প্রতারণার হাতিয়ার ফেসবুক, পরিচয় দেন এমপির ছেলে!
গরিব-দুঃখীর জন্য কষ্টের সীমা নেই তার, কথার মধ্যে যেন দাতা হাতেম তাইয়ের ভাব। ফেসবুক প্রোফাইল দেখলে তো ‘স্যার’ ছাড়া তাকে সম্বোধন করতেই ইতস্তত বোধ করবেন বেশির ভাগ মানুষ। শুনতে হাস্যকর লাগলেও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রায় ৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এমডি কিংবা কর্ণধার তিনি। এ পরিচয়ে বহু মেয়েকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছেন, গাজীপুরের প্রয়াত এমপি রহমত আলীর সন্তান বলে পরিচয় দিয়ে মন্ত্রীদেরও ফাঁদে ফেলতেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ সেজেছেন সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশালের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। তবে বিপিএল শেষ না হতেই রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে তাকে আসতে হয়।
ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে গত বুধবার (১১ জানুয়ারি) তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দারা।
গ্রেপ্তারকৃত এই ব্যক্তির নাম রাজু, ফেসবু পরিচয় দেন মাসুম বিল্লাহ হিসেবে। তাকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ফেসবুকে প্রায় চার লাখ ফলোয়ার থাকায় নানান পরিচয়ে মেয়েদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলতেন রাজু ওরফে মাসুম বিল্লাহ। শুধু তাই নয়, দত্তক নেওয়া মায়ের সঙ্গেও করেছেন প্রতারণা।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন আর রশিদ বলেন, প্রতারক মাসুম নীলক্ষেত থেকে গ্রিন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়েছে, এমনকি ভোটার আইডি কার্ডও নীলক্ষেত থেকে বানিয়েছে। সে বলেছে, তারা বাবা সাবেক মন্ত্রী রহমত আলী এমপি, এটিও ভোগাস। এ কথা বলার কারণে এতে মন্ত্রীদের আঙ্কেল ডেকে তাদের বিভ্রান্ত করত সে। তাছাড়া ফেসবুক আইডিতে সে যতগুলো পরিচয় উল্লেখ করেছেন সবগুলো ভুয়া।
হারুন আর রশিদ বলেন, মাসুমের প্রতারণার সবচেয়ে বড় শিকার নারীরা। মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে যে কারও সঙ্গে বন্ধুত্বের পর বিলাসী জীবন প্রদর্শন করতেন তিনি। বিমানে ঘুরতে নিয়ে যেতেন বিভিন্ন জায়গায়। এমনভাবে অর্ধশতাধিক নারীর কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে সে।
হারুন বলেন, আসামির প্রতারণা সম্পর্কে আরও বেশি ভালোভাবে জানা যাবে তাকে কোর্টে চালান করার পর। তাছাড়া বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত থাকার জন্য তার রিমান্ডে চাওয়া হবে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পর হয়তো মাসুমের প্রতারণার আরো তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
কেএম/এএস