমিকাকে দিয়ে ডেকে এনে হত্যা করা হয় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার রামপুরা ইউনিয়নের সদস্য মোনায়েমকে। খুনের পর তার মরাদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া একটি গাছে। এ ঘটনায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও বলা হয় আত্মহত্যা। পুলিশ সেটি আমলে নিয়ে আত্মহত্যা উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনও দাখিল করে। পরে বাদির নারাজীতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তের এক পর্যায়ে দেখা যায় তাকে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায়ও সম্প্রতি ৫ জনকে গ্রেপ্তার করলে ৩ জন হত্যার দ্বায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

শুধু এ দুটি ঘটনাই নয়। গত ৩ বছরে এ ধরনের ২৪টি হত্যা মামলার তদন্ত উদঘাটন করেছে পিবিআই। সেখানে দেখা গেছে সব ঘটনাতেই আত্মহত্যা বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে একটি ঘটনা ঢাকাতে। বাকিগুলো বগুড়া জেলার শেরপুর, ময়মনসিংহের নান্দাইলে দুটি, ডিএমপির চকবাজার, গাজীপুরের কালিয়াকৈর, শ্রীপুর মডেল, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর, রংপুর ও গোপালগঞ্জ সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলা বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থের লেনদেন, তদন্ত কর্মকর্তার গাফলতি ও পক্ষপাতের অভিযোগ রয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই।

ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা বলছেন, জেলাশহরগুলোতে এ ধরনের সমস্যা বেশি হচ্ছে। কারণ জেলায় ময়নাতদন্তের পর ভিষেরা সংরক্ষন করে তা দীর্ঘদিন রেখে দেওয়া হয়। এরাপর আরো কয়েকটি জমা হলে তা ফরেনসিকে পাঠানো হয়। এতে অনেক সময় নিভূল প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হয় না। পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতিরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে।

২০১৮ সালের ২৮ জুন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ধুকুরিয়া বেড়া পশ্চিপাড়ার একটি পতিত জমি থেকে একই জেলার এনায়েতপুর থানার জালালপুর গ্রামের নূর ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত নূর জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা হলেও তিনি বেলকুচি থানার মধুপুরে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন। তাঁতের কাজ করতেন টাঙ্গাইলের কালিহাতি এলাকায়। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক এটি আত্মহত্যা বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আলীম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে ওমর ফারুক, তার বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমা বেগমকে আসামী করে অভিযোগপত্র দেন।

পরবর্তীতে মামলার বাদি আদালতে নারাজি দিলে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার দায়িত্ব নেওয়া পর পুলিশ ১৭ জন স্বাক্ষির সঙ্গে কথা বলেন এবং হত্যা করা হতে পারে বলে ধারনা পান। এরপর পুলিশ ফারুকের সন্ধানে নামে। এক পর্যায়ে ফারুক গত বছরের পহেলা এপ্রিল আদালতে আত্নসমার্পন করলে তাদের দুইদিনের রিমান্ডে আনে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ফারুক খুনের পর নূর মোহাম্মদকে একটি বরুইগাছে ঝুলিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে।

ফারুক পুলিশকে জানায়, সংসারে অশান্তি থাকার কারনে একদিন মন খারাপ করে একটি ফাঁকা মাঠে বসে ছিলেন তিনি। এসময় সেখানে নূর ইসলামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর ঘটনা জানার পর ফারুককে তাঁতকলে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাঙ্গাইলে নিয়ে আসে। সেখানে কাজ করার এক পর্যায়ে ফারুকের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে নূর ইসলাম। এক পর্যায়ে অতিষ্ট হয়ে ফারুক বাড়ি চলে আসতে চাইলে আত্মহত্যার হুমকি দেয় নূর ইসলাম। এরপর তারা একসঙ্গে গত বছরের ২৭ জুন ফারুকের বাড়িতে যায়। সেখানেও গভীর রাতে ফরুকের উপর যৌন নির্যাতন চালানোর চেষ্টা করলে নূর ইসলামের গলা চেপে ধরে ফারুক। একপর্যায়ে তার শ্বাসবন্ধ হয়ে গেছে বুঝতে পেরে বাড়ির উঠানে বরই গাছের সাথে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর বিষয়টি রাতেই ফারুকের বাবা-মা টের পেয়ে ফারুককে মারধর করে। এক পর্যায়ে ফারুক সব খুলে বললে তারা লাশ নামিয়ে মাঠের একটি পরিত্যাক্ত জায়গায় ফেলে দেয়। এ ঘটনায় লাশ ঘুমে সহায়তার অভিযোগে ফারুকের বাবা-মাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরআগে, ২০১৬ সালে রাজশাহীর বোয়ালমারিতে হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল থেকে সুমাইয়া নাসরিন ও তার বন্ধু মিজানুর রহমানের মৃতদেহ পাওয়া যায়। মিজানুরের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল। আর সুমাইয়ার লাশ বিছানায় বালিশ চাপা দেয়া অবস্থায় পড়ে ছিল। এ ঘটনায়ও ময়না তদন্তে আত্মহত্যা বলা হয়। তারপর থানা পুলিশ-‘কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায়’ ময়না তদন্তের ওপর ‘ভিত্তি করেই’ আত্মহত্যার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। কিন্তু থানা পুলিশের প্রতিবেদনে আদালত সন্তুষ্ট না হওয়ায় মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দেয়।

