ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়াই কাল হলো স্কুলছাত্র আরিফের
নীলফামারীর ডোমারে স্কুলছাত্র আরিফ হোসেন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অটোরিকশা ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় খুন হয় স্কুলছাত্র আরিফ। এ ঘটনায় ছয় মামলার আসামিসহ ২ জনকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে সিআইডি।
স্কুলছাত্র আরিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- কহিনুর ইসলাম ওরফে রুবেল (৪০) ও আলমগীর হোসেন ওরফে আলম (৪০)।
জানা যায়, গ্রেপ্তার কহিনুরের বিরুদ্ধে ডোমার থানার একটি চুরির মামলায় আদালত দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। অন্যদিকে আলমগীর হোসেন ওরফে আলমের বিরুদ্ধে নীলফামারী জেলার বিভিন্ন থানায় দস্যুতা ও চুরির ঘটনায় ৬টি মামলা রয়েছে।
সিআইডি জানায়, অটোরিকশায় থাকা আসামি কহিনুর ও তার সহযোগী আরিফকে জোরপূর্বক অটোরিকশা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে অটো নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন বাধা দিলে তারা আরিফকে মারধর করে। একপর্যায়ে আরিফ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর ছুরি-চাকু দিয়ে তার গলা কেটে ও আঘাত করে হত্যা করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত ১৯ আগস্ট বাবার অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হয় আরিফ। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। নিখোঁজের ৭ দিন পর ডোমারের বড় রাউতা মাঝাপাড়া এলাকার একটি অব্যবহৃত গভীর নলকূপের ঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আজাদ রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নিহত আরিফ ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ডোমার কলেজ গেটের পাশে মাদ্রাসা মোড় থেকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে যাওয়ার জন্য ১৫০ টাকা ভাড়ায় যাত্রীবেশে আরিফের অটোরিকশায় উঠে কহিনুর ও তার সহযোগী। বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে দোলাবাড়ী নামে একটি নির্জন স্থানে যাওয়ার পর প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে আরিফকে অটোরিকশাটি থামাতে বলে তারা। তখন আসামিরা আরিফকে জোরপূর্বক অটোরিকশা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে অটোটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আরিফ তাতে বাধা দিলে তাকে মারধর করতে থাকে তারা।
তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে আরিফ অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলে ধারালো ছুরি-চাকু দিয়ে তার গলায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহটি পাশের অব্যবহৃত গভীর নলকূপের ঘরে মরিচের শুকনা গাছ দিয়ে ঢেকে রেখে অটো নিয়ে পালিয়ে যায় আসামিরা। পরে বন্ধু আলমগীরের সহযোগিতায় ৪৫ হাজার টাকায় অটোটি বিক্রি করেন কহিনুর।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
কেএম/এসজি