শিশুটিকে সিএনজিতে তুলে মুখ চেপে নিয়ে যায় ধর্ষকরা
রাজধানীর আদাবরের ঢাকা উদ্যান লেগুনা স্ট্যান্ডে শিশু গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতের নাম মো. সেলিম।
গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজধানীর বাড্ডা থানার খালপাড় হাজীপাড়া রোড এলাকার একটি গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় নির্যাতিত শিশুটিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ইকবাল রোড থেকে তুলে ঘটনা স্থলে নিয়ে যেতে ব্যবহৃত সিএনজিটি জব্দ করা হয়।
বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।
ডিসি আজিমুল হক বলেন, গত ১৪ মার্চ মধ্যরাতে আদাবর থানার বেড়িবাঁধের পাশের উড়াল পাখি লেগুনা স্ট্যান্ডের দুই ব্যক্তি এক শিশুকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির পিতা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে থানা পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, শিশুটিকে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড থেকে সিএনজি চালক ও তার এক সহযোগী শিশুটিকে ফুসলিয়ে ঘটনা স্থলে নিয়ে যায়। তাই ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি সন্দেহজনক সিএনজিকে চিহ্নিত করা হয়। এ ছাড়া, ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকা উদ্যান, নবোদয় হাউজিং, শিয়া মসজিদ, তাজমহল রোড, ইকবাল রোড এলাকার ২৩টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সন্দেহজনক সিএনজিটির নম্বর সনাক্ত করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় সিএনজি ড্রাইভারের অবস্থান সনাক্ত করা হয়।
পরবর্তীকালে অভিযান চালিয়ে চালক সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার সহযোগী পলাতক রয়েছেন। তার বিস্তারিত নাম পরিচয় পেয়েছি। তাকে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।
ঘটনার দিন শিশুটি বোনের সঙ্গে ঝগড়া করে একা রাস্তায় হাটছিল উল্লেখ করে তেজগাঁও বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, গত ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় বড় বোনের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়। ঘুরতে ঘুরতে সে রাত নয়টার দিকে টাউনহল এলাকায় আসে। টাউনহল এলাকায় কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর তার বড় বোনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। তার বড় বোন তাকে ফেলে অন্য বান্ধবীদের সঙ্গে চলে যায়। তখন শিশুটি একা হাটতে হাটতে ইকবাল রোডের দিকে যায়। আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিএনজি চালক সেলিম ও তার সহযোগী শিশুটিকে ফুসলিয়ে সিএনজিতে তোলে। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে মুখ চেপে ধরে ঘটনা স্থলে আনা হয়। প্রথমে পলাতক আসামি ধর্ষণ করে, পরে সেলিম ধর্ষণ করে। পলাতক আসামি পুনরায় শিশুটিকে ধর্ষণ করে। উপর্যুপুরি ধর্ষণের ফলে শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয় ও তার ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। শিশুটিকে ছেড়ে দিলে পায়ে হেটে শিয়া মসজিদ এলাকায় গেলে বড়বোনের সঙ্গে দেখা হয়। বোন তাকে দ্রুত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বর্তমানে শিশুটি ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কেএম/এমএমএ/