পিবিআইয়ের তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন, বেশ কিছুদিন পর রাজশাহী জেলার পিবিআই তদন্ত করে দেখল ওটা ছিল হত্যাকাণ্ড। ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ওই দুই খুন। সাবেক প্রেমিক ও তার সহযোগী/বন্ধুরা মিলে পরিকল্পিত ভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তাদের হোটেলে থাকার খবর পেয়ে সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিক ও তার বন্ধুসহ কয়েকজন ওই হোটেলে যান। তারা গোপনে হোটেল নাইসের পাশের একটি ভবনের ছাদ দিয়ে একটু নিচে নেমে হোটেলের জানালা খুলে তাদের কক্ষে ঢুকে। ওই সময় মিজান হোটেলের বাইরে ছিল। আর সুমাইয়া হোটেল রুমে অবস্থান করছিল। তখন অভিযুক্তরা সুমাইয়াকে দিয়ে মিজানকে ফোন করে। মিজান সুমাইয়ার ফোন পেয়ে তাড়াতাড়ি হোটেলে গিয়ে রুমে ঢুকলে অভিযুক্তরা সুমাইয়ার বন্ধু মিজানকে জাপটে ধরে। এরপর হোটেল রুমে সুমাইয়ার সামনে মিজানকে প্রচণ্ড মারপিট করে। একপর্যায়ে রুমের ভিতরে সুমাইয়ার ওড়না নিয়ে মিজানের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে।

মিজানের লাশ ফেলে রেখে হোটেল কক্ষে অভিযুক্ত রাহাত ও আল-আমিন সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। দুজনকে হত্যার পর মিজানের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। আর সুমাইয়ার লাশ হোটেলে বিছানায় বালিশ চাপা দেয়া অবস্থায় পড়ে ছিল। এ সবই বেরিয়ে এসেছে পিবিআইয়ের তদন্তে। পিবিআই আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, সুমাইয়ার বন্ধু আল-আমিন, বোরহানুল কবির, আহসান হাবিব ও রাহাত মাহমুদ। তারা সবাই ওই সময় ছাত্র ছিল।

ময়নাতদন্তের ভুল এড়াতে চিকিৎসকদের আরো সতর্ক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন পিবিআইয়ের প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, সাধারণত ময়নাতদন্ত হত্যা বা খুনের মামলার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার উপর নির্ভর করে অনেক ক্ষেত্রে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হয়। এ কারনে একাজে যুক্ত চিকিৎসকদের আরো সতর্ক হওয়া জরুরি। একই সাঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তারও গাফলতি রয়েছে। 

এনএইচ/

Header Ad
Header Ad

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পরই সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রহস্যজনক। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ৮৮ এসএসসি ব্যাচ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী অভিযোগ করেন, সচিবালয়ের মতো নিরাপদ সরকারি দপ্তরে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত সাবেক কেবিনেট সচিবের ফাইল, যার ওপর তদন্ত চলছিল। তিনি প্রশ্ন করেন, “শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের ফাইল তলব করার পরপরই কেন এমন ঘটনা ঘটল? এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত।”

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শেখ হাসিনার সহযোগীদের প্রশাসনে বসিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার বিপ্লবকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চলছে। যারা অতীতে গণতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।

রিজভী বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনকে উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলছে। তিনি অভিযোগ করেন, “এটি মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন আমলের ষড়যন্ত্রের মতো। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। আনুপাতিক হারে নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি জটিল এবং সরাসরি ভোটাধিকারের বিরোধী।”

রিজভী আরও বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের অবদানের প্রতি সম্মান জানিয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়কে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং কোনো ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।

Header Ad
Header Ad

শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না

ছবি: সংগৃহীত

সিলেট নগরীর ২৫ এলাকায় শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, জরুরি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এবং কিছু এলাকায় সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে।

