ঢাবি শিক্ষার্থীকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ
রাজধানীর কল্যাণপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে তার সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেওয়া অভিযো উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির মোটরসাইকেলে পুলিশের স্টিকার লাগানো ছিল। তবে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি আসলেই পুলিশের কোনো সদস্য কি না, তা তদন্তে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী তুরাগ থানায় একটি মামলা করেছে। এরপর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে ও জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে আটক করতে ডিবির বেশ কয়েকটি টিম অভিযান চালাচ্ছে। আশাকরি, দুয়েক দিনের মধ্যে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে।
গত ২৫ আগস্ট কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশাযোগে বাসায় যাওয়ার পথে ওই শিক্ষার্থীকে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ব্যাগে অবৈধ জিনিসপত্র রয়েছে বলে থানায় নিয়ে যেতে তাকে মোটরসাইকেলে ওঠানো হয়।
ওই ছাত্রীর ভাষ্য, সেদিন দুপুর দেড়টায় তিনি কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশাযোগে বাসায় যাচ্ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ মোটরসাইকেলে আসা এক ব্যক্তি তার গতিরোধ করে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দাঁড়াতে বলেন। পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির মোটরসাইকেলের সামনে পুলিশের স্টিকার লাগানো ছিল। গতিরোধ করে পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি ভুক্তভোগীকে বলেন, আপনার সঙ্গে থাকা ব্যাগে অবৈধ জিনিসপত্র রয়েছে, আপনাকে থানায় যেতে হবে।
এ অবস্থায় পুলিশ পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির বক্তব্যে বিব্রত হয়ে তার মোটরসাইকেল ওঠেন ভুক্তভোগী। শিক্ষার্থীকে মোটরসাইকেলে তুলেই দ্রুতগতিতে ছুটতে থাকেন ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে দিয়াবাড়ির নির্জন এলাকায় নিয়ে ছুরিকাঘাতের ভয় দেখিয়ে গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নেন।
ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, স্বর্ণালঙ্কার লুট করার সময় পাশ দিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। ভুক্তভোগীর সঙ্গে পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির আচরণ অস্বাভাবিক মনে হলে এগিয়ে যান তিনি। স্থানীয় ব্যক্তিকে এগিয়ে আসতে দেখে পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি ভিকটিমের স্বর্ণালঙ্কার ও ব্যাগ নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় ওই ব্যক্তি বিষয়টি তুরাগ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশের একটি দল ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। ওই দিনই তুরাগ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ছিনতাইয়ের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী।
পুলিশ বলছে, পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেলে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্বর্ণকার লুটের ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশ-ডিবির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা এ বিষয়ে তদন্ত করছে। যে পথে ভিকটিমকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই পথের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িত ওই ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছে।
কেএম/এসএন