৮ বছরে ২ শতাধিক গাড়ি চুরি করেছে চক্রটি
রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ, নরসিংদী ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাইভেট কার চোরচক্রের সক্রিয় ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪টি চোরাই প্রাইভেট কার, চোরাই কাজে ব্যবহৃত ৫টি মোবাইল ফোন ও দুটি মাস্টার চাবি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পারভেজ, কামাল হোসেন গাজী, বাবু মিয়া ওরফে নাজমুল হাসান ও সুমন।
পুলিশ বলছে, লক খুলে একটি প্রাইভেট কার চুরি করতে সময় লাগে মাত্র ১০ সেকেন্ড। তাও আবার দিনদুপুরে। কোনো আধুনিক প্রযুক্তি নয়, একটি মাস্টার চাবিই যথেষ্ট। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পার্কিং করা গাড়ি মুহূর্তেই হাওয়া করে দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র। গাড়ি চুরির কয়েকটি অভিযোগে মামলার পর ৪ জনের একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। আট বছরে দুই শতাধিক গাড়ি চুরি করেছে চক্রটি।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আসামিদের কয়েকদিন গোয়েন্দা হেফাজতে রেখে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ।
পুলিশ বলছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের মতো গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার একটি সড়কে গাড়ি পার্কিং করে অফিসে ঢোকেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাইদুল হাসান। টি-শার্ট পরা এক যুবক গাড়ির কাছে এসে দাঁড়ান। ফোনে কথা বলার ভঙ্গি করে আশপাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। আশপাশে কারোর উপস্থিতি না দেখে টার্গেট প্রাইভেট কারের দরজা খুলে ভেতরে ঢোকেন। সঙ্গে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে গাড়ি চালু করে গাড়ি নিয়ে দেন চম্পট।
গাড়ি চুরির মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, একসময় তারা ছিলেন পরিবহন শ্রমিক। গ্যারেজ মালিকদের প্রলোভনে এই পথে নামেন তারা। কারওয়ান বাজার ও উত্তরা এলাকার নির্দিষ্ট কিছু জায়গা থেকে মাস্টার চাবি সংগ্রহ করেন তারা। মূলত পুরোনো মডেলের প্রাইভেট কারই তাদের টার্গেট।
গোয়েন্দারা বলছেন, চুরির পর গ্যারেজে দালাল বা সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করা হয় গাড়ি। তারা আবার দোকানে দোকানে পার্টস আলাদা করে বিক্রি করেন। শুধু তাই নয়, ইঞ্জিন, রেজিস্ট্রেশন নম্বরের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেও বিক্রি করা হয় চোরাই গাড়ি।
ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, একটা গ্যারেজের মালিকের সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হন। চোরচক্র গ্যারেজের মালিককে বলে, আমরা ব্যাটারি, গাড়ি ও মোটরসাইকেল চুরি করব। আপনারা বিক্রির ব্যবস্থা করবেন।
তিনি আরও বলেন, তেজগাঁওয়ে চুরি হওয়া গাড়ি ছাড়াও ধানমন্ডি ও গাজীপুর এলাকা থেকে এই চক্রের চুরি করা ৪টি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়েছে।
কেএম/এসজি