এ বিষয়ে সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর প্রকৌশলী শামস-ই-আরেফিন বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১১ কেভি মুক্তিরচক ও ধোপাদিঘীরপাড় ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে মেন্দিবাগ, নোয়াগাঁও সাদিপুর, বোরহানউদ্দীন রোড, কুশিঘাট, মীরেরচক, মুক্তিরচক, মুরাদপুর, পীরেরচক, উপশহর রোড, সোবহানীঘাট বিশ্বরোড, ডুবড়ী হাওর, সবজিবাজার, ফুলতলী মাদরাসা, হাফিজ কম্প্লেক্স, নাইওরপুল পয়েন্ট, ওসমানী শিশু পার্ক, ধোপাদিঘীরপাড় ও আশপাশের এলাকা।

অন্যদিকে, ১১ কেভি সোবহানিঘাট ও কালিঘাট ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলো হলো কাস্টঘর, চালিবন্দর, আমজাদ আলী রোড, মহাজনপট্টি, লালদিঘীরপাড়, হকার্স মার্কেট, বন্দরবাজার রোড, জেল রোড এবং আশপাশের অঞ্চল।

বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজ শেষ হলে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করা হবে। সাময়িক এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিভাগটি এবং গ্রাহকদের সহযোগিতা কামনা করেছে।

Header Ad
Header Ad

গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির

সুখরঞ্জন বালি। ছবি: সংগৃহীত

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে নিখোঁজ হন পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার উমেদপুর গ্রামের বাসিন্দা সুখরঞ্জন বালি।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে তিনি নিজের ওপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তার এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে গুম, নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক মর্মস্পর্শী উদাহরণ।

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে ঢাকার আদালতে যাওয়ার সময় সুখরঞ্জন বালিকে অপহরণ করা হয়। তিনি জানান, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি অচেনা স্থানে নিয়ে যায়। চোখ বেঁধে তাকে অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে মাঝে মাঝে খাবার দেওয়া হলেও কোনো আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারত না।

এরপর তাকে আরেকটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে জোরপূর্বক সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তিনি জানান, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে শারীরিক নির্যাতন, বৈদ্যুতিক শক এবং ভয়াবহ মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া হয়।

অপহরণের কয়েকদিন পর তাকে বিজিবি ও পুলিশের সহায়তায় ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএসএফ তাকে প্রচণ্ড মারধর করে এবং উত্তর চব্বিশ পরগণার স্বরূপনগর থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে বশিরহাট ও পরবর্তীতে দমদম কারাগারে পাঠানো হয়।

দমদম কারাগারে পাঁচ বছর কারাবাসের সময় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তার সাক্ষাৎকার নেয়। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালে তিনি মুক্তি পান এবং দেশে ফিরে আসেন।

সুখরঞ্জন বালির অভিযোগ অনুযায়ী, বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাকে অপহরণ করে এবং বিজিবি’র সহায়তায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের একজন নাগরিককে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিভাবে অন্য একটি দেশের বাহিনীর হাতে তুলে দেয়?"

বিএসএফের হাতে নির্যাতনের দাগ এখনো তার শরীরে দৃশ্যমান। তিনি জানান, দমদম কারাগারে থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

দেশে ফিরে আসার পর তিনি পিরোজপুরে নিজের গ্রামে ফিরে যেতে সাহস পাননি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয়দের আশ্রয়ে দিন কাটিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, গুম এবং পাঁচ বছরের কারাবাসের কারণে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয়েছেন।

২০১৮ সালে মুক্তির পর তিনি রাষ্ট্রের কাছে বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১,৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অভিযোগে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ভাষণে বলেন, "গুম কমিশনের প্রতিবেদন মানুষ মানুষের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংস হতে পারে তার দলিল।" তিনি আরও বলেন, "গুমের শিকার ব্যক্তিদের ভয় আজও কাটেনি।"

 

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী
শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না
গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির
শেখ হাসিনাকে ‘নারী’ বলতে রাজি নন মৎস্য উপদেষ্টা
সূর্যের সবচেয়ে কাছে মানুষের তৈরি যান
বর্তমান সরকার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, ব্যাংক সেক্টর সচল করছে: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জটিল রাজনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে : মির্জা ফখরুল
সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সংকল্প জরুরি: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
চলতি বছরের বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক হচ্ছে না
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে নিহত সবাই একই পরিবারের
ইউসুফ (আঃ)- এর সমাধিতে নিয়ে গেল ইসরায়েলি সেনারা
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে ৬৩ বাংলাদেশি: অপরাধীদের ধরতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ বাতিল
মাহফিলে আজহারী উঠবেন রাতে, দুপুরেই ভরে গেছে ময়দান
ইসরায়েলি হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান
থাইল্যান্ডে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে  
হাসিনার দোসররা সচিবালয়ে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকাণ্ড করেছে: শাকিল উজ্জামান
ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক
ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত: ড. মুহাম্মদ ইউনূস  
নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়ার আইনগত কোনো বাধা নাই